মোঃ পারভেজ হাসান
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের সুবল। কিন্তু হঠ্যাৎ করেই লিঙ্গ পরিবর্তন করে ছেলে থেকে মেয়েতে পরিণত হলেন তিনি। এমনকি নিজের নাম সুবল শীল থেকে পরিবর্তন করে রেখেছেন মেঘা শর্মা। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার থুমনিয়া গ্রামে। তাকে এক নজর দেখতে বাড়িতে ভিড় করেছেন বিভিন্ন এলাকার উৎসুক জনতা।
জানা গেছে, কিশোর বয়স থেকেই সুবল মেয়েদের মতো আচরণ করতো। আলতা, শাড়ি, চুড়ি পড়তে তার ভালো লাগতো। এ জন্য পাড়ার বন্ধুরা তাকে হিজরা বলেও হাসাহাসি করতো। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে চিকিৎসার মাধ্যমে নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন করেন সুবল। সে সময় নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন মেধা শর্মা।
মেঘা শর্মার (সুবল) মা আলো রানী ও বাবা জগেশ শীল জানান, ছোটবেলা থেকেই তাদের ছেলে মেয়েদের মতো আচরণ করতো। মেয়েদের মতো সাজগোজ করতে তার ভালো লাগতো। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেক চিন্তিত ছিলাম। অনেক চেষ্টা করেও আমরা মেয়েদের মত আচরণ করা থেকে তাকে বিরত রাখতে পারিনি। অবশেষে আমার ছেলে নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন করে মেয়েতে পরিণত হয়েছে।
মেঘা শর্মা বলেন, ‘ছেলে থেকে মেয়ে হওয়ার সিদ্ধান্তে প্রথমে রাজি হননি বাবা ও মা। কিন্তু পরে আমার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তারা ওই সিদ্ধান্তের কথা মেনে নিয়েছেন। এখন পরিবারের সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে রয়েছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘লিঙ্গ পরিবর্তনের বিষয়টি পরিবার ছাড়া সবার কাছে গোপন রেখেছিলাম। বাড়িতে আসার পর বিষয়টি জানাজানি হলে সবাই আমাকে দেখতে বাড়িতে ভিড় করছে। অনেকেই খারাপ মন্তব্যবও করছে। আবার অনেকে সমর্থন করে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে।’
মেঘা শর্মা বলেন, ‘সবকিছুর উপরে আমার ইচ্ছাশক্তি আর আমার স্বপ্ন। আমার পরিবার আমাকে মেনে নিয়েছে। আমি আমার পরিবার ও সমাজের জন্য কিছু করতে চাই। সমাজের অধিকাংশ মানুষ মনে করছে আমি এখন সমাজের বোঝা। কিন্তু আমি আমার কাজ দিয়ে এ ধারণা বদলাতে চাই।’
নিজেকে একজন এয়ার হোস্টেজ হিসেবে দেখতে চান মেঘা শর্মা। পাশাপাশি করতে চান মডেলিং। একই সঙ্গে রূপান্তরিত হওয়া নারীদের নিয়ে আগামীর পথে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন তার।
ঠাকুরগাঁও জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক রিজু জানান, মেঘা শর্মার পরিচয় সে একজন মানুষ। তার ইচ্ছা, তার স্বপ্ন পূরণ করতে সমাজের সব মানুষের এগিয়ে আসা উচিৎ। তাকে কটাক্ষ না করে তাকে সহযেগিতা করা উচিৎ। তার অধিকার নিশ্চিত হবে সমাজে এটাই প্রত্যাশা করি।