শেখ খায়রুল ইসলাম পাইকগাছা খুলনা প্রতিনিধি :-
করোনার কাছে মানবতার পরাজয় শবযাত্রা হয়েছে স্বজনদের কাঁধে চড়ে নয়,ডোমদের ভ্যানে
নিয়তির কি নির্মম পরিহাস। মৃত্যুর আট ঘন্টা পরও স্বজনদের কেউ মৃতদেহের কাছে যায়নি। এমনকি ঘর থেকে লাশ বাইরে নেয়া থেকে শুরু করে সৎকার পর্যন্ত সব কাজ করতে হয়েছে ভাড়া করা ডোম দিয়ে। করোনার কাছে মানবতা যেন হার মেনেছে। হৃদয়স্পর্ষি ঘটনাটি পাইকগাছার মামুদকাটি জেলে পল্লীর।
জানাগেছে, পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়ন মাহমুদকাটি গ্রামে মৃত সূযৃকান্ত বিশ্বাসের ছেলে রনজিত বিশ্বাস (৪০)। কয়েক দিন আগে তার করোনা উপসর্গ দেখা দিলে নমুনা পরীক্ষায় ১ জুলাই তার পজেটিভ শনাক্ত হয়। এরপর স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে বাড়িতেই তার চিকিৎসা চলছিল। শনিবার (৩ জুলাই) তার অবস্থার অবনতি হলে খুলনায় নেয়ার জন্য এ্যাম্বুলেন্স সহ কোন বাহন না পাওয়ায় তার বাহিরে নেওয়া হয়ে ওঠেনি। এরপর রবিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২ টার দিকে তার করুন মৃত্যু হয়।
পারিবারিক সূত্র ও এলাকাবাসী জানান, করোনায় মৃত্যু হওয়ায় লোকাল ডাক্তারের পরামর্শে স্ত্রী-সন্তানসহ স্বজনদের কেউ তার পাশে যাননি। একপর্যায়ে ঘর হতে লাশ বাইরে আনা সহ সৎকার সব পাইকগাছা থেকে আসা জনৈক মোতিয়ারসহ ২ জন ডোম ও এলাকার ৩ সাহসী যুবক এসে স্থানীয় শ্মশানে লাশের সৎকার করেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, মৃত রনজিত ৩ ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট। বড় ভাই গত হয়েছেন আরো আগে। মৃত্যু কালে রনজিত স্ত্রী ও একমাত্র সন্তান সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তবে আগ্রাসী করোনায় মৃত্যু হওয়ায় সৎকারে আপনজনদের কেউ এগিয়ে আসেনি। লাশ বহন স্বজনদের কাঁধে চড়ে নয়, হয়েছে ডোমদের ভ্যানে আর সেটি শ্মশান পর্যন্ত। এরপর চিতা সাজানো থেকে মুখাগ্নী সব কাজ সারেন তারাই। এ যেন করোনার কাছে মানবতার পরাজয়!