স্টাফ রিপোর্টার বগুড়াঃ
বগুড়ায় ভুয়া ইউএনও পরিচয়ের অর্থ আদায়কারী চক্রের মূলহোতাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ(ডিবি)।
সোমবার ভোরে বগুড়া ও গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার গাছাবাড়ী পশ্চিমপাড়া এলাকার আমির উদ্দিনের ছেলে তুহিন মিয়া এবং ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর।
এদের মধ্যে তুহিনের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ০১ টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বগুড়া ডিবির ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ।
ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা গত ৭ জুন সকাল ৯টার দিকে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে বগুড়া সদর থানার ডিউটি অফিসারের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে। পরে তুহিন মিয়া তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে বগুড়া সদর থানার ডিউটি অফিসার এর ব্যবহৃত সরকারী মোবাইল নাম্বারে কল করে নিজেকে বগুড়া সদর উপজেলার ইউএনও পরিচয় দিয়ে জানায় ওই নামাজগড় এলাকায় একটি সমস্যা হয়েছে জরুরী ডিউটি পার্টিকে তার সাথে কথা বলতে বলে। ডিউটি অফিসার সরল বিশ্বাসে নম্বরটি উপশহর পুলিশ ফাড়িঁ এলাকায় ডিউটিরত টহল টিমের অফিসারকে দিয়ে ইউএনও পরিচয় প্রদানকারী ব্যক্তির উল্লেখিত নম্বরে ফোন দিতে বলে। টহল টিমের কর্তব্যরত অফিসার ইউএনও পরিচয় প্রদানকারী ব্যক্তিকে ফোন দিলে তিনি তাকে জানান যে, উপশহরে অবস্থিত খাবারের হোটেলে গিয়ে মালিককে তার সাথে কথা বলিয়ে দিতে। টহল টিমের কর্তব্যরত অফিসার বগুড়া সদর থানাধীন উপশহর বাজারে শাহিন হোটেলে গিয়ে হোটেল মালিককের সহিত কথা বলিয়ে দিলে ভূয়া ইউএনও পরিচয়দানকারী তুহিন মিয়া কৌশলে হোটেল মালিকের মোবাইল নম্বর নিয়ে নেয় এবং টহল টিমের কর্তব্যরত অফিসারকে সেখান থেকে চলে যেতে বলে। তার কিছুক্ষণ পরে ভূয়া ইউএনও পরিচয়দানকারী তুহিন মিয়া উল্লেখিত মোবাইল নম্বর থেকে হোটেল মালিক শাহিনকে ফোন করে জানায়, উপশহর এলাকায় চারটি হোটেলের মধ্যে তিনটি বন্ধ করে দিবে এবং একটি হোটেল খোলা থাকবে। তাই তার হোটেল খোলা রাখতে চাইলে বিশ হাজার) টাকা দিতে হবে।
ওসি সাইহান আরও বলেন, ভূয়া ইউএনও পরিচয়দানকারীর কথায় ভীত হয়ে হোটেল মালিক তুহিন মিয়ার মোবাইল নম্বর এর নগদ একাউন্টে দশ হাজার টাকা পাঠায়। পরবর্তীতে একই উপায়ে উপশহর বাজারে রবিউল ইসলাম এর খাবারের হোটেলের মালিককে ভয় ভীতি দেখিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর এর নগদ একাউন্টে ছয় হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ১১ জুন সদর থানায় মামলা হলে অভিযানে নামে পুলিশ। পরে এই চক্রের মূলহোতাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি সাইহান বলেন, গ্রেপ্তার আসামিরা পেশাদার প্রতারক। তারা পরস্পর দীর্ঘদিন ধরে দেশের ময়মনসিংহ, শরিয়তপুর, জামালপুর, লক্ষীপুর, টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন এলাকা হতে এভাবেই প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসিতেছিল। এছাড়া তারা মোবাইল ফোনে ইউএনও, ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ অফিসার, ইউনিয়ন পরিষদের সচিবসহ বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নাম ও পদবী ব্যবহার করায় তাদের প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কাজটাও সহজ হয়ে যায় বলেও স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।