নুরল আমিন বিশেষ প্রতিনিধিঃ
টানা কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে তিস্তার পানি বেড়ে নীলফামারী জেলার ডিমলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ২ নং সলেডি স্প্যার বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ আশপাশের প্রায় সহস্রাধীক পরিবার পড়েছে ভাঙনের মুখে।
গতকাল ৩০ আগস্ট রাত ২ টায় ২ নং স্প্যার বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় সেখানে বসবাসরত পরিবারগুলো তাদের ঘরবাড়ি ও গবাদিপশু নিয়ে উঁচু স্থানে অবস্থান নিচ্ছে।
এ ছাড়া গত তিন দিনে সলেডি স্প্যার-২ এর উজানে ভেন্ডাবাড়ী এলাকায় কুটিপাড়ার প্রায় ১৫০টি পরিবার ও কয়েক শ একর ফসলি জমি,নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
প্লাবনে ক্ষতিগ্রস্তরা খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়ের হলদিবাড়ী এলাকার স্প্যার বাঁধের পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতেও ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে।
ডিমলা ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান জানান, দিবাগত রাত ২টায় ২ নং স্প্যার বাঁধটি ভেঙে যায়। ফলে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িগুলোসহ আশপাশের সব বাড়ি প্লাবনের শিকার হয়েছে। পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন বাড়ছে। এ অবস্থা থাকলে বাড়িগুলো বিলীন হয়ে যেতে পারে।
স্থানীয়রা জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ছয় দিন ধরে সরকারি বরাদ্দে বাঁধটিতে জিও ব্যাগ ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড,কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ফলে পানিতে তলিয়ে যাওয়া বাড়িগুলো ভেঙে পার্শ্ববর্তী উঁচু স্থানে যাচ্ছে।
ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত জলিল মিয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, চোখের সামনে নদীর স্রোতে আমার ঘরবাড়ি আর গরুগুলো ভাসিয়ে নিয়ে গেল। কিছুই আটকাতে পারলাম না। সবকিছুই শেষ হয়ে গেল।
ভিটামাটি আর ঘরবাড়ি হারিয়ে মনজিলা বেগম বলেন, আমার একটা ঘর ছাড়া আর কিছুই নিয়া আসতে পারি নাই। সব ভেসে গেল। আমারা কী খাব, কী পরব, পরিবার নিয়ে কই যাব, কিছুই জানি না।
নীলফামারী ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসফাউদদৌলা বলেন, গতকাল অনেক চেষ্টা করেও, শেষ রক্ষা হয়নি। বাকি বাঁধটুকু রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করছি। ঘটনা স্থলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকল কর্মকর্তা ঠিকাদার উপস্থিত রয়েছে, এবং পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
ডিমলা উপজেলা উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তবিবুল ইসলাম বলেন, স্পার বাঁধ ভেঙে আশ্রয়ণ প্রকল্প ও আশপাশের এলাকার,পরিবারগুলো প্লাবিত হয়েছে, তা জেনেছি। ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর মাঝে খাবার বিতরণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।