সিলেট প্রতিনিধি
বিশ্বনাথের অলংকারি ইউনিয়নে পনাউল্লাহ বাজার হজরত শাহজালাল (রঃ) ডি.এস. হাফিজিয়া মাদ্রাসা ১৯৮৮ ইংরেজীতে পনাউল্লাহ বাজারের পূর্ব দক্ষিণ প্রান্তে এলাকাবাসীর সর্বসম্মতিক্রমে অক্লান্ত পরিশ্রমে ৪ শতক জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত হয় ।
এই ৪ শতক জায়গা বড়তলা গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী মরহুম নূরুল হোসেন দান করেন । পরবর্তীতে বড়তলা গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোজাম্মেল মুকতাদির ৫ শতক জায়গা দিয়েছেন এবং মৌখিক ভাবে দলিল ব্যতিত বড়তলা গ্রামের মরহুম আব্দুল গণীর পরিবার আরোও ৭ শতক জায়গা মাদ্রাসায় দান করেন বলে জানাগেছে ।
মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠাকালীণ সময় থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ওই সময়ের মধ্যে কয়েক শতকের বেশি কুরআনের হাফিজ তৈরী হয় । ২০১৬ সালের প্রথম দিকে এলাকার বড় খুরমা গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী মাওলানা রফিক আহমদ, বড়তলা, বড় খুরমা ও বড়খুরমা উত্তরের যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অধিবাসীদেরকে নিয়ে হজরত শাহজালাল(রঃ) ডি. এস. হাফিজিয়া মাদ্রাসার অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য যুক্তরাজ্যে ব্রিকলেইনে একটি বৈঠকের আহবান করেন । ওই বৈঠকে তার আহবানে উপস্হিত সবাই একমত হন এবং উপস্হিত ও অনুপস্হিত অনেকেই মাদ্রাসার ফান্ডে টাকা দেওয়া শুরু করেন ।
সেদিন ব্রিকলেইনের ওই বৈঠকে যারা উপস্হিত ছিলেন তারা হলেন, মাওলানা রফিক আহমদ, মিরন মিয়া, দিলাল আহমদ, আলী আশরাফ, খাবুল মিয়া, কবির মিয়া, এনামূল হক, আনহার মিয়া, মফচ্ছির মিয়া, মজম্মিল মিয়া, রাজু মিয়া, আব্দুল কাইয়ুম, রেদওয়ান হোসেন শামীম, এমরান হোসেন, সাবরান হোসেন, জুনেদ মিয়া, সুহেল মিয়া, ডাঃ মাসুক আহমদ ও আরো নাম না পাওয়া একাধিকজন ।
সেদিন বৈঠকে হজরত শাহজালাল (রঃ) ডি. এস. হাফিজিয়া মাদ্রাসার নামে উপস্থিত সকলের সর্বসম্মতিক্রমে একটি উন্নয়ন কমিটি গঠিত হয় আর এ কমিটির সভাপতি মনোনিত হন বড় খুরমা গ্রামের মিরন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মনোনিত হন মাওলানা রফিক আহমদ । এই কমিটি গঠনের কয়েকমাস পরে মাওলানা রফিক আহমদ যুক্তরাজ্যে মাদ্রাসার কল্যাণে উত্তেলিত বিশাল একটি অংকের টাকা নিয়ে তিনি বাংলাদেশে আগমণ করেন । দেশে এসে মাওলানা রফিক আহমদ পূর্বের পরিকল্পনার অংশ হিসাবে দেশে মাদ্রাসার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রভাশালী একজন ব্যক্তিকে ম্যানেজ করেন । পরে ওই প্রভাবশালী ব্যক্তিকে নিয়ে খুবই সুকৌশলে মাদ্রাসার জেনারেল কমিটি ও এলাকাবাসীর মতামত এবং মাদ্রাসার কল্যাণে যুক্তরাজ্যে বৈঠকের সিদ্বান্তকে অবহেলা করে হজরত শাহজালাল(রঃ) ডি. এস. হাফিজিয়া মাদ্রাসার মূল নামের সাথে '' মুহাম্মদিয়া বোর্ডিং ও এতিমখানা'' নাম যোগ করে দেন ।
মাওলানা রফিক আহমদ দেশে এসে এমন পরিকল্পনা গ্রহণের ফলে যুক্তরাজ্যে মাদ্রাসার কল্যাণে ওই কমিটি ঝরে যায় এবং অধিকাংশ সদস্য কমিটি থেকে স্ব ইচ্ছায় ইস্তেফাদেন । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কমিটির একজন ফাউন্ডার মেম্বার জানান, যুক্তরাজ্যে এমন একটি বৈঠকে উপরোক্ত চালচাতুরীর বিরুদ্ধে তিনি সরাসরি প্রতিবাদ জানান এবং প্রশ্ন রাখেন? কিন্তু বৈঠকে কেউই তার কোনো প্রশ্নের জবাব দেন নাই? তিনি জানান কথা না বলে এক এক করে বৈঠক থেকে সকল সদস্যবৃন্দ বাহির হয়ে আসেন । এ-বিষয়টি নিয়ে এলাকার দেশে বিদেশে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠলেও কিন্তু বিভিন্ন ভাবে দামাচাপা দিয়ে বিষয়টিকে ঢেকে রাখা হয়েছে বলে জানাগেছে ।
এ-বিষয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধান রিপোর্টে যে সব তথ্য উদঘাটিত হয়েছে তা এখানে প্রকাশিত হয়েছে ।
২০১৯ সালে হজরত শাহজালাল (রঃ) ডি. এস. হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ সংগঠনের সাবেক ৪৬ জন ছাত্রের সাক্ষরিত মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বরাবর সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণের জন্য যে কপি প্রেরণ করেছিল তা হচ্ছে ।
বরাবর,
সভাপতি ম্যানেজিং কমিটি
হযরত শাহজালাল (র.) ডি. এস. হাফিজিয়া মাদ্রাসা
পনাউল্লাহ বাজার, বিশ্বনাথ, সিলেট ।
বিষয়: হযরত শাহজালাল (র.) ডি. এস. হাফিজিয়া মাদ্রাসা এবং মুহাম্মদিয়া বোর্ডিং ও
এতিমখানা নিয়ে তৃনমূল সহ দেশ-বিদেশে ব্যাক্তি বর্গের বিভিন্ন প্রশ্ন প্রসঙ্গে ।
জনাব,
আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীগণ অত্র মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র বৃন্দ । হযরত শাহজালাল (র.) ডি.এস
হাফিজিয়া মাদ্রাসায় আমরা বিভিন্ন সেশনে যথারিতি হিফজ সম্পন্ন করে পাগড়ি নিয়ে বিদায় নিয়েছি ।
আমাদের প্রত্যেক সেশন কালীন সময়ে উক্ত প্রতিষ্ঠান নিয়ে কোন প্রশ্ন ছিল না । উল্লেখ্য যে, এখানে
আমাদের ও সু-প্রিয় এলাকাবাসী এবং প্রবাসীগণ সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের আর্থিক অনুদান,
ত্যাগ ও শ্রমের বদৌলতে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছিল, এখান থেকে প্রায় অর্ধশতকের বেশী ছাত্র-ছাত্রীরা
হিফজ সম্পন্ন করে বর্তমানে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত আছে । কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান অবস্থা দেখে
আমরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় । ২০১৬ সালে এক ব্যক্তি কর্তৃক অত্র মাদ্রাসায় মুহাম্মদিয়া বোর্ডিং ও
এতিমখানা" নামকরণে একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে দিন দিন রহস্যজনক কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায়
এলাকাবাসী ও দেশ-বিদেশ সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের কাছ থেকে নানা প্রশ্ন উত্তাপিত হওয়ায়
আমরা আগত প্রশ্নের জবাব দিতে অক্ষম হয়েছি । নিম্নে প্রশ্ন গুলো উপস্থাপন করা হলো ।
প্রশ্নাবলী:
*মাদ্রাসার নাম । হযরত শাহজালাল (র.) ডি. এস. হাফিজিয়া মাদ্রাসা পনাউল্লাহ বাজার, ওপর
দিকে নতুন প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের নাম মুহাম্মদিয়া বোর্ডিং ও এতিমখানা” বর্তমানে হযরত
- শাহজালাল (র.) ডি. এস. হাফিজিয়া মাদ্রাসা এবং মুহাম্মদিয়া বোর্ডিং ও এতিমখানা নামকরণে
যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে । * প্রশ্ন হচ্ছে এখানে এবং ও মুহাম্মদিয়া শব্দদয়ের ব্যবহারে
কী বুঝানো হয়েছে ? এটা কী দুটি প্রতিষ্ঠানের ইঙ্গিত বহন করে না ?
* অত্র প্রতিষ্ঠানে যদি বোর্ডিং ও এতিমখানা হয়ে থাকে, তাহলে তো এভাবে নামকরণ হওয়ার
কথা যথা “হযরত শাহজালাল (র.) ডি. এস. হাফিজিয়া মাদ্রাসা বোর্ডিং ও এতিমখানা
পনাউল্লাহ বাজার, বিশ্বনাথ, সিলেট ।