প্রিয় ভান্ডারিয়াবাসী,
আসসালামু আলাইকুম। সাম্প্রতিককালে আমাদের এই শান্তিপ্রিয় ভান্ডারিয়ায় ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক সহিংসতা সম্পর্কে আপনারা সকলেই কম বেশি অবগত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা’র সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়ন এবং আমাদের সকলের মুরব্বি শ্রদ্ধেয় জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি’র পরামর্শ ও নির্দেশনায় স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত আমরা এক প্রকার সুখে শান্তিতেই ছিলাম। ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ কিংবা মতপার্থক্য থাকলেও আমরা সামাজিকভাবে মিলেমিশেই বসবাস করে আসছিলাম। ছিলো না কোন সংঘাত, হানাহানি কিংবা মারামারি। টানা তিনবার আমাদের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলেও আমাদের কোন নেতা-কর্মীর দ্বারা ভান্ডারিয়ায় কখনো কেউ আক্রান্ত হয়েছে, এমন কোন নজির নেই।
কিন্তু গত ১৭ই এপ্রিল পবিত্র রমজান মাসে জাতীয় পার্টি-জেপির (মঞ্জু) ভান্ডারিয়া উপজেলা সাধারণ সম্পাদক রাজাকার পুত্র উজ্জ্বল তালুকদারের নেতৃত্বে ভান্ডারিয়ায় যে তান্ডব, আগুন সন্ত্রাস ও সহিংস ঘটনার নজির সৃষ্টি করা হয়েছে, শান্তিপ্রিয় ভান্ডারিয়াবাসী কখনো তা কল্পনাও করতে পারেনি। যার মধ্য দিয়ে এখানকার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহাবস্থানের পরিবেশকে নিমিষেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যাওয়া হলো। তারা আমাদের আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র ছবি ও ঘরবাড়ি ভাংচুর এবং মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি নিরীহ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের উপর ন্যাক্কারজনকভাবে বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে যেভাবে আহত করেছে তা ভান্ডারিয়া তথা দক্ষিণাঞ্চলের রাজনৈতিক ইতিহাসে কালো অধ্যায় হিসেবে লেখা থাকবে। আমাদের চৌকস আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এ ঘটনা নিয়ে কাজ করছে এবং তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
১৭ই এপ্রিলের সহিংসতার ঘটনা ওখানেই নিষ্পত্তি হওয়া কাম্য ছিল। কিন্ত আজ আবার দেখলাম সেদিনের সেই নাটকীয় ঘটনাকে উল্টোভাবে পুঁজি করে ঘটনার ৮ দিন পর আমার ছোট ভাই জননেত্রী শেখ হাসিনা’র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে বারবার নির্বাচিত ভান্ডারিয়া উপজেলার ৩নং তেলিখালী ইউনিয়নের স্বর্ণপদক প্রাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, তেলিখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ শামসুদ্দিন হাওলাদার, তেলিখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ হুমায়ুন কবির, ভান্ডারিয়া উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি এনামুল কবির টিপু তালুকদার, সিনিয়র সহ-সভাপতি
মোঃ গিয়াস উদ্দিন লিটন পেশকার, সাংগঠনিক সম্পাদক চপল হাওলাদার, দপ্তর সম্পাদক এইচ এম মিরাজ, অর্থ সম্পাদক মোঃ রুবেল, উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রিচান সিকদার, যুগ্ন আহবায়ক আল-আমিন সরদার, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ইসতিয়াক সজল, সাধারণ সম্পাদক সুদেব দাসসহ বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৩২ জন নেতাকর্মীকে আসামী করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ভান্ডারিয়ার থানায় একটি ষড়যন্ত্রমূলক নাটকীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দয়া করে আপনারাই বলুন কারা আমাদের এই প্রিয় ভান্ডারিয়ার দীর্ঘদিনের লালিত শান্তি বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে? জাতীয় নির্বাচনের আগ মুহূর্তে যখন আমাদের দেশ নিয়ে বিভিন্ন দেশী-বিদেশী চক্র নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, ঠিক তখনই কারা আমাদের কয়েক দশকের ভালোবাসার সম্পর্কগুলোকে একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দিকে ঠেলে দিচ্ছে..? এটাও কী সেই রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রেরই অংশ..?
আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনা’র মনোনীত উপজেলা চেয়ারম্যান হলেও আপনাদের স্নেহধন্য মিরাজ। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি আমার সুখ-দুঃখ আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে। আপনাদের স্নেহ, ভালোবাসা, মতামত ও পরামর্শ নিয়েই আমার পথচলা। তাই বর্তমান ভান্ডারিয়ার এই উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আমি আপনাদের পরামর্শ চাই, মতামত চাই। আমি শান্তি চাই। আপনাদের সকলকে সাথে নিয়ে ভান্ডারিয়ায় আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার সকল উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনারাই ভান্ডারিয়ার সকল শক্তি ও ক্ষমতার উৎস। আপনারা পাশে থাকলে কোন অপশক্তি নীল নকশা করে ভান্ডারিয়ার এই অগ্রযাত্রা কখনো ম্লান করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। মহান রাব্বুল আলামীনের দয়া এবং আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসাই আমার চলার পথের একমাত্র পাথেয়।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
Leave a Reply