বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
আসন্ন সনাতনধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় শারদীয় দুর্গোৎসব। তাই এবছর মোংলায় ৩৭টি মন্দির-মন্ডপে চলছে পূজার আনুষ্ঠানিকতার প্রস্তুতি। এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে প্রতিমা বানানো, রংয়ের ও সাজসজ্জার কাজ। শেষ মুহুর্তে চলছে পুজাস্থলের মন্দির-মন্ডপের তোরণ, মঞ্চের আলোকসজ্জা ও দৃষ্টিনন্দন সাজসজ্জার কাজ। তবে এবার ব্যাপক জাঁকজমক লক্ষ্য করা গেছে পৌর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের স্বর্ণ পট্টি অর্থাৎ জুয়েলার্স ব্যবসায়ীদের আয়োজনের দুর্গাপূজার প্রতিমা ও সাজসজ্জায়। এরপর রয়েছে বটতলা কেন্দ্রীয় মন্দির, দিগরাজ বাজার মন্দির ও বুড়িরডাঙ্গা মন্দির। তবে গত কয়েক বছর ধরে জাঁকজমকপূর্ণতায় দৃষ্টিনন্দন আয়োজনের কারণে সবচেয়ে লোকসমাগম বেশি স্বর্ণ পট্টির মন্দির।
স্বর্ণ পট্টি পুজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও তন্ময় জুয়েলার্সের মালিক তরুন চন্দ বলেন, আমরা দেখেছি মোংলায় গতানুগতিকভাবে বিভিন্ন মন্দিরে দুর্গাপূজার আয়োজন হতো, যেটি সাধারণ ও সাদামাটা। তাই আমরা স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা মুলত দুর্গাপূজা আকর্ষণীয়ভাবে করার উদ্যোগ নিই। এবার নিয়ে তৃতীয়বারের মত আমাদের আয়োজন। প্রতিমা থেকে শুরু করে সাজসজ্জা, লাইটিং, গেইট, তোরণ ও মঞ্চসহ সবকিছুতেই আমাদের দৃষ্টিনন্দন আয়োজন রয়েছে। প্রতিবছর আমাদের এখানেই সবচেয়ে বেশি লোকসমাগম হয়ে থাকে। গতবার বাগেরহাট জেলায় আমাদের মন্দির মুল্যায়নে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে। আর শিকদার বাড়ীরটা হয়েছিলো প্রথম। এবার শিকদার বাড়ীর বড় আয়োজন নাই, তাই এবার আমাদেরটাই প্রথম হবে বলে আশা করছি। এবারও বাহিরের অত্যাধুনিক সরঞ্জামাদি সাজানো হচ্ছে, এতে আমাদের সম্প্রাদায়ের লোকজন অধিক আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন। পৌর শহরসহ উপজেলার ৩৭ জায়গায় এবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুর্গাপূজা। তাই পূজাকে ঘিরে সকল ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের। ইতিমধ্যে পুজা উপলক্ষে প্রস্ততি সভায় মন্দিরগুলোতে দেয়া হয়েছে অনুদানও। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কমলেশ মজুমদার বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে পুজা উদযাপনে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় সাংসদ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহারের উপস্থিতিতে মন্দিরগুলোতে সরকারী অনুদান দেয়া হয়েছে। পুজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দদের সাথে বৈঠক করে তাদেরকে করোনা বিধি নিষেধ মানাসহ নানা দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। প্রস্তুতি সভায় সকলকে সর্তক করে দিয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, পুজাস্থলে কেউ মাতলামী করে পরিবেশ নষ্ট এবং ইভটিজিং করলে তাদেরকে কোনভাবেই ছাড় দেয়া হবেনা। সকলে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে পুজা উদযাপন করবেন, কোথাও কোন সমস্যা মনে হলে আমাকে কিংবা ট্রিপল নাইনে কল করবেন। তিনি আরো বলেন, পুজায় নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদেরকেই বজায় রাখতে হবে, পুলিশ তো আছেই। প্রতিটি মন্দির-মন্ডপ এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক ও আনসার সদস্যের পাশাপাশি থাকবে পুলিশের টহল টিম। ঝুঁকিপূর্ণ ৪টি মন্দিরে থাকবে প্রশাসনের বাড়তি নজরদারী।