স্টাফ রিপোর্টার যশোর জেলা
বেনাপোল পৌরসভার ভবারবেড় গ্রামে বসবাসকারী বৈদ্যুতিক জেনারেটর ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিত বেনাপোলের বিশিষ্ট সুদ ব্যবসায়ী হাসেম আলী বিল্লালের । তার লাগামহীন সুদ বাণিজ্যের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব বেনাপোলের অর্ধশতাধিক ছোট বড় দোকান ব্যবসায়ী। জানা যায় ৩ বছর পূর্বে এই হাসেম আলী ও বিল্লাল বেনাপোল বাজারে কবুতর হাটের ইজারার টাকা উঠাতো। বর্তমানে সে সুদ বাণিজ্যে করে বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। বর্তমানে বিল্লালের বেনাপোল বাজার এ চারটি বাড়ি আছে আইন প্রয়োগকারী কাছে জোরালো দাবি তদন্ত করে এদেরকে আইনের আওতায় আনা হোক।
গত ১৪ই জুলাই বেনাপোলে এক অসহায় পরিবারের বসত ভিটা দখলের এবং ছয় বছর ধরে ছেলে নিখোঁজ খবর বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এবং অনলাইনে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে বেরিয়ে আসছে তার লাগামহীন সুদ বাণিজ্যের সু-দীর্ঘ এক বিশাল ইতিহাস। লোমহর্ষক এই সুদের কারবারীর ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবারের লোকেরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। এ যেন জীবন্ত এক সুদ ব্যবসায়ী ফেরাউনের প্রতিচ্ছবি। আরো বিভিন্ন রকমের সাংবাদিকদেরকে হুমকি প্রদান করে যাচ্ছেন। হাসেম আর বিল্লাল।
শুক্রবার ১৬ই জুলাই বেনাপোল বাজারের মুদী ব্যবসায়ী জাফর ষ্টোরের মালিক আবু জাফর জানান, গত ২০ বছর আগে ব্যবসা করার জন্য স্থানীয় জেনারেটর ব্যবসায়ী হাসেম আলীর ও বিল্লাল নিকট থেকে ১৫ লক্ষ টাকা সুদে নেই। প্রতি মাসে সুদ হিসাবে লাখে ৯০ হাজার টাকা করে দিতে হতো। এভাবে ১০ থেকে ১২ বছর চলার পরে মাঠের দেড় বিঘা ফসলী জমি বিক্রি করে হাসেমের ১০ লক্ষ টাকা পরিশোধ করি। এ পর্যন্ত সুদ ব্যবসায়ী হাসেম আলীকে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা দিয়েছি তবুও সে আমার কাছে এখনও ৫ লক্ষ টাকা পাবে। সে মতে এখন মাসিক ৩০ হাজার টাকা করে সুদ দিতে হচ্ছে। বর্তমান করোনাকালীন ও লকডাউনে ব্যবসা বাণিজ্যে বন্ধ থাকার পরও তাকে প্রতিদিন ১ হাজার টাকা সুদ দিতে হচ্ছে। আবু জাফর আরোও জানান, সুদের টাকা দিতে হিমসিম খাচ্ছেন বলে তিনি হাসেমকে অনেক বার কম নিতে বললে তিনি মানতে রাজি হননি। টাকা নেওয়ার সময় হাসেমকে কি কি দিতে হইছে বললে তিনি জানান, ৩০০ টাকার সাদা ননজুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর এবং পুবালী ব্যাংকের ৫ টি ব্লাংক চেক সই করে নেন। বর্তমানে আমি সুদের টাকা দিতে দিতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। আমি এই সুদ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রশাসনের মাধ্যেমে প্রতিকার পেতে চাই।
বেনাপোল বোয়ালীয়ার এক ভুক্তভোগী সি এন্ড এফ কর্মচারি মামুন হোসেন জানান, পারিবারিক ভাবে বিপদে পড়ে সুদ ব্যবসায়ী হাসেমের ও বিল্লালের নিকট থেকে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। টাকার লাভ হিসাবে এ পর্যন্ত তাকে প্রায় ৮০ হাজার টাকা দিয়েছি। বর্তমানে করোনাকালীন অফিসে কাজ না থাকার কারনে সুদের টাকা দিতে পারছি না। কিন্তু সুদের টাকা না দিলে হাসেম এবং বিল্লাল আমাকে মামলা দেওয়ার হুমকী দিচ্ছেন। আমার কাছ থেকে একটি স্ট্যাম্পে সই নিয়েছেন ও একটি ব্যাংকের চেক নিয়েছেন সই করে।
সুদের টাকার লেনদেনের বিষয়ে হাসেম আলীকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, জাফর ষ্টোরের মালিক আবু জাফরের সাথে ব্যাংকের লেনদেন আছে। আমার টাকা লাগলে নেই তার টাকা লাগলে দেই। তার কাছ আমার কোন সুদের টাকা নেই।
এ বিষয়ে বেনাপোল বাজার কমিটির সভাপতি আলহাজ¦ আজিজুর রহমান বলেন, সুদের কারনে বেনাপোল বাজারের অনেক ব্যবসায়ী এখন পথে বসেছে। আমরা বাজার কমিটি খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে একটি মিটিং ডেকেছি। সুদ ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে যাতে ব্যবসায়ীরা প্রতিকার পাই সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।