ভোলা প্রতিনিধিঃ
ভোলা সদর হাসপাতালের স্টাফ বাবুর উপর হামলা করে হাত-পা ভেঙ্গে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। হামলায় রক্তাক্ত আহত বাবুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার (১৬ জুন) সকালে সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মধ্য চরপোটকা গ্রামের জাহাঙ্গীর মেলেটারীর মার্কেটের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সন্ত্রাসী রাকিবকে আটক করেছে পুলিশ।
মামলা ও আহত সূত্রে জানা গেছে, ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মধ্য চরপোটকা এলাকার বাসিন্দা ভোলা সদর হাসপাতালের স্টাফ আমির হোসেন বাবুর ভাই মোঃ রাকিবুল ইসলামের সাথে টাকা লেনদেন নিয়ে স্থানীয় জাকির হোসেন, মোঃ পলাশ ও মোঃ জাফরের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীরা রাকিবুলকে একাধিবার মারধর করে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে শালিসী মিমাংসার চেষ্টা করলে সন্ত্রাসী জাকির হোসেন, মোঃ পলাশ ও মোঃ জাফর শালিসকে তোয়াক্কা না করে বাবু ও রাকিবুলকে হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দেখায়। সন্ত্রাসী জাফর, পলাশ, জাকির ধাড়ালো অস্ত্র, রড নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে রাকিবুলকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এই ঘটনায় রাকিবুল বাদী হয়ে ভোলা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৯৯/২৩ইং। ওই মামলায় পুলিশ জাফরকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করলে বিজ্ঞ আদালতে জাফরকে জেলহাজতে পাঠায়। গত রোজার ঈদের কিছুদিন আগে জাফর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মামলার বাদী রাকিবুল ইসলাম ও তার ভাই সদর হাসপাতালে স্টাফ আমির হোসেন বাবুকে মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশসহ বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধামকি দেয়। জাফর বাহিনীর ভয়ে বাবু ও রাকিবুলের পরিবার আতঙ্কে মধ্যে দিন কাটাতে থাকে। বিষয়টি বাবু ও রাকিবুল স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অবগত করেন। গতকাল শুক্রবার (১৬ জুন) আমির হোসেন বাবু তার স্ত্রীকে শ্বশুর বাড়ির পাঠানোর জন্য রিকশা আনতে তার বাড়ির কাছে জাহাঙ্গীর মেলেটারীর মার্কেটের সামনে যায়। এসময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে উৎপেতে থাকা মোঃ রিপন, জাকির হোসেন, মোঃ পলাশ, মোঃ কবির হোসেন, মোঃ রাকিব, মোঃ জাফরসহ আরও ৫/৬জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র, রড নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমির হোসেন বাবুর উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রাসী রিপন তার হাতে থাকা রড দিয়ে বাবুর পায়ে আঘাত করে। জাকির রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে বাবুর মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে বাবু হাত দিয়ে আঘাত প্রতিরোধ করে। কবির রড দিয়ে বাবুর মাথায় আঘাত করে। অন্যান্য সন্ত্রাসীরা বাবুকে এলোপথারী কিল, ঘুষি, লাথি ও মারধর করে। সন্ত্রাসীদের হামলায় আমির হোসেন বাবুর হাত-পা ভেঙ্গে গেছে এবং মাথা, চোখের কোনে ও শরীরের রক্তাক্ত জখম হয়েছে। এসময় সন্ত্রাসীরা বাবুর কাছে থাকা নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। বাবুর আত্মচিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসলে সন্ত্রাসীরা বাবুকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে বাবুকে রক্তাক্ত আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভোলা থানায় খবর দিলে এসআই আকবরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টীম ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ত্রাসী রাকিবকে আটক করে নিয়ে আসে। এ ব্যাপারে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সন্ত্রাসী হামলায় আহত সদর হাসপাতালের স্টাফ আমির হোসেন বাবু বলেন, সন্ত্রাসীরা আমার ভাইকে টাকা লেনদেনের বিষয় নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করেছে। আমার ভাই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দিয়েছে। ওই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমাদেরকে প্রাণনাশসহ বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। শুক্রবার সকালে আমি রিকশা আনতে জাহাঙ্গীর মেলেটারীর দোকানে সামনে গেলে সন্ত্রাসীরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে আমার হাত-পা ভেঙ্গে গেছে এবং আমার শরীরের বিভিন্ন অংশ রক্তাক্ত জখম হয়েছে। আমি এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোঃ রিপন গংদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে কাউকে পাওয়া যায়নি।
ভোলা সদর মডেল থানার ওসি মোঃ শাহীন ফকির বলেন, ভোলা সদর হাসপাতালের স্টাফ আমির হোসেন বাবুর উপর হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টীম পাঠিয়েছি। হামলাকারী রাকিবকে পুলিশ আটক করে নিয়ে এসেছে। এ ব্যাপারে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ভোলা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।