বায়জিদ হোসেন, মোংলাঃ
কিছুদিন আগেও মুখে মাস্ক ব্যবহারের আধিক্য ছিল। এখন মাস্ক লাগানো মানুষ খুব একটা মিলছে না। সামাজিক দূরত্ব মানারও কোন বালাই নেই। পরিস্থিতি জানান দিচ্ছে করোনা নিয়ে মোংলায় জনমন এখন ভয়শূণ্য। অথচ বৃহস্পতিবারও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ১৮ জনে ৯ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। গত দুই বছরে করোনা আক্রান্ত হয়ে এখানে প্রায় ৭০ জন মারাও গেছেন। কিন্তু তারপরও করোনা নিয়ে সকলেই ভ্রুক্ষেপহীন।
এ নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জীবিতেষ বিশ্বাস। তিনি বলেন, দুই দফায় করোনার ভয়াবহতা দেখার পরও মানুষ স্বাস্থ্য বিধি মানার ক্ষেত্রে সচেতন হচ্ছে না। টিকা নিয়ে কিছু মানুষ স্বাস্থ্য বিধি মানার ক্ষেত্রে বেপরোয়া ভাব দেখাচ্ছেন। অথচ মোংলায় এ পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন এক লাখ ১৭ হাজার মানুষ। বাকী রয়ে গেছে আরও ১৫ হাজার মানুষ। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহে মোংলায় ৬১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৫৪ ভাগ। এ পর্যন্ত এখানে মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯৮০ জনের।
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, সংক্রমণ উদ্বেগজনক থাকার পরও জীবিকার কথা চিন্তা করে সরকার গত ১৯ আগষ্ট থেকে বিধি নিষেধ শিথিল করে। এরপর স্বাস্থ্য বিধি মানাতে প্রশাসনের কঠোর হওয়ার কথা। কিন্তু প্রশাসনের কড়াকড়ি আগের মতো চোখে পড়ছেনা। শাস্তির ভয় না থাকায় মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য বিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা বেড়েছে। মাস্ক ছাড়াই সামাজিক দূরত্ব না মেনে ঘরের বাইরে আসছে মানুষ।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, মোংলা পৌর শহরের মামার ঘাট, চৌধুরী মোড়, কলেজ মোড়, হাসপাতা রোড, উপজলো রোড, শেখ আব্দুল হাই সড়ক ও শাহাদাৎ মোড় এলাকাসহ বাজার এলাকায় মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা করছে মানুষ। দোকানপাটেও স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছেনা।
পথচারী সুকুমার রায়, মফিজুল ইসলাম ও ইব্রাহিম হোসেন বলেন, এখন করোনা কমে গেছে। আক্রান্ত হওয়ার ভয় নেই। তাই মাস্ক ছাড়া বের হয়েছি। আবার অনেকে বলেন, ভুলে মাস্ক বাসায় ফেলে এসেছি।
মার্কেট করতে আসা নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, বাচ্চাদের স্কুল পোশাক ও জুতা কিনতে এসেছি। এখনতো করোনা নেই, তাই আগের মত ভয়ও নেই এনিয়ে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার বলেন, দুই একদিনের মধ্যে অভিযানে নামবো। আর সে সময় কারো কোন ধরণের অজুহাত মানা হবেনা।