পাইকগাছার কপিলমুনি বাজার ধংসের দ্বার প্রান্তে; গড়ে তোলা হচ্ছে আবাসন!
শেখ খায়রুল ইসলাম পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ
পাইকগাছা উপজেলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী ও সুনামধন্য বানিজ্যিক মোকাম কপিলমুনি। অতীত আমল থেকে সুনাম ধরে রাখলেও বর্তমানে একটি কুচক্রী মহলের হীন মানসিকতায় তছনছ হতে বসেছে রাজস্ব আয় সমৃদ্ধ কপিলমুনি বাজার। বৃহৎ এ বাজারের নেই কোন অভিভাবক। বাজারের সৌন্দর্য বর্ধনে নেই সুষ্ঠু পরিকল্পনা। প্রতিষ্ঠাতা দানবীর রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু মহাশয়ের সুপরিকল্পনা আর সাধনায় এলাকার মানুষের কল্যানে প্রতিষ্ঠা ও প্রসিদ্ধি লাভ করলেও মুলত তার যোগ্য উত্তরসূরীর অভাবে রায় সাহেবের কোমল স্পর্শে প্রতিষ্ঠিত কপিলমুনি বাজারের পরিধি ও সুন্দর গঠনে তেমনটি আগ্রসর হতে পারেনি। রায় সাহেবের পরে যারা ইতোপূর্বে কপিলমুনি বাজারের নের্তৃত্ব দিয়েছেন তারা কিছুটা ধারাবাহিকতা রক্ষা করলেও আজ সুষ্ঠু নের্তৃত্বের বড়ই অভাব দেখা দিয়েছে। চলছে হরিলুটের খেলা। বাজারের সৌন্দর্য বর্ধনে অতি প্রয়োজনীয় মুল্যবান জমিগুলো ভুমি সংশ্লিষ্ট অফিসের এক শ্রেনীর দালাল দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নিমিষেই দখল হয়ে যাচ্ছে মুল্যবান এ সব সম্পত্তি। ৫৮ লক্ষ টাকা বার্ষিক রাজস্ব আয়ের উৎস কপিলমুনি বাজারের শ্রীবৃদ্ধি ও উন্নয়নের দিকে না তাকিয়ে বরং উক্ত বাজারের মুল্যবান সম্পত্তি অব্যাবস্থাপনায় নিমজ্জিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাজারের কেন্দ্রবিন্দুতে মূল্যবান জমি আবাসনের ঘর বানিয়ে দেয়া হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের এমন অদূরদর্শিতা ও খামখেয়ালীপনা ভাল চোখে দেখছে না এলাকাবাসী। তাদের দাবি, বাজার অভ্যান্তরে এসব মুল্যবান জমিতে আবাসনের ঘর দেওয়া কতটা যুক্তিসংগত। এদিকে মুল্যবান এ সব জমি পেতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছুটছে অনেকেই। একদিকে ১ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকার ঘর অন্যদিকে ২০ লক্ষ টাকার জমি পেতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে মরিয়া ইচ্ছুকদের অনেকেই। এদিকে বাজার কেন্দ্রীক আবাসনের ঘর বরাদ্দ দেয়ায় ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী। গত (শুক্রবার ২৪ জুন) এলাকাবাসী বাজার অভ্যান্তরে আবাসনের নির্মানাধীন জায়গায় গিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এ সময় নির্মাণ শ্রমিকদের কাজে বাঁধা প্রদান করেন এবং কাজ বন্ধ করে দেন তারা। এ বিষয়ে কপিলমুনি বিনোদ বিহারী শিশু বিদ্যালয়ের প্রধান, সমাজসেবক মোঃ মুজিবর রহমান জানান, বাজার অভ্যান্তরে আবাসনের ঘর দিয়ে বাজারের সৌন্দর্য নষ্ট করা হচ্ছে। একইভাবে বনায়ন কেটে এ সব ঘর তৈরি পরিবেশের হুমকি স্বরুপ। সৃষ্ট ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রভাষক রেজাউল করিম খোকন বলেন, আবাসনের ঘর দেওয়ার মত অনেক জায়গা রয়েছে। কিন্তু বাজারের প্রাণ কেন্দ্রে মুল্যবান জমিতে আবাসনের ঘর দেওয়া কতটা যুক্তিসংগত হবে সেটা না ভেবে বাজারকে ধংস করার ষড়যন্ত্র চলছে। আর এতে উপজেলা ভুমি প্রশাসনের কতিপয় ব্যাক্তি জড়িত রয়েছে। তিনি আরোও বলেন, কপিলমুনি বাজার কে বিনোদগঞ্জ পৌরসভার দাবিতে আমরা কাজ করছি। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে। অথচ বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি উপজেলা প্রশাসন। তিনি দুঃখের সাথে বলেন, কপিলমুনি বাজার প্রায় ধংস হয়ে গেছে। জায়গার অভাবে মাছকাটা দুরে স্থানান্তর হয়েছে। মাছের চাঁদনীর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সকলে রাস্তার উপর মাছ বিক্রি করছে। ধান্য চত্ত্বরে তরকারি বিক্রি হচ্ছে। অথচ মুল্যবান এ সব জায়গায় এ সব চাঁদনি হলে ব্যাবসায়ীদের সুরক্ষায় কাজে লাগতো। বর্ষায় ভিজতে হতো না। কপিলমুনি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গাজী আব্দুর রাজ্জাক রাজু জানান, উপজেলা প্রশাসনের বারবার আমরা জানিয়েছি। পৌরসভা গঠনের প্রক্রিয়া চলমান। এমতাবস্থায় সেখানে জায়গা না থাকলে সমস্যা দেখাদিবে। এখনও অনেক ব্যাবসায়ী রাস্তায় বসে দোকান দিচ্ছে। তাদের উপযুক্ত জায়গার ব্যাবস্থা এখনও হয়নি।
Leave a Reply