সিকদার গিয়াসউদ্দিন
সমগ্রবিশ্বে প্রকাশ্য দিবালোকে একটি বিরোধী দলের প্রধানসহ সমগ্র নেতৃত্বকে সমূলে বিনাশ করার লক্ষ্যেপরিচালিত বর্বরোচিত সন্ত্রাসী গ্রেনেড হামলা,নির্মম,অমানবিক আর পৈচাশিক হত্যাকাণ্ডের তেমন কোন উদাহরণ আদৌ কারো জানা আছে কি?অনেকটা জেনারেল ফ্রাংকো আর অগাষ্টে পিনোশের দিনগুলোকে স্মরণ করিয়ে দেয়ার মতো নয় কি?
দ্বিতীয়বারের মতো স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের শাসনামলকে দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক অবৈধ ঘোষনা করার পরও ২০০৪ সালের ২১'শে আগষ্টের দিনটিতে পরিকল্পিত উপায়ে পরিচালিত মানবতাবিরোধী সন্ত্রাসী ও জঘন্য কর্মকান্ডের বিষয়টি তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল এবং বর্তমানে বড় রাজনৈতিক দলের দাবীদার বি এন পি আজও কি নিজের চেহারা নিজে আয়নায় দেখার সূযোগ পায়নি?
আবহমানকাল ধরে যে কোন হত্যাকাণ্ড নিন্দনীয় ও সর্ব্বোচ্চ শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে বিবেচিত।সেই সময়ের একজন সাধারণ মানুষকেও বলাবলি করতে দেখা গেছে-কারা এধরণের জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করতে পারে!!
সভ্য গনতান্ত্রিক দেশগুলোতে কিংবা যে কোন দেশে রাজনৈতিক বিরোধীদের উপর যে কোন ধরণের নির্যাতন ও নিপীড়ন কিংবা অবিচার কখনো সমর্থনযোগ্য নয়।১৯৭৫'সাল পরবর্তি সময়ে বিশেষ করে জিয়ার শাসনামল থেকে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে সমূলে উচ্ছেদ করার প্রক্রিয়া ও মুক্তিযুদ্ধের মুল্যবোধকে চিরতরে ধ্বংস করে দেয়ার প্রচেষ্টার কথা এখন দস্তুরমতো প্রমানিত ইতিহাস।তাই ২০০৪'সালের ২১'শে আগষ্টের বর্বরোচিত হামলা ও অমানবিক উপায়ে হত্যাকাণ্ডের বিচার যেমন সময়ের দাবী তেমনিষড়যন্ত্রকারীদের সত্যিকারের চেহারা উন্মোচন করাও পবিত্র দায়িত্ব।
বর্তমানেও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া,পত্রপত্রিকা,গনমাধ্যমে কিংবা ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলোতে প্রতিনিয়ত ধর্ষন,গুম কিংবা বিচ্ছিন্নভাবে হত্যাকাণ্ডের অথবা রাজনৈতিকভাবে বিরোধীদের উপর নির্যাতনের অভিযোগের খবর পরিবেশিত হচ্ছে।এসবক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির পরিকল্পিত প্রপাগান্ডার বিষয়টিও বর্তমান ক্ষমতাসীন দলকে ক্ষনে ক্ষনে বলতে দেখা যায়।তাছাড়াও কিছু কিছু অতি উৎসাহী তথাকথিত হাইব্রীড নামক দানবদের মাধ্যমে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে সম্পর্কিত ক্ষমতাসীন দলের বাইরে বিভিন্ন দলের কিছু বিরোধী নেতাদের কৌশলে রাজাকার জাতীয় শব্দ কিংবা ভিন্ন উপায়ে রাজনৈতিক চরিত্র হননের বিষয়টিও আলোচিত-সমালোচিত।এমতাবস্থায় মহান জনযুদ্ধের মূল্যবোধে তাড়িত হয়ে,সত্যিকারের ইতিহাস রচনা করে,একটি আদর্শ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে সরকার যেমন মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও ভাবধারায় গঠিত-অন্যদিকে দেশের বড় বিরোধী শক্তিও মুক্তিযুদ্ধের সাথে সম্পৃক্ত ও মূল্যবোধে তাড়িত হয়ে গঠিত হলে বাংলাদেশে সত্যিকারের সম্ভাবনাময় নবযুগের সূচনা হবে বলে অনেকের ধারনা।অবশ্য তা আদৌ ক্ষমতাসীন সরকার কর্তৃক করতে দেয়া হবে কিনা অনেককেই সংশয় বা সন্দেহ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
অবশেষে ২১'শে আগষ্টের প্রেতাত্মা আর যেনো মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে-সে ব্যাপারে জনস্বার্থে ব্যাপক গনসচেতনতা করনীয় কিংবা আবশ্যক নয় কি?
আমাদের স্মরণ রাখতেহবে-তখন বা এখন দেশ ও জাতি সকল অন্যায়,অবিচার ও পাশবিকতার অবসান চাই।
লাস ভেগাস, ইউএসএ
২১ শে আগষ্ট, ২০১৯