রাঙ্গাবালীতে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তান্ডবে নিম্নঅঞ্চল প্লাবিত,
সাড়ে ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত
সঞ্জীব কুমার সাহা,রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)
একদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস, অন্যদিকে পূর্ণিমার তিথি। এই দুইয়ে মিলে ফুঁলেফেপে উঠেছে উপকূলের নদ-নদীর পানি। ফলে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ১৫টি গ্রামসহ নিম্নঅঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়েছে বসত ঘরবাড়ি, প্রতিষ্ঠান। ভেসে গেছে পুকুর ও মাছের ঘের।
বুধবার সকাল ৮ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত একটানা জোয়ারের পানিতে এ ক্ষতি হয়। স্বাভাবিকের চাইতে এসময় ৪-৫ ফুট উচ্চতর পানি প্রবাহিত হয় ওইসব গ্রামে। এদিকে গত দুইদিনের জোয়ারে যেসকল বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অনেক আগ থেকে যেসকল বাঁধ ভাঙা তা দ্রæত সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ দাবি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের। তারা বলছেন, ‘ত্রাণ চাই না, বাঁধ (বেড়িবাঁধ) চাই।’ প্রশাসনের দেয়া তথ্যানুযায়ী, এবারের তাÐবে সাড়ে ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জানা গেছে, ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে এ উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের মধ্য চালিতাবুনিয়া, বিবির হাওলা, চিনাবুনিয়া, চরলতা, চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরবেষ্টিন, নয়ারচর, চরআন্ডা, ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কোড়ালিয়া এবং বেড়িবাঁধবিহীন রাঙ্গাবালী ইউনিয়নের চরকাশেম, কলাগাছিয়াসহ অন্তত ১৫টি গ্রাম ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়।
চালিতাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মধ্য চালিতাবুনিয়া, বিবির হাওলা, চিনাবুনিয়া ও চরলতার বেড়িবাঁধ ভাঙা ছিল। সেই বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই গত দুইদিনের জোয়ারে আমাদের পুরো ইউনিয়ন তলিয়ে গেছে। ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে।’ চরমোন্তাজ ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ মিয়া বলেন, ‘প্রথমদিন নয়ারচর ও চরবেষ্টিন বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে ওই দুই গ্রামে। দ্বিতীয় দিনেও পানি ঢুকেছে। আর আন্ডারচরের ভাঙা বাঁধ সংস্কার না করায় সেই চরেও দুইদিন পানি ঢুকে প্লাবিত হয়।’ ছোটবাইশদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এবিএম আব্দুল মান্নান বলেন, ‘কোড়ালিয়ার ভাঙা বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পুরো গ্রাম প্লাবিত হয়।’ইউপি চেয়ারম্যানদের দাবি, ভাঙা বেড়িবাঁধগুলো দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, ‘দ্বিতীয় দিনের জোয়ারে ১৫টি গ্রামের বেশি প্লাবিত হয়। এতে ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে যারা দুপুরে রান্নাবান্না করতে পারেনি, তাদের জন্য চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ বেড়িবাঁধ সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভাঙা বেড়িবাঁধ সংস্কারের বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিব।’
বার্তা প্রেরক,
সঞ্জীব কুমার সাহা
রাঙ্গাবালী, পটুয়াখালী।
01731811116