রতন ইনতিসার ,বকশীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার বগারচর ইউপি’র প্যানেল চেয়ারম্যান (৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য) হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। টাকা নিয়েও অসহায় এক নারীকে ভিজিডি কার্ড দেননি তিনি। তবে তার নিজের স্ত্রী করিফুল বেগমের নামে করেছেন ভিজিডি কার্ড। তার বিরুদ্ধে ইউএনওসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী আলীরপাড়া গ্রামের আমিজল হকের ছেলে আল আমিন।
জানা যায়, বকশীগঞ্জ উপজেলার বগারচর ইউনিয়নের জনসংখ্যা অনুযায়ী মোট ৬৪৬ টি ভিজিটি কার্ড বরাদ্দ পায়। এর মধ্যে প্যানেল চেয়ারম্যান (৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য) হাফিজুর রহমান তার ওয়ার্ডে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ১০ টি কার্ড বরাদ্দ পায়। বরাদ্দ অনুযায়ী তিনি ১০ জনের তালিকা দেন। তালিকায় বগারচর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান (৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য) হাফিজুর রহমান তার স্ত্রী করীফুল বেগমের নাম রয়েছে। করীফুল বেগম চলতি বছরে জানুয়ারি হতে ভিজিডি কার্ডের সুবিধা হিসেবে বিনামূল্যে ৩০ কেজি করে চাল পাচ্ছেন। কার্ড নং ৬২১।
অভিযোগে জানা যায়,দীর্ঘ ৮ মাস আগে একটি ভিজিডি কার্ডের আশায় ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমানের বাড়িতে যান আলীরপাড়া গ্রামের দরিদ্র আল আমিন। কার্ডের জন্য ইউপি মেম্বার হাফিজুর তার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। কার্ডের আশায় ধারদেনা করে হাফিজুর মেম্বারকে ১০ হাজার টাকা দেন আল আমিন। কিন্তু ১০ হাজার টাকা নিয়েও ভিজিডি কার্ড করে দেননি ওই ইউপি সদস্য। টাকা ফেরত চাইতে গেলে উল্টো অসহায় আল আমিনকে হুমকি দিয়েছেন মেম্বার। গত ৩ জুলাই এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ইউপি মেম্বার হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আল আমিন। অভিযোগের অনুলিপি জেলা প্রশাসক,উপজেলা চেয়ারম্যান,এসিল্যান্ড ও প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন দপ্তরেও দিয়েছেন তিনি।
মহিলা বিষয়ক অফিস সূত্রে জানা যায়,ভিজিডি কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে বয়স ২০ থেকে ৫০ বছর থাকতে হবে। জাতীয় পরিচয় থাকা বাধ্যতা মূলক। পরিবারে কর্মক্ষম অস্বচ্ছল,বিধবা, তালাকপ্রাপ্তা নারী এবং ভুমিহীন ও যাদের আয়ের কোন উৎস নেই তারাই ভিজিডি কার্ড পাওয়ার যোগ্য।
অভিযোগকারী আল আমিন বলেন,আমরা গরীব মানুষ। ভিজিডি কার্ড পাওয়ার যোগ্য আমরা। অথচ আমাদেরকে দেয়া হয় না। ধনী মানুষ মেম্বারের বউয়ের কার্ড হয়। টাকা ফেরত চাইতে গেলে ইউপি মেম্বার টাকা ফেরত না দিয়ে তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমান বলেন,টাকা চাওয়া বা নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। কেউ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। নিজের স্ত্রীর নামে ভিজিডি কার্ডের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন,আমার স্ত্রীর নামে কার্ড আছে। তবে সেই কার্ডের চাল আমার বাড়ির পাশে এক গরীব আত্মীয়কে দেই। আমি নিজে নেই না।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেকুর রহমান প্রমানিক মাসুম বলেন,অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। সরকারি পরিপত্র অনুযায়ি অস্বচ্ছল ব্যাক্তিরাই কার্ডটি পাওয়ার যোগ্য। হাফিজুর মেম্বার তার নিজের স্ত্রীর নামেও ভিজিডি কার্ড করেছেন। একজন মেম্বার যদি এমন কাজ করে তাহলে বিষয়টি সত্যিই দু:খজনক। বিষয়টি আমি উধ্বতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছি।
এ ব্যাপারে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার বলেন,অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।