রুবেল মিয়া,
কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
রাজারহাটে একই পরিবারে ৫ মানসিক প্রতিবন্ধীকে নিয়ে পরিবার সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন দোলেনা বেগম। দোলেনা উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের গাবুর হেলান গ্রামের মানসিক প্রতিবন্ধী রঞ্জন (৬০) এর স্ত্রী।
ঞ্জন-দোলনা দম্পতি পরিবারের দুই ছেলে দেলোয়ার (২০) ও দানিয়েল (১৩) এবং দুই মেয়ে রনজিনা (২৫) ও অজিফা (১৫) সকলে জন্মসূত্রে মানসিক ভারসাম্যহীন।
জানা গেছে, মানসিক ভারসাম্যহীন রঞ্জন মিয়া একজন ভূমিহীন। নিজেদের কোন জায়গা-জমি না থাকায় অন্যের জমিতে বসবাস করেন তারা। পরিবারের কেউ কাজ-কর্ম করতে পারেন না। তাই দোলেনা বেগম অন্যের বাড়িতে ঝি এর কাজ করে অতিকষ্টে খেয়ে না খেয়ে সংসার চালান। এছাড়া ভূমিহীন এ পরিবারটির কোন আয়ের উৎস নেই। বছরে চার’বার প্রতিবন্ধী হিসেবে সরকারি ভাতা বাবদ যে টাকা পান তা দিয়েই কোন রকমভাবে চলছে তার সংসার। খাদ্য,বস্ত্র,বাসস্থান,চিকিৎসা ও শিক্ষা ৫ মৌলিক অধিকারের কোনটিই ঠিকমতো পাচ্ছেন না তারা।
দোলেনা বেগম বলেন, আমি ভীষন বিপদে আছি। আমার পিতা-মাতা গরিব। অভাবের কারনে বাবা আমাকে পাগল লোকটার সাথে বিয়ে দিয়েছে। তিনি কোন কাজ কর্ম করতে পারেন না। একদিন ভিক্ষে করলে সাত দিন বাড়িতে বসে থাকে। স্বামী ও ৪ মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলে মেয়ে নিয়ে অমানুষিক কষ্টে দিন যাপন করছি । প্রতিবন্ধীর ভাতা দিয়ে যে টাকা পাই,তাতে সংসার চলে না।
স্থানীয় বাসিন্দা আকলিমা বেগম,রহিমা বেগম ও নুর মোহাম্মদ সহ অনেকে জানান,প্রতিবন্ধী এই পরিবারটি খুবেই অসহায়। তারা পরিবারটিকে সরকারিভাবে বিশেষ অনুদান প্রদানের দাবী জানান।
বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাইজুল ইসলাম বলেন, আমি মানসিক প্রতিবন্ধী পরিবারটির ৪ সদস্যকে ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তাদেরকে অন্যান্য সাহায্য সহযোগিতাও করা হয়।
ডাংরারহাট বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম মুকুল বলেন, ২০১৬ইং সনের জানুয়ারী মাসে দেলোয়ার প্রাক-প্রাথমিকে,দানিয়েল শিশু শ্রেণীতে এবং অজিফা দ্বিতীয় শ্রেণীতে ভর্তির পর কিছুদিন বিদ্যালয়ে যাতায়াত করেছিল। পরে আর আসেনি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান,রাজারহাট উপজেলায় একই পরিবারে ৫ জন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি থাকার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি খোঁজখবর নিয়ে ওই পরিবারের কেউ বাকী থাকলে তাদেরকেও সরকারি ভাতার ব্যবস্থা করে দিবো।
কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন,উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ছুটি থেকে আসলেই আমি এবিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলবো।