সামাউন আলী, সিংড়া, (নাটোর) প্রতিনিধিঃ
নাটোরের সিংড়া উপজেলার ০৮ নং শেরকোল ইউনিয়নের ভাগনাগরকান্দী গ্রামে মৎস্য চাষে সফলতার মুখ দেখেছেন রুস্তম আলী । ২০০৮ সালে ৪টি পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন তিনি। লাভ হওয়ায় আরো ২টি পুকুর লিজ নিয়ে ৬টি মৎস্য খামারে রেনু চাষ শুরু করেন। অভিশপ্ত বেকার জীবন থেকে মুক্ত হতে নিজ অর্থ, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে তিনি মৎস্য চাষে ঝুঁকে পড়েন। এখন তিনি ২৫ টি পুকুর ও মৎস্য খামার গড়ে তুলেছেন। সেখানে ২০ জন বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে । পাশাপাশি ৫০ টি পরিবার পরোক্ষভাবে সুবিধাভেগী।
তাঁকে অনুসরণ করে মৎস্য চাষে ঝুঁকে পড়েছে অনেক বেকার যুবক। পুকুরে মৎস্য চাষের পাশাপাশি ঐ পুকুরেই মুরগির খামার গড়ে তুলে সফল হোন তিনি। তিনি ৫ টি পুকুরে ১০ হাজার মুরগীর সেড গড়ে তুলেছেন । তাঁর এ উদ্যোগ অনেকে অনুসরন করছে। তিনি ১ টি গরুর খামার ও গড়ে তুলেছেন।
এছাড়া তিনি ২০১১ সালে সরদার পোল্ট্রি ফিড এন্ড চিকস ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। এখান থেকে তাঁর খামার বাদে ও উপজেলা ব্যাপী খাদ্য সামগ্রী বিক্রি করা হচ্ছে। বর্তমানে মৎস্য চাষে সফলতা দেখে স্থানীয় ভাবে তাকে একাধিক পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
মৎস্য চাষের পাশাপাশি পরিবেশ বান্ধব সবজি চাষ, ফলজ বাগান ও বনজ বাগান করেছেন তিনি। ঘুচিয়েছেন বেকারত্ব। বর্তমানে তার মৎস্য খামারে রুই, কাতলা, পুঁটি, সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প, পাবদা সহ অন্যান্য প্রজাতির মাছের রেনু বিভিন্ন হ্যাচারি থেকে সংগ্রহ করে চাষ করা হচ্ছে।
স্থানীয় মৎস্য চাষী পল্লব, রিপন সহ আরো অনেকে জানান, তার এই সফলতা দেখে আশপাশের গ্রামের বেকার যুবকরা মৎস্য চাষের দিকে আগ্রহী হয়ে পড়েছে। শুধু মৎস্য চাষে নয় সফল উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি এলাকার সুখ্যাতি অর্জন করেছেন। পাশাপাশি সমাজসেবামূলক কাজে অবদান রাখছেন। এলাকার দরিদ্র মেধাবীদের সহযোগিতা করছেন।
স্থানীয় মৎস্য খামারী ও সাবেক ইউপি সদস্য রনজু বলেন, ‘ মাছ চাষ করে সংসার বেশ ভালোই চলছে। বেকার যুবকদের চাকুরির পিছনে না ঘুরে মৎস্য চাষে প্রশিক্ষন নিয়ে মাছ চাষ করে ভাগ্যের চাকা বদলে দেয়া সম্ভব হবে। পুকুর না থাকলেও লিজ নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী মাছ ,মুরগী ও সবজি চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া অতীব সহজ।
০৮ নং শেরকোল ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফুল হাবিব রুবেল জানান, সফল মৎস্য চাষী রুস্তম আলী। তাঁর দেখাদেখিতে এলাকার অনেক বেকার যুবক মৎস্য চাষে ঝুঁকেছেন। তার মৎস্য চাষে সফলতা দেখে আরো বেকার যুবকরা উদ্বুদ্ধ হবেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন জানান, সফল মৎস্য খামারী রুস্তম আলী মৎস্য চাষে মৎস্য অফিস থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা পেয়েছেন। আগামীতে ও তাঁকে সহযোগিতা করা হবে।
উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, মৎস্য চাষ করে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন তিনি। মৎস্য চাষে সফলতা অর্জনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তিনি। বেকার যুবকরা তার মতো মাছ চাষ করে সফলতা অর্জন করতে পারে। সে যুব উন্নয়ন থেকে লোন নিয়ে স্বাবলম্বী। তাঁকে অনুসরণ করছে বেকার যুবকরা।
Leave a Reply