জিহাদ হোসেন রাহাত
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :
করোনা প্রতিরোধী টিকা নিতে লক্ষ্মীপুরের মানুষের আগ্রহ বাড়লেও সরবরাহ কম। এ কারণে নিবন্ধন করার দেড় থেকে দুই মাস পরও টিকা নিতে পারছেন না আগ্রহীরা।
সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য মতে, এখন জেলায় টিকার জন্য অপেক্ষায় আছে প্রায় তিন লাখ নিবন্ধনকারী।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফেরদৌস ইসলাম গত ১ জুলাই স্ত্রীসহ করোনার টিকার জন্য নিবন্ধন করেন। টিকা কেন্দ্র নির্ধারণ করেন জেলা সদর হাসপাতাল। দুই মাসেও তিনি এসএমএস পাননি বলে জানালেন।
জুলাইয়ের বিভিন্ন সময় নিবন্ধন করে এখনও বার্তা পাননি জেলা সদরের হুমায়ুন কবির, আবু তাহের ও নাজমা বেগম।
লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জনের তথ্য মতে,জেলার পাঁচ উপজেলায় ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন সাড়ে ৫ লাখের বেশি মানুষ। ওই দিন পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন ২ লাখ ৫০ হাজার। সরবরাহ কম থাকায় নিবন্ধনকারীদের টিকা দিতে দেরি হচ্ছে।
জেলা সিভিল সার্জন আবদুল গফ্ফার জানান, প্রথম দিকে টিকা নেয়ায় তেমন আগ্রহ ছিল না সাধারণ মানুষের। সে সময় বাড়ি গিয়ে বলে বলে নিবন্ধন করানো লাগত। গত ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত জেলার এক লাখের কিছু বেশি মানুষ নিবন্ধন করেছিলেন। তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর এপ্রিল থেকে বেড়ে যায় নিবন্ধনের হার।
তিনি আরও জানান, ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টিকা দেয়া হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষকে। নিবন্ধন করে টিকা নিতে অপেক্ষায় রয়েছেন ৩ লাখের বেশি মানুষ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ে টিকার এসএমএস পাঠানোর কাজ করেন মাসুরা বেগম। তিনি জানান, প্রতিদিন ছয় থেকে সাত হাজার নিবন্ধনকারীকে এসএমএস পাঠানো হয়। এর মধ্য থেকে নির্ধারিত দিনে দুই হাজারের বেশি মানুষ টিকা নেয়।
জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, নিবন্ধনের সংখ্যা বেড়েছে, মানুষের মধ্যে আগ্রহও বেড়েছে টিকা নেয়ার। যে পরিমাণ নিবন্ধন হয়েছে সে তুলনায় টিকা দেয়া হচ্ছে কম। টিকা কম থাকায় দেয়া যাচ্ছে না।
চিকিৎসকদের মতে, যে হারে টিকা দেয়া হচ্ছে, তাতে নিবন্ধনকারীদের সবাইকে টিকা দিতে সময় লাগবে ৮ থেকে ৯ মাস।
জেলা সিভিল সার্জনও টিকার সরবরাহ কম থাকার বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি জানান, সরবরাহের চেয়ে জেলায় অনেক বেশি নিবন্ধন হয়েছে। সদর হাসপাতালে ছয়টি বুথে প্রতিদিন টিকা দেয়া হয় গড়ে এক হাজার। আর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চারটি বুথে গড়ে টিকা পান ৬০০ থেকে ৭০০ মানুষ। এর মধ্যে অর্ধেক পাচ্ছেন প্রথম ডোজের টিকা। বাকীরা দ্বিতীয় ডোজ।
তিনি বলেন, টিকা এলে পর্যায়ক্রমে সবাইকে দেয়া হবে। খুব কম সময়ের মধ্যে এ সংকট কেটে যাবে।