সোহেল রানাঃ
কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙনে বিলিন হয়েছে গতিয়াশম গ্রামের এক হাজার পরিবারের কাচা/পাকা, ঘড়বাড়িসহ,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,
ধর্মী,সেবামুলক প্রতিষ্ঠান, আবাদী জমি।হুমকির মুখে রয়েছে আরো এক হাজার পরিবারসহ রাস্তা,ব্রিজসহ বিভিন্ন স্থাপনা।অতীতের রেকড ছাড়িয়ে এমন ভাঙনের নেপথ্যে রয়েছে শুকনো মৌসুমে তিস্তা নদীর পাচঁ/সাত কিলোমিটার তীরজুড়ে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন হয়েছে দিনের পর দিন।একই জায়গা থেকে অতিরিক্ত বালু উত্তোলনের গভীরতার সৃষ্টি হয়েছে।তিস্তার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বালু উত্তোলনের পয়েন্টগুলোতে পানি পৌঁছানোর সাথেই আশপাশের সবকিছু ভেঙে পরে নদীতে।নিমিষেই ভাসিয়ে নিয়ে যায় বাপদাদার বসতভিটাসহ একরের পর একর দুফসলি আবাদী জমি।নদী তীর বসতবাড়ির কাছ থেকে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে মাঝ নদীতে জেগে ওঠেছে চর।সেই জেগে ওটা নদীর চরে অনেকেই ঘরবাড়ি তৈরি করে জীবনযাপন করছে বেশকিছু পরিবার।অপরদিকে তিস্তার নদীর ভাঙনে সর্বশান্ত হয়েছে,
অথচ এই ভাঙন শুরু হয়েছে ঈদ উল আজহার তিন আগে থেকেই,গত এক সপ্তাহে পাচঁ শতাধিক ঘরবাড়ি আবাদি জমি নদীতে বিলিন হয়েছে,আশ্রয় নিয়েছে,মধ্যচরে, অন্যের বাড়ীতে,রাস্তা কিংবা অন্যের জমিতে কোনরকম তাবু টাঙিয়ে পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিনকাটাচ্ছে।নদীর ভাঙনে অসহায় পরিবার
গুলো সরকারি বেসরকারি কোন সেবামুুুলক,সংগঠনের পক্ষ সহযোগীতা পাননি বলে জানান।স্থানীয়রা জানান বিগত পঞ্চাশ বছরেও এমন ভাঙনের দৃশ্য আমরা দেখিনি।অতীতের তুলনায় এবছর ভাঙন রেকড ছাড়িয়ে,আর এমন ভাঙনের একমাত্র কারন হিসেবে স্থানীয়রা দায়ি করছেন যততত্র ড্রেজার, ড্রেজার লাগিয়ে অন্যের ক্ষতির কথা না ভেবেই, একাধারে বালু উত্তোলন।দেলোয়ার হোসেন বলেন,
ড্রেজার লাগিয়ে বালু উত্তোলন করে বাধা দিয়ে লাভ হয়না,প্রশাসনকে জানালে ব্যবস্থা গ্রহণেও বিলম্ব হয়।বসতভিটা হারানো একাধিক সদস্য নাম প্রকাশে অনাচ্ছুক ব্যক্তি জানান, বর্ষাকালে আমরা নদী ভাঙনের বারবার শিকার হয়,পানি কমে গেলে স্থানীয় কিছু লোক ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে নদীর তীরের পাশেই অবৈধ ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে বালু উত্তোলন করেন,আরও বলেন প্রায় ১৪ মাস পুর্বে অবৈধ ড্রেজার উচ্ছেদ করতে আসা ইউএনও স্যারকে লাঞ্ছিত করার জন্য অবরোধ স্থানীয় কতিপয় লোকজন।পরে রাজারহাট থানা পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বলে জানাগেছে। আমরা প্রতিবাদ করলেই বাড়ীতে থাকতে দিবেনা,এযেন মরার উপর খরার ঘাঁ।আবার যদি প্রশাসন আসে তাদের কেও লাঞ্ছিত করা হয়,রিয়াজুল বলেন ভাঙনরোধে সরকারের তিস্তার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন জরুরী,বাদশা মিয়া বলেন,ড্রেজার লাগালে,চেয়ারম্যান প্রশাসন কেউ বন্ধ করতে আসেনা,বালু তোলার কারনে জমি নিচু হয় সেই কারণে আমরা ভাঙনের মুখে পরেছি,মন্তাজ আলি জানান,নদী ভাঙনে সব হারিয়েছি,আমাদের খবর নিতে বা দেখতে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান,উপজেলা চেয়ারম্যান,এমপি কেউ আসেনি,আমরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কে ফোন দিলে বলে আমার ভোট ঐ এলাকায় নাই।কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়নের প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন,তীররক্ষা বাবদ প্রায় ১৭ কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য ইতিমধ্যে গত জুলাই মাসে পানি উন্নয়ন বোড অনুমোদন চেঁয়েছে,যাহা অনুমোদন পেলে কাজ করা সম্ভব হবে।কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের এস,ডি মাহমুদ হাসান জানান,
আমরা এমার্জেন্সি বরাদ্দের থেকে দুই সপ্তাহ জিওটিউব পেলেছি।
ইউপি সদস্য সহিদুল ইসলাম বলেন,ইতিপূর্বে প্রথম পর্যায়ে ভাঙনের শিকার হওয়া পরিবার সরকারি ত্রাণ পেয়েছে।ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক এম,এ মতিন বলেন,যততত্র ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে এজন্য এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে,তিস্তা নিয়ে সরকারের যে মহাপরিকল্পনা তা বাস্তবায়নে হলে ঐ অঞ্চলের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা খোজবে,অতীতের তুলনায় নদীর নাব্যতা এখন নেই,
পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও পর্যটক এলাকায় পরিনত হবে,এতে বেকার যুবক কর্মসংস্থান হবে লাভবান হবে স্থানীয় মানুষ।