বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ
বগুড়ায় বাসচাপায় ভ্যানচালক নিহতের ঘটনায় করা মামলা প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবিতে ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে জেলা পরিবহন শ্রমিক যৌথ পরিষদ। মামলার ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাসে বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরে শহরের চারমাথা এলাকায় মালিক-শ্রমিক যৌথ পরিষদের আয়োজিত সমাবেশে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ কবির আহমেদ মিঠু এ ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
সমাবেশে তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটি, থ্রি হুইলার চলাচল নিষিদ্ধ। আমরাও চাই রাস্তা পরিস্কার থাকুক। গত সোমবার দুপচাঁচিয়া বাসের ধাক্কায় এক ভ্যান চালকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি অবশ্যই দুঃখজনক।
জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, কিন্তু ওই ঘটনায় দুপচাঁচিয়ার ওসি আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। তিনি ইনজাস্টিস করেছেন। পুলিশ চালককের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে, ঠিক আছে। কিন্তু বাস মালিক, হেলপারকে কেন আসামি করলো। তারা কি দোষ করেছেন?
এসব কথা উল্লেখ করে সৈয়দ কবির আহমেদ মিঠু বলেন, এ জন্য আমরা বৃহস্পতিবার থেকে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলাম। এ বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের সঙ্গে আজ বৈঠক হয়েছে। তারা দুপচাঁচিয়ার ওসির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। এ ছাড়াও অন্য দাবিগুলো সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। এ জন্য আমরা ধর্মঘটন প্রত্যাহার করে নিলাম।
এ বিষয়ে বগুড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ বলেন, পরিবহন নেতারা বসেছিলেন আমাদের সঙ্গে। মহাসড়ক থ্রি হুইলার, ভটভটিমুক্ত রাখা এটা আমাদের সবার ইচ্ছা। এখানে নতুন করে কিছু বলার নেই। পুলিশ পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে খতিয়ে দেখবে। সেখানে ওসি বা অন্য যে হোক দোষ থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে জেলা পরিবহন মালিক-শ্রমিক যৌথ পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বগুড়া বাস-মিনিবাস পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম পাঁচ দফা দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেন।
সংগঠনটির পাঁচদফা দাবিগুলো হলো, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদের প্রত্যাহার, দুর্ঘটনায় ভ্যান চালক নিহতের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার, বাস ভাংচুরের ক্ষতিপূরণ আদায়, মহাসড়কে অবৈধ তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধ ও মহাসড়কের পাশে গড়ে উঠা অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ।
গত সোমবার বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় মোফাজ্জল হোসেন মোফা নামে এক ভ্যানচালক নিহত হোন। এ ঘটনায় ভ্যানচালকের স্ত্রী মঞ্জিলা হক বাদী হয়ে দুপচাঁচিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে বাস মালিক সারওয়ার হোসেন, চালক সিরাজুল ইসলাম ও তার সহকারী আশিককে আসামি করা হয়৷ এই মামলাকে কেন্দ্র করে পরিবহন নেতারা এবারের আন্দোলনের ডাক দেন।
সমাবেশে মালিক-শ্রমিক যৌথ পরিষদের সভাপতি শাহ্ আকতারুজ্জামান ডিউক, বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হামিদ মিটুল, আব্দুল মান্নান মন্ডল, তৌফিক হাসান ময়না, শফিকুল ইসলাম, খোরশেদ আলম, বাবর আলী মোল্লা, যাদু সরকার, ফিরোজ উদ্দিন লেবু, রাসেল মন্ডল, সাখাওয়াত হোসেন, শেখ জালাল উদ্দিন, মাহবুবুর রহমান মানিক, নুর আমিন মন্ডল, লুৎফর রহমান পঁচা, জহুরুল ইসলামসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।