স্টাফ রিপোর্টার ॥ নগরীর কাশিপুরের দারসুল কুরআন একাডিমির পরিচালক মুবিনুল ইসলামকে পরস্ত্রী সহ আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেছে স্বামী ও স্থাণীয়রা। পরে তাদের এয়াপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গতকাল শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকার বাসিন্দা হেপি টাইলসের মালিক মোঃ খোকন একজন কোটিপতি। কালিবাড়ি রোড শীতলাখোলা ট্রাফিক অফিসের পার্শে আট তলা ভবনের মালিকও তিনি। স্ত্রীর সাথে দীর্ঘদিনের পরকিয়া সম্পর্ক চলে আসছে কাশিপুরের দারসুল কুরআন একাডিমির পরিচালক মুমিনুল ইসলামের সাথে। এ নিয়ে বিগত দিনে খোকনের সাথে তার স্ত্রীর অনেক বাকবিতন্ডা হয়। এর পরেও খোকনের স্ত্রী মুমিনুলের সাথে পরকিয়া সর্ম্পক আরো গভির হয়। ঘটানার দিন গতকাল খোকনের স্ত্রী বাসা থেকে মুবিনুলের জন্য মাংশ, পোলাও রান্না করে নিয়ে আসে। এসময় খোকনের সন্দেহ হলে স্ত্রী পিছু নেয়। পরে খোকনের স্ত্রী মুবিনুলের সোবার কক্ষে প্রবেশ করতে দেখে বাহির থেকে আটকিয়ে স্ত্রীর আত্মীয় স্বজদের খবর দেয়।
পরে সবাই এসে মোমেনুল ও তার স্ত্রীকে এক কক্ষ থেকে বের করে। খবর পেয়ে এয়ারপোর্ট থানার কয়েক জন এস আই ও অফিসার ইনচার্জ লোকমান হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিথ হয়। পরে তাদের সবাইকে থানায় নিয়ে যায়। এ বিষয়ে খোকন বলেন, তার স্ত্রীর সাথে দীর্ঘ দিন যাবত মুবিনুলের সম্পর্ক চলে আসছে। আমার স্ত্রীকে এ পথ থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক চেষ্টা করি।
অভিযুক্ত এ নারীর তিনটি সন্তান রয়েছেন তারা সবাই হাফেজ। এমনকি নিজেদের প্রতিষ্টিত কয়েকটি মাদ্রাসাও রয়েছে। অভিযুক্ত প্রেমিক ২৮ বছর বয়সী তিনিও একজন মুফতি। তার মাদ্রাসায় রয়েছেন ৩০০+ শিক্ষার্থী। আর যে হতভাগার স্ত্রী পরক্রিয়ায় লিপ্ত তিনিও আলেম সমাজে একজন পরিচিত মুখ। বরিশাল তাবলীগ জামাতের সমান্মায়ক। স্ত্রীর পরক্রিয়া নিজ হাতে ধরেছেন তিনি। পরক্রিয়া প্রেমিকের সহযোগিতায় রয়েছে অনেকে। তার মধ্যে মুখ্য ভূমিকায় রয়েছে দুইজন। একজনার নাম লিপ্টন অন্যজনের নাম ওসমান গনি। লিপ্টনের বাসা বিএম কলেজ ইন্দ্র বাংলার সামনে কালমেঘা ল'জ বাড়ির ভিতরে বসবাস করেন তিনি। অন্যজন ওসমান গনির বাড়ী পাথরঘাটা তিনি মাদ্রাসা সুপারের কথিত ভাতিজা পরিচয় বসবাস করেন সেখানে।
ঘটনার দিন মাদ্রাসা সুপার ও পরক্রিয়া প্রেমিক মহিলাকে যখন তার স্বামী ও এলাকাবাসী আটক করে তখন আলাদিনের চেরাগের মতো মাদ্রাসা সুপারকে বাঁচাতে ছুটে আসেন লিপ্টন ও ওসমান গনি। সংবাদকর্মী গন সেখানে উপস্থিত হলে মাদ্রাসার সুপার ও মহিলার সাক্ষাৎকার নিতে চাইলে এই দুজন মিলে মিডিয়াকর্মীদের বাধা প্রদান করেন। যার একাধিক ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে সংবাদ কর্মীদের হাতে।
মহিলার স্বামী খোকন বলেন এ নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক জগড়াও হয়েছে। আমাদের সন্তানেরা সবাই বড় হয়েছে। তাই সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন হবো দেখে এতদিন আমি কোন মামলা করিনাই। স্থাণীয় সূত্রে জানাগেছে, এর আগেও মুবিনুল অপরএকটি মেয়েকে ধর্ষন করে। সে ঘটনায় ওই মেয়ে তার বিরুদ্ধে একটি ধর্ষন মামলা করে। সে মামলায় মুবিনুল প্রয় তিনমাস জেলে ছিলেন।
এমনকি মুবিনুল তিন বছর আগে মাদ্রাসার এক ছাত্রকে পিটিয়ে একটি হাত ভেঙ্গে দেয় বলেও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্থাণীয় একধিক সূত্র থেকে জানাগেছে মাদ্রসার পরিচালক মুবিনুলের এ সকল অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে ওই মাদ্রাসার ভবন মালিকও জরিত রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে। স্থাণীয় বাসিন্দা সজল জানান, এই মাদ্রাসার পরিচালকের নামে এর আগেও অনেক অভিযোগ শুনেছি। আমরা মাদ্রাসার ভবন মালিক শিবলিকে অন্য পরিচালক দিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা করতে বলেছি। কিন্তু তিনি ক্ষমতা দেখিয়ে মুবিনুলকে দিয়েই মাদ্রাসা পরিচালনা করান। তাই আমরা এ বিষয়ে তাকে আর কিছু বলি নাই।
খোকনের শাশুরী বলেন, আমার মেয়েকে অনেক বুঝিয়েছি মুবিনুলের সাথে সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে। কিন্তু সে আমাদের কোন কথা শোনেনা।
এ বিষয়ে এয়াপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ লোকমান হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনা স্থল থেকে মাদ্রাসার পরিচালক মুবিনুল ও খোকনের স্ত্রীসহ উপস্থিথ তাদের আত্মীয়-স্বজনদের থানায় নিয়ে আসি। কিন্তু খোকন বাদী হয়ে মামলা করতে রাজি না হওয়ায় লিখিত রেখে খোকনের জিম্মায় তার স্ত্রীকে দিয়ে দেই এবং মুবিনুল খোকনের ছেলের বন্ধু হওয়ায় তার জিম্মায় মোমিনুলকে দেই।