মোংলায় সবোর্চ্চ আক্রান্তের রেকর্ড, পরিস্থিতি মোকাবেলায় রবিবার থেকে কঠোর বিধি নিষেধ
বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
মোংলায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। তাই এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৩০ মে থেকে ৮দিনের কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। কারণ গত দুইদিনে করোনা পরীক্ষায় যে রিপোর্ট এসেছে তা অত্যন্ত ভয়ানক। গত ২৮ মে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ জন করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিলে তাদের মধ্যে ১৪ জনেরই রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। এছাড়া ২৯ মে নমুনা দেয়া ৪২ জনের মধ্যে পজেটিভ হয়েছে ৩১ জনের। গত দুই সপ্তাহ ধরে সনাক্তের হার ক্রমেই বাড়ছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে শনিবার (২৯ মে) ছিল সবোর্চ্চ রেকর্ড, যেখানে ৪২ জনের মধ্যে ৩১ জনই সনাক্ত হয়েছেন। যা শতকরা আক্রান্তের হার ৭৩.৮০ ভাগ। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, র্যাপিড অ্যান্টিজেন্ট টেস্টের মাধ্যমে গত এক মাস নয় দিনে ১৮২ জন করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন। এরমধ্যে ৮৯ জন করোনা সনাক্ত হয়েছেন। গত ২০ এপ্রিল থেকে মোংলায় র্যাপিড অ্যান্টিজেন্ট টেস্ট শুরু হয়। র্যাপিড অ্যান্টিজেন্ট টেস্টের মাধ্যমে মাত্র আধা ঘন্টার মধ্যে এর রিপোর্ট দেয়া হয়। এর আগে নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হতো। এতে সময় বেশি লাগতো। এর নতুন এ পদ্ধতিতে নমুনা দেয়ার পর আধা ঘন্টার মধ্যে রোগী তার রিপোর্ট জানতে পারছেন। তিনি বলেন, এই মুহুর্তে কঠোর লকলাউনের কোন বিকল্প নেই। কারণ গত সপ্তাহেও করোনা আক্রান্ত হয়ে এখানে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া এখানে সরকারের দেয়া বিধি নিষেধ মানছেন না কেউ। যার কারণে সংক্রমণের হার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। উপজেলা নিবার্হী অফিসার কমলেশ মজুমদার বলেন, সম্প্রতি করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি ও ক্রমান্বয়ে করোনা পরিস্থিতি খুব খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতিতে কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ ছাড়া সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব নয়। সেজন্য ৩০ মে রবিবার থেকে পরবর্তী ৮ দিন কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিধি নিষেধগুলো হলো, বাধ্যতামুলক মাস্কের ব্যবহার, মাস্ক বিহীন কেউকে পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সাথে সাথে আইনানুগ শাস্তির ব্যবস্থা করা। পৌর শহরে প্রবেশ সংকুচিত ও সীমিত থাকবে, জরুরী পরিবহণ ব্যতিত কোন যানবাহন ঢুকবে না, বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে। ওষুধ ও জরুরী কৃষিপণ্য ব্যতিত সকল দোকানপাট বন্ধ থাকবে। কাঁচা ও মুদি বাজার, মাংস, মাছ ও ফলের দোকান প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। অন্য এলাকা থেকে বিভিন্ন নৌযানে আসা কেউ পৌর এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেনা। নদী পারাপারের ক্ষেত্রে সবোর্চ্চ ১৬ জনকে মাস্ক পরিহিত অবস্থায় পারাপার করতে হবে। এ সকল বিধি নিষেধ বাস্তবায়নে উপজেলা নিবার্হী অফিসার কমলেশ মজুমদার স্থানীয় সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন।