এস এম নওরোজ হীরা বরিশাল
আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনী আলোচনায় বাঁধা, নৌকা মার্কাসহ মুক্তিযোদ্ধাদের অশ্লীল ভাষায় গালাগালি ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো. দুলাল হোসেন তালুকদারকে গুমসহ প্রাণ নাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ কয়েকজন এলাকাবাসী। ৬ মে (শনিবার) দুপুর সাড়ে বারোটার সময় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জননী সাহান আরা বেগম স্মৃতি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রুবেল তালুকদার। তার সাথে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা (কমান্ডার) মৃত. শামসুল হক তালুকদারের ছেলে মো. দুলাল হোসেন তালুকদার, মৃত মুক্তিযোদ্ধার ভাই মুনসুর তালুকদার, নগরীর ৩০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কালাম মোল্লা ও স্থানীয় মানিক ব্যাপারীসহ ৪/৫ জন বাসিন্দা।
লিখিত বক্তব্য উল্লেখ থাকে, প্রিয় নগরবাসী আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নগরীর ৩০ নং ওয়ার্ডের স্থায়ী নাগরিক। চলমান মাসের ৫ মে শুক্রবার আনুমানিক রাত সোয়া নয়টায় সময় আমি/আমরা নগরীর ৩০ নং ওয়ার্ডে একটি মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তন ক্লাব বসে প্রায় এক শতাধিক এলাকাবাসী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের নিয়ে আলোচনা করতে ছিলাম। আলোচনার মূল বিষয় ছিল বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত আবুল খায়ের এর সমর্থনে নৌকা মার্কার প্রতীক কিভাবে আমরা বিজয় লাভ করব। হঠাৎ একঝাঁকে প্রায় ১৫ থেকে ২০ টি মটরসাইকেল আমাদের মুক্তিযোদ্ধার অফিসের সামনে এসে দাঁড়ায়। আমি/ আমরা দেখি নগরীর ৩০নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা। তার ভাই মামুন মাঝি ৩০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচনের সমর্থনে মুক্তিযোদ্ধার ক্লাবের সামনে এসে বলে এটা কিসের ক্লাব ? তখন আমি/ আমরা বলি এটা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্লাব। তারপর সে (গোলাম মোস্তফা) সকল মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে খারাপ ভাবে গালাগালি ও ব্যঙ্গ করে এবং নির্বাচন ও নৌকা মার্কা নিয়েও গালাগালি করে। তখন আমি/আমরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করলে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে দুলাল হোসেন তালুকদারের দাঁড়ি এবং ঘাড়ে ধাক্কা মারে এবং গুম ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয় গোলাম মোস্তফা। সে আরো বলে গুম করতে যত টাকা প্রয়োজন সে খরচ করবে তখন উপস্থিত ছিল প্রায় দেড় শতাধিক লোক। রাজনীতি, প্রশাসন ও সাংবাদিকসহ সকলের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের দাবী জানিয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে নগরীর ৩০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কালাম মোল্লা বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। যাতে মারামারি না হয়। এবং বরিশাল এয়ারপোর্ট (বিমান বন্দর) থানা পুলিশকে (ওসি তদন্ত) জানিয়েছেন। কিন্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেনি। উপরোক্ত তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে দুলাল হোসেন তালুকদার বলেন, তিনিও এয়ারপোর্ট থানায় ঘটনার সময় কল দিয়েছিলেন। কিন্ত পুলিশ আসেনি। তিনি তার জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন । একইসাথে উপস্থিত ৪/৫ জন বাসিন্দা একমত পোষণ করেন।
উপরোক্ত বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্ত নগরীর ৩০নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টানা ২০ বছর সভাপতি রয়েছেন তিনি। যেখানে আলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত আবুল খায়ের সাহেবকে নৌকা মার্কায় মনোনয়ন দিয়েছে সেখানে আমি উল্টাপাল্টা করি কিভাবে? আর মুক্তিযোদ্ধার কথা বলছেন, আমার গুরু ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা (কমান্ডার) মৃত. শামসুল হক তালুকদার। যা সবাই জানে। মুক্তিযোদ্ধারা সন্মানিত ব্যক্তি, এদেরকে গালাগালি করার প্রশ্নই উঠে না। বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত. শামসুল হক তালুকদারের ছেলে মো. দুলাল হোসেন তালুকদারের মাথায় সমস্যা আছে। যা স্থানীয় অনেকেই জানেন। বিষয়টি আমার বিপরীতে ব্যক্তি কেন্দ্রিক ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।