আশরাফুল ইসলাম সবুজ
জেলা প্রতিনিধি,নরসিংদী :-
ঢাকার নিকটে নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলায় মতিউর নগরে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর অবস্থিত। ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ জাদুঘরটি উদ্বোধন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা ও বীরত্বের সম্মান স্বরূপ সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের মধ্যে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান অন্যতম।
১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট পাকিস্থানী বিমান ঘাটি থেকে প্রশিক্ষণ বিমান টি-৩৩ বিমান হাইজ্যাক করার পর ভারতে বিধ্বস্ত হলে লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান শহীদ হন। শহীদ হওয়া এই বীর মানুষটির প্রতি সম্মান প্রদর্শন পূর্বক নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলায় বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হয়।
জাদুঘরের লাইব্রেরীটিতে রয়েছে প্রায় ২ হাজার ৮শ বইয়ের সংগ্রহ। বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান জাদুঘরের পাশে রয়েছে বীরশ্রেষ্টের স্বজনদের বাড়ি, রামনগর হাই স্কুল ও রামনগর উত্তর পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার রামনগর গ্রামে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের পৈতৃক বাড়ি। সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে মেঘনা নদীর গা ঘেঁষে গড়ে ওঠা রামনগর গ্রামটির নাম পরিবর্তন করে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর নগর নামকরণ করেছেন।
প্রবেশমুখে নির্মিত হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের স্মৃতিফলক ‘বাংলার ঈগল’ রামনগর হাই স্কুল মাঠে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর।
জাদুঘরে প্রতিদিন দৈনিক পত্রিকা রাখার নিয়ম এবং পত্রিকা ও মুক্তিযুদ্ধের নানান রকম বই পড়তে স্থানীয় ছেলে মেয়েরা ও বয়স্করা গ্রন্থাগারে প্রতিদিনই আসা যাওয়া করেন এবং স্থানীয় দর্শনার্থীদের পাশাপাশি পাশের বিভিন্ন থানা ও জেলা থেকে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী ও কৌতূহলী দর্শনার্থীরা জাদুঘরে আসেন নানান রকম তথ্য জানা ও বিশেষ কিছু দেখার আগ্রহ নিয়ে।
দর্শনার্থীদের চাহিদা ও অত্র প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে যে সব অত্যাবশ্যকীয় কর্মকাণ্ড ও প্রাতিষ্ঠানিক ঐতিহ্য থাকার দরকার সে রকম তেমন কিছুই এখানে এখনো গড়ে উঠেনি, পাঠাগারে কিছু বই থাকলেও জাদুঘরে বীরশ্রেষ্ঠের কোন স্মৃতিচিহ্ন নেই।
দর্শনার্থীরা স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন যে, তারা নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা পায়না এবং প্রায়ই দরজা তালা লাগানো থাকে এবং উন্মোক্ত ভাবে সবাইকে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয় না। এই সব কারনে নিয়মিত বই পড়া ও জাদুঘর পরিদর্শনে দর্শনার্থীদের সমস্যা হয়। শুধু তাই নয়, গ্রন্থাগারের বেশির ভাগ ইলেকট্রিক বাতি নষ্ট। গ্রন্থাগারের নিজস্ব প্রবেশ গেইট নেই। স্কুল চলাকালীন গেইট বন্ধ থাকায় সাধারণ দর্শনার্থীরা আসতে পারে না। বেশ কিছু সমস্যার চাহিদাপত্র জেলা পরিষদে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
স্থানীয়দের দাবি মতিউর রহমান গ্রন্থাগারে বইয়ের পাশাপাশি স্মৃতি জাদুঘরে তার ব্যাবহারিক ও মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর হোসেন বলেন, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটি পরিচালনায় দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষ তাদের চাহিদাগুলো আমাদেরে জানালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।