মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম যশোর জেলা প্রতিনিধি
বেনাপোলে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটি প্রায় ৭ বছর আগে নির্মিত হলেও কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বেনাপোল পোর্ট থানার তিনটি ইউনিয়নের প্রায় তিন লক্ষাধিক সাধারণ জনগন। ৮ কোটি টাকা ব্যায়ে বেনাপোলের তালশারিতে নির্মিত ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি ৭ বছর পড়ে আছে।
সেখানে চিকিৎসার কোন কার্যক্রম শুরু হয়নি। কর্মকর্তারা বলছে দুই দপ্তরের টানা পোড়েনের কারণে এর কার্যক্রম শুরু হতে বিলম্ব হচ্ছে। এছাড়া এই হাসপাতালে বসে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের ডাক্তার। তারাও সময় মত এখানে না থাকায় চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারন জনগন।
হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে হাসপাতালটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালে নির্মাণ কাজ শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। বিগত প্রায় ৭ বছর অতিবাহিত হলেও সেখানে কোন চিকিৎসা ব্যবস্থার কার্যক্রম চলছে না। ফলে বন্দর নগরী বেনাপোল ইউনিয়ন, পৌরসভা সহ পুটখালী ও বাহদুরপুর ইউনিয়নের প্রায় তিন লক্ষ মানুষ সহ এলাকার প্রত্যান্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দরে চাকরি ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক কাজ করে বন্দরে। জরুরি কোন দুর্ঘটনায় কোন শ্রমিক আহত হলে বা কোন প্রসুতির জরুরি ডেলিভারীর প্রয়োজন হলে তাকে বেনাপোল থেকে ১২ কিলোমিটার দুরে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। দেশের সর্ববৃহৎ স্থল বন্দর বেনাপোল। সেখানে সু-চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা না থাকায় অনেকে নাভারন অথবা যশোর যেতে যেতে পথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
বেনাপোল পৌর সভায় ১ লাখ ৩০ হাজার এবং এ থানার আওতায় আরো তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে প্রায় তিন লক্ষ মানুষের বসবাসের জন্য গড়ে উঠেনি সরকারি ভাবে কোন চিকিৎসালয়। বেসরকারি ভাবে যে সব চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো আছে তাতে নেই কোন মান সম্মত ডাক্তার। সপ্তাহে ৭ দিনে তিন দিন সেখানে রুগী দেখতে ডাক্তার আসে দুর দুরান্ত থেকে। সীমান্ত ঘেষা এ শহরের মানুষ নানা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সরকারের রাজস্ব আদায়ের প্রাণ কেন্দ্র বেনাপোল বন্দর। সেখানকার চিকিৎসা সেবার অবস্থা এত নাজুক তা দেখে ও না দেখার ভান করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের আলী জানান, এ হাসপাতালটি চালু হলে এ জনপদের মানুষ উপকৃত হবে।এব্যপারে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটি পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের নিন্ত্রয়ণাধীন সে জন্য এর কার্যক্রম চালু হওয়ার বিষয়টি তারাই ভাল বলতে পারবে।
এদিকে পরিবার পরিকল্পনার দায়িত্বে নিয়োজিত ডাক্তার আব্দুর রাজ্জাক ও ভিজিটর তারই স্ত্রী তালশারী পরিবার পরিকল্পনা অফিস বসার অনুপযোগি হওয়ায় মা ও শিশু কন্যান কেন্দ্রে বসে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। কিন্তু দুই জন স্বামী স্ত্রী একই জায়গাতে বসায় স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার মানুষ। সোমবার বেলা ১২ টার সময় ওই হাসপাতালে যেয়ে তাদের দুজনের চেয়ার খালি পাওয়া যায়। সেখানে বাহিরে একজন কেয়ার টেকারকে ঘোরা ফেরা করতে দেখা যায়।