বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ
কখনও দুই সাপ গলায় পেচিয়ে আবার কখনও সাপের মুখ নিজের মুখের ভিতর ঢুকিয়ে খেলা দেখাচ্ছিল ৫ বছর বয়সী হযরত। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজে বর্ষবরণ উপলক্ষ্যে সাপুড়ে বাবা আলাল শেখের সাথে এভাবেই সাপের খেলা দেখাচ্ছিল সে। এসময় হাতে তালি শত শত শিক্ষার্থী উপভোগ করে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সাপের খেলা।
বগুড়ার শেরপুরের গাড়িদহ এলাকার আলাল শেখ। ওস্তাদ বাবার সঙ্গে নেচে গেয়ে শিশু হযরত সাপ খেলা দেখিয়ে উপস্থিত দর্শকশ্রোতাদের মাতিয়ে রাখেন।
পাঁচটি বাক্সের দুইটিতে গোমা এবং অপরগুলোতে দারাজ৷ মাছুয়াল প্রজাতির সাপ রাখা ছিল। এসব সাপ দিয়েই বিভিন্ন কলাকৌশল দেখাচ্ছিলেন সাপুড়ে আলাল।
তবে তার ৫ বছর বয়সী ছেলের খেলা দেখানোর ব্যাপারটি উপস্থিত দর্শকদের মনে সবচেয়ে বেশি দাগ কাটে। হযরত এক সাথে দুইটি সাপ গলায় পেচিয়ে খেলা দেখায়। এমনকি খেলার এক পর্যায়ে সাপের মুখ নিজের মুখের মধ্যে নিয়ে উপস্থিত দর্শকদের চমকে দেন।
সাপুড়ে আলাল শেখ বলেন, আমি ১৭ বছর বয়স থেকেই সাপের খেলা দেখাই। বলতে পারেন তখন থেকেই সাপ নিয়ে সাধনা শুরু করি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাপ খেলা দেখানো যেন নেশা হয়ে যায়। সেই নেশায় সময়ের ব্যবধানে পেশা হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, 'আমার ৫ ছেলের মধ্যে চার ছেলেই সাপ খেলায় আমাকে সহযোগিতা করে। ৫ বছর বয়সী হযরতকে তার দুই বছর বয়স থেকেই সাপের খেলা দেখানোর কৌশল শেখানো শুরু করি। এখন হযরত আমার সাথে সাপ খেলা দেখাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায়। এই সাপ খেলা দেখানোর মাধ্যমেই আমাদের সংসার চলে। আমাদের আর অন্য কাজ করার জায়গা নেই।
এদিকে বগুড়া সকাল থেকে নানা আয়োজনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক পদক্ষিণ করেন। শোভাযাত্রায় জেলা প্রশাসন, পুলিশসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রা শেষে বগুড়া শহীদ খোকন পার্কে দুই দিনব্যাপী লোকজ মেলার উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম।