মোঃ নজরুল ইসলাম বিশেষ প্রতিনিধি
বেনাপোল কাস্টম হাউজের সামনে অবস্থিত মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয় ও বেনাপোল বাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ফুটপথের পাশেই স্কুলের দেয়াল ঘেষে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত ট্রাক চালক ও পাবলিকের প্রস্রাব ও মল মূত্র ত্যাগের কারনে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে দু’টি স্কুলের ১২০০ শিক্ষার্থী। দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা মালামাল পরিবহনের জন্য কাস্টমসের সামনে ভাসমান ট্রাক ষ্ট্যান্ড। প্রতিদিন সকাল ৭ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ হাজার লোকের আনাগোনা এই ট্রাক ষ্ট্যান্ডে। এই ট্রাক ষ্টান্ডের আশে পাশে কোন পাবলিক টয়লেট ও বর্জ্য ব্যবস্থপনা না থাকার কারনে সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে ট্রাক চালকরা নিবির্ঘ্নে বালিকা বিদ্যালয় ও প্রাইমারী স্কুলের বাউন্ডারীর সামনে প্রস্রাব ও মল মূত্র ত্যাগ করতে দেখা যাচ্ছে। সচেতনতার অভাবে স্কুল দুটির সামনে যত্রতত্র মল মূত্র করার ফলে পারিবেশ দূষণ থেকে ব্যাপক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে দু’টি স্কুলের ১২০০ শিক্ষার্থী। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় গড়ে প্রতি মিনিটে স্কুলের দেওয়ালে দুইজন করে ব্যক্তি প্রস্রাব করছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ ব্যক্তিই ট্রাকষ্ট্যান্ড নামে পরিচিত ট্রাক ভাড়ার জন্য অপেক্ষারত ট্রাক ড্রাইভাররা। এ বিষয়ে ট্রাক চালক ও ট্রান্সপোর্ট কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ট্রাকষ্ট্যান্ডের আশে পাশে কোন পাবলিক টয়লেট না থাকায় তারা নিরুপায় হয়ে এখানে প্রস্রাব করতে হচ্ছে। এছাড়া স্কুল দুটির সামনে অবস্থিত ১৫ই ফেব্রুয়ারী বেনাপোল শোক দিবসের মুর্যাল, ও একটি শিক্ষার প্রতীক। এমন একটি স্মৃতি বিজাড়িত স্থানে এমন অব্যবস্থাপনা বেনাপোলের সচেতন মানুষের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ট্রান্সপোর্ট কর্মচারী সোহাগ জানান, ট্রাকষ্ট্যান্ডের পাশে কোন পাবলিক টয়লেট না থাকার কারনে নিরুপায় হয়ে ট্রাক চালক সহ ষ্ট্যান্ডে আগত লোকজন স্কুলের দেওয়ালের পাশে মল মূত্র ত্যাগ করছে। ষ্ট্যান্ডের পাশে পৌরসভা থেকে একটি পাবলিক টয়লেট করে দিলে এর থেকে সবাই পরিত্রান পাবে।
এবিষয়ে বেনাপোল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইজ্জত আলীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সাথে কয়েকবার আলোচনা হলেও স্থায়ী ভাবে সমস্যার কোন সমাধান হয়নি। তবে ২০২২ সালে এ সমস্যাটা সমাধানে স্কুল কমিটি মিটিং করে কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।
এবিষয়ে গাজীপুর ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার এবং স্কুল কমিটির সহ-সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসমস্যা রোধে আমরা চেষ্টা করেছি কিন্তু জনগণকে সচেতন করতে পারিনি তবে এবার নতুন বছরে আমরা ঐ স্থানে লোহার রেলিং দিয়ে ফুলের চারা রোপন করবো।
বেনাপোল মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইনামুল হক রিপন বলেন, এই পথ দিয়ে আমাদের বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রী যাতায়াত করে কিন্তু প্রায় সময় মানুষ জন এখানে দাড়িয়ে প্রস্রাব করে যেটা খুবই লজ্জাজনক।কারন স্কুলে আগত মেয়েরা প্রস্রাবের দুর্গন্ধ এড়াতে মুখে ওড়না দিয়ে প্রবেশ করে। আমি চাই এই সমস্যাটা সমাধান হোক এবং যথাযত কর্তৃপক্ষ সহ পৌর প্রসাসন সমস্যা সমাধানে কার্যকারী ভূমিকা পালন করুক।
এছাও যে সব পথচারী ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা এ ফুটপাত ধরে চলাচল করতো, তারা এখন ফুটপাত ছেড়ে রাস্তার পাশ দিয়ে চলাচল করছে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে কোমলমতী শিক্ষার্থীদের।
এবিষয়ে ষ্ট্যান্ডের এক দোকানদার বলেন, ষ্ট্যান্ডের এখানে একটা স্বাস্থ্যকর পাবলিক টয়লেট হলে পরিবেশ স্বাস্থ্যকর করা সম্ভব। তা না হলে প্রস্রাবের বিকট দুর্গন্ধে এখানে ব্যবসা করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
এবিষয়ে পৌর স্যানিটারি ইন্সেপেক্টর রাশিদা বেগমকে একাধিক বার মোবাইলে কল করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।