মাদারীপুরে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যের দ্বারা হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার
আরিফুর রহমান,মাদারীপুরঃ
মাদারীপুরে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যের দ্বারা হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে দুটি পরিবার। শনিবার বিকেলে সদর উপজেলার দক্ষিণ মহিষেরচর ৯নং ওয়ার্ডের আচমত আলী খান সেতু সড়কের পশ্চিম পাশে অবস্থিত একটি মসজিদ প্রাঙ্গনে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেছেন মোঃ রাজ্জাক মাতুব্বর ও মোঃ মজিবর রহমান মাতুব্বর।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, মহিষেরচর এলাকার ইছাহাক মাতুব্বর দীর্ঘদিন যাবৎ আমার রান্না ঘরের পাশে ৮/১০ বছর যাবৎ একটি খোলা পায়খানা ব্যবহার করে আসিতেছে। যার দূর্গন্ধে আমরা অতিষ্ট ও নির্যাতিত। এর ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে এবং আমাদের বসত বাড়ীতে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আমরা তাকে বহুবার খোলা পায়খানা মেরামত ও সংস্কারের কথা বলার পরেও সে আমাদের কোন কথাই আমলে নেয়নি। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বিষয়টি অবহিত করলে তারা তাকে পায়খানাটি মেরামত ও সংস্কার করার জন্য বললেও তা শোনেনি। স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বলার পর, সে ৯নং ওয়ার্ড মেম্বারকে দিয়ে নোটিশ প্রদান করেন, কাঁচা পায়খানাটি ভেঙ্গে ফেলার জন্য। কিন্তু তার পরও সে বিষয়টি আমলে নেননি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ইছাহাক মাতুব্বরের পরিত্যাক্ত একটি টিনের ছাপরা আমাদের রেকর্ডীয় সম্পত্তির মধ্যে অবস্থিত। সেখানে দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে জোরপূর্বক ব্যবহার করিয়া আসিতেছে। আমরা বা স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিগণ তাহাকে ঘরটি সরিয়ে নিতে বললেও সে কোন কর্ণপাত করেননি। এছাহাক মাতুব্বর গত মাসের ০৯ তারিখ রাত আনুমানি ২ টায় আঃ রাজ্জাক মাতুব্বর গংদের ভূমিতে অবৈধভাবে ভেকু দ্বারা মাটি কাটিয়া আমাদের ফসলী সম্পত্তিতে জবর দখলের অপচেষ্টা করে। এই সময় আমরা ভেকুর শব্দ পাইয়া আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে চলিয়া আসে এবং বলে যে, এইটা যদি তোমার নিজস্ব জমি হইতো, তাহলে তুমি তো রাতের অন্ধকারে খনন না করে দিনের বেলাতেও খনন করিতে পারতা। শুধু জমি খনন করেই ক্ষান্ত হননি। এরপরে আমাদের জমিতে লাগনো কলাগাছ তথাকথিত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এছাহাক মাতুব্বর এবং তার বোন রাজিয়া ও সুফিয়া উভয় মিলে দা-বটি দ্বারা আমাদের সমস্ত গাছ কর্তন করিয়া ফেলে। ইহা ব্যতিতেও আমাদের উক্ত জমিতে নির্মাণকৃত একটি ছাপরা ঘর ছিল। তার বেড়া খুলে ফেলে এবং দা দিয়া খুটি কাটিয়া ফেলে, এতে আমরা বাঁধা দিতে গেলে চলতি মাসের ৩ তারিখে একটি জি.আর মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৮৯/২০২১ এবং এই মামলা পাকা পোক্ত করার জন্য ইছাহাক মাতুব্বরের মা বাদী রেনু বেগম ও তার বোন আয়শা আক্তার অসুস্থতার ভান করিয়া মাদারীপুর সদর হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধার কোঠায় ভর্তি হন। প্রকাশ থাকে যে, মৃত নুর মোহাম্মদ মাতুব্বরের পরিবারেবর্গ নিজেদেরকে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্য বলিয়া দাবী করিয়া বিভিন্ন তালবাহানা ও কলাকৌশলের মাধ্যমে তিনি মোঃ মজিবুর রহমান মাতুব্বর রান্না ঘরের নিকট একটি খোলা কাঁচা পায়খানা ও একটি পরিত্যাক্ত ছাপরা ঘর দেখিয়ে সরকার এবং বিভিন্ন বিত্তশালী লোকদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেন। এই ফায়দা বহাল রাখার জন্য তিনি কাঁচা পায়খানা ও ছাপরা ঘরটি সরাননি। বর্তমানে ইছাহাক মাতুব্বর যে বিল্ডিংটি নির্মাণ করিয়া বসবাস করিয়া আসিতেছেন তাহা তাহার একক মালিকানা স্বত্ব নয়। এই সম্পত্তিতে আরো ৮ জনের মালিকানা স্বত্ব রহিয়াছে। যাহা সে মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেটকে অপব্যবহার করে জবর দখল করিয়া আসিতেছেন। অন্যান্য ওয়ারিশগণ এই সম্পত্তির মালিকানা দাবী করিতে গেলে তার মা বোনদের দ্বারা মিথ্যা নির্যাতনের মামলা-হামলা, হয়রানিসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এই সমস্ত অপকর্মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তার সাথে আমাদের বিরোধ সৃষ্টি হয়।
মোঃ রাজ্জাক মাতুব্বর ও মোঃ মজিবর রহমান মাতুব্বর বলেন, আমাদের নামে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ মিডিয়ায় প্রচারিত মিথ্যা সংবাদগুলো প্রত্যাহারের জোর দাবী জানাই এবং একই সাথে তার এই অপকর্মের জন্য আমরা তীব্র নিন্দা জানাই এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত সংবাদ মাধ্যমকে এর সত্যতা ও ন্যায় অন্যায়কে সঠিক যাচাই বাচাই করার জন্য অনুরোধ করছি। যাতে করে অদূর ভবিষ্যতে আর কোন মুক্তিযোদ্ধার পরিবার মুক্তিযুদ্ধ সার্টিফিকেটকে ঢাল স্বরূপ ব্যবহার করে সমাজে অন্যায় অত্যাচার ও অবিচার জুুলুম ও নির্যাতন করতে না পারে।
আরিফুর রহমান,মাদারীপুরঃ
২৭-২-২০২১
০১৯৩৬৩১৬২০৫