বায়জিদ হোসেন, মোংলাঃ
মোংলা বাংলাদেশের ২য় সামুদ্রিক বন্দর।কর্মের তাদিগে দেশের প্রায় সকল জেলার লোকই কমবেশি এ এলাকায় বসবাস করে। সরকারী চাকরি, বেসরকারি চাকরি,জাহাজে চাকরি, এনজিও, ব্যাবসা বানিজ্য সহ কোনো না কোন ভাবে বহিরাগরা বসবাস করেন এই বন্দরে।স্হানীয় ও বহিরাগত মিলে এ বন্দরে প্রায় ২ লক্ষ লোকের বসবাস।এ বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারী হাসপাতালের সংখ্যা মাত্র একটি।তারপর ও হাসপাতালে নেই সকল সুযোগ সুবিধা। সবচেয়ে বেশী দুর্ভোগের স্বীকার হয় প্রশুতি মায়েরা।নেই তাদের জন্য কোন সু ব্যাবস্হা।হাসপাতালে নেই কোন গাইনী ডাক্তার।বাচ্চা প্রসবের ক্ষেত্র নরমাল প্রসব ছাড়া সিজারের প্রয়োজন হলেই নিয়ে যেতে হয় জেলা শহরে বা প্রাইভেট কোন ক্লিনিকে।এর ফলে সবচেয়ে বেশী দুর্ভোগের স্বীকার হয় নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের প্রসুতি মা ও তাদের পরিবার।প্রাইভেট ক্লিনিকের খরচ যোগাতে মানুষের দ্বারস্ত হয়ে হয় তাদের।খরচের কারনে মিত্যুর কোলে ও ডলে পরে অনেকে প্রসুতি মা ও তার সন্তান।ধ্বংস হয়ে যায় অনেক পরিবারের স্বপ্ম।হারিয়ে যায় অনেক সন্তানের মা,কারো মেয়ে, কারো স্ত্রী। শেষ হয়ে যায় অনেক পরিবার ভবিষ্যত। ভূক্তভোগী ইউনুছ আলী নামে এক ব্যাক্তি বলেন আমি ছোটখাটো প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরী করি। আমার স্ত্রী বাচ্চা কনসেপ্ট করার সাথে সাথে তাকে নিয়ে আমি মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারের কাছে যাই।ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আমি আমার স্ত্রীর শারীরিক যত্ন নেই।ডাক্তারের প্রতিটি কথাই আমি অক্ষরে অক্ষরে পালন করি।দীর্ঘ নয় মাস পর যখন আমার স্ত্রীর সন্তান প্রসবের সময় ঘনিয়ে আসে। তখন তাকে নিয়ে যাই মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারের কাছে।আর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পরই আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।ডাক্তাররা সকল পরিক্ষা নিরিক্ষা করার পর যখন আমাকে বলেন যে তাদের ঐ খানে সিজার করার কোন ব্যাবস্হা নেই।আর আমার স্ত্রীর সিজার ছাড়া সাধারণ ভাবে বাচ্চা প্রসব করানো কোন অবস্থাতেই সম্ভব নয়।তারা আমাকে বলে আপনি খুব দ্রুত কোন প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করান।তার শারীরিক অবস্থা ও বাচ্চার যে পজিশন তাতে করে নরমাল বাচ্চা প্রসব সম্ভব নয়।তিনি বলেন তখন আমার পক্ষে কোন অবস্থায় প্রাইভেট ক্লিনিকে রেখে আমার বৌ এর সিজার করানো সম্ভব ছিলো না।কারন আমি যে টাকা ইনকাম করি তা দিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকের খরচ বহন করার মতো ক্ষমতা আমার নেই।কোন উপায় খুজে পাচ্ছিলাম না কি করবো,কিভাবে টাকা ম্যানেজ করবো।মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে টাকার ম্যানেজ করতে পারি নাই।এদিকে সময়ও খুব কম হাতে।কোন উপায় না পেয়ে আমি আমার গ্রামের বাড়ি বন্ধক রাখি তারপর আমার স্ত্রীর সিজার করাই। এ সম্পর্কে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জীবিতেশ বিশ্বাস বলেন মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৫০ টা নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে বাচ্চার জন্ম হয়।এর পাশাপাশি আরো ৩০ থেকে ৫০ জন প্রসূতি মাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো লাগে।এর কারন হলো যেহেতু আমাদের এখানে সিজার হয় না। তাছাড়া মোংলায় জোয়ার না হলে কোন গাড়ী নদীর এপার থেকে ঐ পারে পার হতে পারেনা।তাই আমরা রোগীর অবস্থা বুঝতে পেরে কোন ঝুঁকি না নিয়ে আগে থেকেই রোগীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই। তিনি আরো বলেন আমাদের এখানে অপারেশন থিয়েটার থাকা সত্বেও গাইনী ডাক্তারের অভাবে আমরা সিজার করাতে পারছি না।এ থেকে উত্তোরনের উপায় হলো মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন গাইনী বিশেষজ্ঞ ও একজন অবস বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের।