রাংঙামাটিতে করোনাকালীন সময়ে অভিভাবকদের প্রতি শিক্ষকের পরামর্শ
।।মাহাদী বিন সুলতান।।
পার্বত্য জেলা রাঙামাটির নানিয়ারচরে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের প্রতি দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদান করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের শিক্ষাকরা মাঠ পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নেওয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ভার্চুয়াল মিটিং এর মাধ্যমে রাখছেন পারস্পারিক যোগাযোগ।
নির্বাচিত জেলার শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহিদুল ইসলাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাসের মাধ্যমে অভিভাবকদের সচেতন ও সন্তানদের প্রতি অভিভাবকদের দায়বদ্ধতার আলোকে দিক নির্দেশনা এবং পরামর্শ প্রদান করেছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বগাছড়ি পুনর্বাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহিদুল ইসলাম প্রতিবেদককে জানান, মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে শিশুরা যাতে করে পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে না পড়ে এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোন শিশু যেন পাঠ্যক্রম থেকে ঝরে না পড়ে এই লক্ষ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমি এই স্ট্যাটাসটি পোষ্ট করেছি।
তিনি আরো জানান, শিক্ষকরা মাঠ পর্যায়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্মার্ট ফোনে ভার্চুয়াল মিটিং এর ব্যবস্থা করে দেন এবং যাদের স্মার্ট ফোন নেই তাদের মুঠোফোনের আওতায় এনে পাঠ্যক্রম বুঝিয়ে দিচ্ছেন শিক্ষকগণ। এবং প্রথম পর্যায়ে ২৫ভাগ শিক্ষার্থী ভার্চুয়াল ক্লাসের আওতায় এলেও বর্তমানে ৫০ভাগ শিক্ষার্থী এই ভার্চুয়াল ক্লাসের আওতায় এসেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৯ সালে জেলার শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্বাচিত হয় নানিয়ারচরের এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। স্থানীয় উদ্যোগে মিড ডে মিল, স্টুডেন্ট অব দ্যা মান্থ, স্টুডেন্ট অব দ্যা ইয়ার, মাদার অব দ্যা ইয়ার, নিজ বিদ্যালয়ে শহিদ মিনারসহ পাঠ্যক্রমের বাইরেও বেশ কিছু সুবিধা ভোগ করে থাকে অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
লকডাউনে থেকে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, রাঙামাটি জেলায় ৭শত এর অধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের নিজ উদ্যোগে এবং নিজেদের পাঠ্যক্রমানুসারে পাঠদান করলেও সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক একটি গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সারা বাংলাদেশেই এটি অনুসরণ করা হচ্ছে।
ভার্চুয়াল মিটিং এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুর্গম বেশ করেকটি বিদ্যালয় ছাড়া বাকি প্রায় ৯০শতাংশ বিদ্যালয় এখন ভার্চুয়াল ক্লাস পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত পাঠ্যক্রমটি প্রতিটি বিদ্যালয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শীট আকারে তা শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।
জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়টি আমি পরিদর্শন করেছি। শিক্ষক-শিক্ষিকা, কমিটির সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই যথেষ্ট আন্তরিক। লকডাউনের ফলে গত বছর বিদ্যালয় যাচাই করা হয়নি। কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যাচাই পূর্বক জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়ের নাম ঘোষণা করা হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) বগাছড়ি পুর্নবাসন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলোঃ
"অভিভাবকদের প্রতি সবিনয় পরামর্শ "
বগাছড়ি পুনর্বাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নানিয়ারচর, রাংগামাটি পার্বত্য জেলার প্রিয় অভিভাবকবৃন্দ, কোভিড-১৯ মহামারি থেকে মুক্তি লাভের জন্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার পাশাপাশি আপনাদের নিকট সবিনয়ে পরামর্শ :
১. আপনার সন্তানকে সকাল ও সন্ধ্যা পড়ার টেবিলে বসান।
২. পড়া শেষে খাতায় লিখান এবং একটু চেক করুন।
৩. বিদ্যালয়ের অনলাইন ক্লাস গুলোতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করুন।
৪. শিক্ষকদের সাথে ফোনে যোগাযোগ রক্ষা করুন।
৫. আপনার সন্তানের বিষয় শিক্ষক কিছু জানতে চাইলে তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন।
৬. সন্তানকে সবকিছু বুঝিয়ে বলুন এবং জোর করা থেকে বিরত থাকুন।
৭. সন্তানকে আপনার সঙ্গ দিয়ে ঘরে রাখার ব্যবস্থা করুন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। কারণ, আপনার সন্তান আগামী বাংলাদেশের কর্ণধার।