হাকিকুল ইসলাম খোকন,যুক্তরাষ্ট্র সিনিয়র প্রতিনিধি:
গত ২৬শে সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশী বৌদ্ধদের আন্তর্জাতিক সংগঠন "ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব বাংলাদেশী বুড্ডিষ্টস (WFBB) এর উদ্যেগে এবং আহ্বায়ক ডঃ বসুমিত্র বড়ুয়া (যুক্তরাষ্ট্র) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হলো "বুদ্ধঃ গ্রাফিক গাইড" নামক বিতর্কিত প্রকাশনার বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ সভা। সংগঠনের নির্বাহী সদস্য (ঢাকা থেকে) মিতায়ন চাকমার সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি ও বুড্ডিষ্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডঃ সুমন কান্তি বড়ুয়া। প্রধান বক্তা তাঁর আলোচনায় বলেন, বাংলাদেশের বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থেকেও বিতর্কিত "বুদ্ধঃ গ্রাফিক গাইড" প্রকাশনা নিয়ে বাংলাদেশে চলমান ঘটনা প্রবাহে আপনারাও যে উদ্বিগ্ন ও সোচ্চার তাতে আমাদের দায়িত্ববোধ ও সচেতনতা আরো বেশি মাত্রায় বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, সভ্য সমাজে বসবাস করা সংশ্লিষ্ট মানুষগুলো যে বুদ্ধকে নিয়ে কুরুচিপূর্ন ছবি ও ভুল তথ্য দিয়ে একটি বই প্রকাশ করবে তা বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দের ধারণার বাইরে ছিল। যে সকল স্থানে বা বিহারে বইটির প্রকাশনা করা হয় সেখানে অংশ গ্রহণকারী কাউকেই বই উপহার হিসাবে বা ক্রয় করার সুযোগ দেয়া হয়নি এবং যে কয়টা বই অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করা হয় তা পুনরায় প্রকাশকরা নিয়ে যায়। অতএব, অনুষ্ঠানে বইটি ভালোভাবে দেখা বা পড়ার কারো তেমন সুযোগ হয়নি। প্রকাশকরা দাবী করেন, বইটি শুধুমাত্র নট ফর সেল সংগঠনের সদস্যদের জন্য প্রকাশ হয়েছে। অনুঠানে সভাপতি ডঃ বসুমিত্র বড়ুয়া বলেন, বইটিতে শুধু অশালীন ছবি নয়, ২০টির অধিক ভুল এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য সংযুক্ত করা হয়েছে। সদস্য সচিব বলেন, "বুদ্ধঃ গ্রাফিক গাইড" নামক বইটি প্রকাশের দুদিন পূর্ব থেকে টেলিভিশনে যে ভাবে প্রকাশনা উৎসবের কথা বলা হলো তাতে আমরা বেশ আগ্রহী ও আনন্দিত ছিলাম কিন্তু প্রকাশের দিন থেকে বইটিতে ভুল তথ্য ও অশালীন ছবি ব্যবহার করা হয়েছে জেনে অত্যন্ত মর্মাহত হলাম এবং এ ধরনের প্রকাশনার সাথে জড়িতদের ধিক্কার জানাই। তিনি বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দকে বিক্ষিপ্ত ভাবে সমাজ সেবা না করে এবং নিজ নিজ অবস্থানে আরো সচেতন ও দায়িত্বপূর্ণ হওয়ার বিনীত আবেদন জানান। সংগঠনের সদস্য বক্তারা বাংলাদেশে আইনের আশ্রয়ে নিয়ে এই ধরনের প্রকাশনা নিষিদ্ধ করার উদ্যেগ নিতে কৃষ্টি প্রচার সংঘ, বৌদ্ধ সমিতি সহ অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সচেতন ব্যক্তিবর্গের প্রতি আহবাহন জানান। তাঁরা বুদ্ধ এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় যে কোন প্রকাশনা প্রকাশের পূর্বে তা নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা করার জন্য বৌদ্ধদের একটি "তথ্য ও গবেষণা কেন্দ্র" প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
তাছাড়া, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ পালি শিক্ষা বোর্ড এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক ও শিক্ষকদের আরো সচেতন হয়ে সুদূর প্রসারী ও সময় উপযোগী কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে জাতীর কল্যানে অবদান রাখার আহবান জানান। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নিউ ইয়র্ক থেকে রণবীর বড়ুয়া রানা, ভারত থেকে সুমন বড়ুয়া, প্যারিস থেকে রিপন বড়ুয়া তাপস, কানাডা থেকে আশীষ বড়ুয়া, সুইজারল্যান্ড থেকে পলাশ বড়ুয়া, লন্ডন থেকে রিপন বড়ুয়া,ইতালী থেকে সুমেধ তাপস বড়ুয়া, নরওয়ে থেকে লাভলু বড়ুয়া, জাপান থেকে প্রতীক বড়ুয়া, ফ্রান্স থেকে উদয়ন বড়ুয়া, বোস্টন থেকে শিমুল বড়ুয়া, কোরিয়া থেকে অসীম বড়ুয়া।