রতন ইনতিসার বকশীগঞ্জ(জামালপুর)প্রতিনিধি
জামালপুরের বকশীগঞ্জে গৃহবধূ গোলাপফুল বেগম (২৩) কে পরিকল্পিত ভাবে শ^াসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি স্বজনদের। তাই হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুরে উপজেলার বগারচর ইউনিয়নের গোপালপুর বাজারে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী ও তার স্বজনরা। বকশীগঞ্জ-সারমারা আঞ্চলিক সড়কে এলাকাবাসীর ব্যানারে আয়োজিত ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান মাষ্টার,নিহত গৃহবধূর মা হাসিনা বেগম, আল আমিন,মিনারা বেগম,নুরেজা বেগম,হেলাল মিয়া,নুর আলম ও বিল্লাল হোসেন প্রমূখ। বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে প্রায় দুই সহস্্রাধিক নারী পুরুষ অংশ নেয়।
গত ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সাধুরপাড়া ইউনিয়নের নীলেরচর গ্রামে শশুর বাড়ির রান্নাঘর থেকে গোলাপ ফুলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকেই স্বামী ও শশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। গোলাপফুল ধারারচর ভাটিপাড়া গ্রামের মোতালেব মিয়ার মেয়ে।
গোলাপফুল বেগমের বাবা মোতালেব মিয়া জানান,গত প্রায় ৫ বছর পূর্বে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের নীলেরচর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে ইয়াছিন মিয়ার(৩০) সাথে বিয়ে হয় গোলাপফুল বেগমের। তাদের সংসারে তিন বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে আসছিল স্বামী ইয়াছিন মিয়া,শাশুড়ী ও শশুরসহ শশুর বাড়ি লোকজন। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন সময়ে প্রায় দুই লাখ টাকা যৌতুক দেন তিনি। এর পরও নির্যাতনের মাত্রা থামেনি,বরং দিনদিন নির্যাতন আরো বেড়ে যায়। গত কিছুদিন আগে একটি হত্যা মামলার আসামী হয়ে কারাগারে যায় ইয়াছিন মিয়ার ছোট ভাই সুজন মিয়া। সেজন্য গোলাপফুলকে আবারো যৌতুকের জন্য চাপ দেয় শশুর বাড়ির লোকজন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে স্বামী ও শশুরবাড়ির লোকজন তাকে শ^াসরোধ করে হত্যা করে। একপর্যায়ে গোলাপফুল বেগম আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রচার চালায় শশুর বাড়ির লোকজন। পরে খবর পেয়ে রান্না ঘর থেকে গোলাপফুল বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ। তার দাবি এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। তাই দ্রুত আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানান তিনি।
মানববন্ধনে বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান মাষ্টার বলেন,এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। হত্যাকান্ডকে আত্মহত্যা বলে চালানো হচ্ছে। নিহতের স্বামী,শশুর ও শাশুড়ীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই আসল রহস্য বের হয়ে আসবে। হত্যাকান্ডের সঠিক বিচার চান তিনি।
গোলাপফুল বেগমের মা হাসিনা বেগম বলেন,যৌতুক দিতে না পারায় তারা আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে তারা। আমি আমার মেয়ে হত্যার ন্যায় বিচার চাই। ফাসিঁ চাই।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোহেল রানা বলেন,লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে তবে মৃত্যুর কারন এখনো জানা যায়নি। গৃহবধুর পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।