মোংলা প্রতিনিধি.
মোংলায় মাদক মামলার স্বাক্ষীদেরকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছেন আসামীর পরিবারের সদস্যরা। এতে আহতদের মধ্যে দুইজনকে গুরুতর অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীদের দেয়া হয়েছে প্রাথমিক চিকিৎসা। এ ঘটনায় আহতের পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আহতের পরিবার ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনিরঘোলের বটতলা বাজারের বাসিন্দা নুর আলী শেখের ছেলে রাজ্জাক শেখকে মাসখানেক আগে ফেলুরখন্ড এলাকা থেকে ২৫পিচ ইয়াবাসহ আটক করে পুলিশ। ওই সময় উপস্থিল লোকজনকে রাজ্জাকের বিরুদ্ধে মাদক মামলায় স্বাক্ষী করেন পুলিশ। সেই মাদক মামলার স্বাক্ষীদের মধ্যে ইদ্রিস শেখ ও ইস্রাফিল শেখ রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জয়মনিরঘোলের বটতলা বাজারে চিংড়ির পোনা কিনতে গেলে আসামী রাজ্জাকের পরিবার তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় রাজ্জাকের পিতা নুর আলী শেখ, মা রহিমন বেগম, ভাই সজিব, শাকিল ও দুলা ভাই সোহেল দা, রড ও লাঠিসোঠা নিয়ে হামলে পড়ে ইদ্রিসকে কুপিয়ে ও ইস্রাফিলকে পিটিয়ে জখম করেন। তখন সেখানে উপস্থিত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেনের বড় ভাই মোসলেম গাজী মারামারি ঠিকাতে/ছাড়াতে গেলে তাকেও কুপিয়ে জখম করেন হামলাকারীরা। পরে ঘটনাস্থল থেকে ইদ্রিস ও মোসলেমকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ওই সময় আরো আহত হন ইদ্রিস ও ইস্রাফিলের সাথে থাকা অপর পোনা ব্যবসায়ী সাইফুল ও মিরাজ। হামলায় গুরুতর আহত ইদ্রিস ও মোসলেম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। বাকীরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ইদ্রিস ও মোসলেমের মাথায় দায়ের কোপে মারাত্মক জখম হয়েছে। এ ঘটনায় ইদ্রিসের বোন মিনারা বেগম বাদী হয়ে রবিবার দুপুরে থানায় হামলাকারী মাদক মামলার আসামীর পরিবারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। আহত ইদ্রিস ও ইস্রাফিল বলেন, আমাদের আলাদা আলাদা চিংড়ি ঘের রয়েছে। ঘেরের জন্য পোনা কিনতে গেলে নুর আলী শেখসহ তার পরিবারের অন্যান্য লোকজন মিলে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এর মুল কারণ হলো নুর আলী শেখের বড় ছেলে রাজ্জাককে মাসখানেক আগে ইয়াবাসহ আটক করেছিলেন পুলিশ। ওই সময় উপস্থিত মতে পুলিশ আমাদেরকে ওই মাদক মামলায় স্বাক্ষী করেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে আসামীর পরিবার আমাদেরকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করেছেন। আর আসামী রাজ্জাক ওই মাদকের মামলায় বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।
স্থানীয়রা বলেন, নুর আলী শেখ ও রহিমন বেগমের পরিবারের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সুন্দরবনের হরিণ শিকার ও মাদকসহ নানা ধরণের অপরাধ কর্মকান্ডের একাধিক মামলা এবং অভিযোগ রয়েছে। বনবিভাগের মামলা ও অপরাধ তালিকায় (চোরা হরিণ শিকারী) নুর আলী-রহিমন পরিবারের সদস্যদের নামও (আসামী) রয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী। মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি, অভিযোগের তদন্তও চলছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।