প্রিন্ট এর তারিখঃ জানুয়ারী ১৯, ২০২৫, ৬:১৮ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ অগাস্ট ২৩, ২০২৩, ১১:০৬ এ.এম
মৌলভীবাজারে বিএসএফের বাধায় মনুনদী প্রতিরক্ষা প্রকল্পের কাজ বন্ধ মৌলভীবাজারে বিএসএফের বাধায় মনুনদী প্রতিরক্ষা প্রকল্পের কাজ বন্ধ
মাহদী হাসান: ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বাধায় প্রায় দুই বছর ধরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় নির্মাণাধীন নদী প্রতিরক্ষা বাঁধের কাজ বন্ধ রয়েছে। বিএসএফের বাধার মুখে নদীর তীর রক্ষা প্রকল্পের এ কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। যার ফলে ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে নদী তীরবর্তী হাজারও পরিবার। এ ছাড়া সীমান্তে ভারত-বাংলাদেশের চাতলা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টও ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
পাউবোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মনু নদীর ভাঙনে ভয়াবহ বন্যা হতে জেলার কুলাউড়া, রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলাকে রক্ষা করতে নদীর তীর রক্ষা প্রকল্প হাতে নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। ২০২১ সালে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ পায় মেসার্স হাসান অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পের আওতায় কুলাউড়া উপজেলার তেলিবিল, বাগজোড়, দত্তগ্রাম ও নিশ্চিন্তপুর এ চারটি পয়েন্টের বাঁধে জিও ব্যাগ ও সিসি ব্লকের ডাম্পিংয়ের কাজসহ নদীর বাঁধ উঁচুকরণের কাজ হাতে নেওয়া হয়।
৫৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিসি ব্লক ও জিও ব্যাগ তৈরির কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব পাওয়ার পর ২০২২ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হলে এতে বাধা দেয় বিএসএফ। পরে আরও কয়েকবার ঠিকাদরি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করতে চাইলে আবারও বাধার মুখে পড়ে প্রকল্পের কাজ। এতে প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এ প্রকল্পের কাজ। কাজ শুরু করতে ভারতের কাছে চিঠি দেওয়া হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসী জানায়, ২০১৮ সালে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে তলিয়ে যায় শত শত বাড়িঘর। বন্যায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে হাজারও পরিবার। মনু নদীর পানি বিপদসীমার ১৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ সময় উদ্ধারকাজে অংশ নেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে মনু নদীর পানি বাড়লে আতঙ্কে দিন কাটাতে হয়। নদীর পানির উচ্চতা বাড়লে ভয় ধরে মনে। পানির তীব্র স্রোতের সময় নদীভাঙনের সম্ভাবনা থাকে।
নদী ভাঙলে হাজারও পরিবারকে ঘরছাড়া হতে হবে। নদীভাঙনের সময় প্রাণ বাঁচাতে প্রাথমিক অবস্থায় আশ্রয় নিতে হয় নদীর বাঁধে। ফলে বাঁধরক্ষা না হলে বিপদের সময় আশ্রয় নেওয়ারও জায়গা থাকবে না বলে জানান তারা।
মিসবাহ উদ্দিন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, গেল বন্যায় নদী ভাঙলে চাতলাপুর চেকপোস্ট এলাকার ব্রিজ-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন নদীরক্ষা বাঁধ না হলে আগামীতে বন্যায় পুরো এলাকা বিপর্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল গণমাধ্যমকে জানান, কাজ শুরু করতে ভারতের কাছে চিঠি পাঠালেও তারা কোনো সাড়া দেয়নি। সম্প্রতি আবার কাজ শুরু করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। যদি সমাধান হয় তাহলে কাজ শুরু করা হবে।
Copyright © 2025 dainikbijoyerbani.com. All rights reserved.