হাকিকুল ইসলাম খোকন ,যুক্তরাষ্ট্র সিনিয়র প্রতিনিধিঃ
করোনা মহামারির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছে বিপুল সংখ্যক পরিবার। ফলে, এসব পরিবারের শিশু-কিশোর-কিশোরীদের ভরনপোষণ ও ভবিষ্যত নিয়ে সংকটে পড়েছেন অভিভাবকরা।
এই সংকট লাঘবে বাইডেন প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য ঘোষিত ১ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের করোনা ত্রাণ সহযোগিতা কর্মসূচিতে চাইল্ড ট্যাক্স ক্রেডিট পরিকল্পনা (স্কিম) অন্তর্ভুক্ত করেছিল। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৬ বছরের কম বয়সী সব শিশু প্রতি মাসে ৩ হাজার ৬০০ ডলার এবং ৬ থেকে ১৭ বছর বয়সী সব শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা প্রতি মাসে ৩ হাজার করে ডলার পাবে। চলতি মাস থেকে এই পরিকল্পনা কার্যকরও হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চাইছেন- এটি যেন স্থায়ী হয়। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেসে এ বিষয়ক আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি। এ সম্পর্কে ব্রিফিং তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট চান, চাইল্ড ট্যাক্স ক্রেডিট ব্যবস্থাটি যেন অব্যাহত থাকে। এ কারণে এই বিষয়ে কংগ্রেসে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।’
জেন সাকি জানান, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কাছে এ বিষয়ক বেশ কয়েকটি প্রস্তাব এসেছে। কংগ্রেসের রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট-উভয় দলের জনপ্রতিনিধিরা এই প্রস্তাবসমূহ পাঠিয়েছেন।
তাদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ রিপাবলিকান সদস্য মিট রমেনিও আছেন, যিনি শিশুদের করোনাকালীন ভাতা প্রদান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি, মহামারিতে কর্মহীন হওয়া নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা বিষয়েও প্রস্তাব দিয়েছেন।
বুধবারের ব্রিফিংয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের বিশ্বাস, চাইল্ড ট্যাক্স ক্রেডিট ব্যবস্থাটি স্থায়ী হলে শিশুদের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক নারীও উপকৃত হবেন, যারা মহামারির কারণে কাজ হারিয়েছেন।’ তবে এখনও এটি প্রেসিডেন্টের আকাঙ্খা হিসেবেই আছে। একে বাস্তবায়ন করতে হলে কংগ্রেসকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুতে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩ কোটি ৪৯ লাখ ৫৩ হাজার ৯৩৭ জন এবং মারা গেছেন মোট ৬ লাখ ২৪ হাজার ৭১৫ জন।
মহামারির প্রভাব ও বিপুল সংখ্যক আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে মার্কিন নাগরিকদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সংস্থা সেন্টার ফর আমেরিকান প্রোগ্রেসের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মহামারিকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ৭ জন অপ্রাপ্তবয়স্কদের ১ জন চরম দরিদ্র অবস্থায় পড়েছে।