লাফার্জের ক্রাশিং চুনাপাথর বিক্রি বন্ধের
দাবিতে ছাতকে ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ সভা
সোহেল মিয়াঃ সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের ছাতকস্থ লাফার্জ হোলসিমের ব্যবসায়িক কার্যকলাপে ফুঁসে উঠেছেন ছাতক- দোয়ারাবাজার এলাকার ব্যবসায়ীবৃন্দ। লাফার্জ-হোলসিম কর্তৃপক্ষ খোলাবাজারে ক্রাশিং চুনাপাথর বিক্রি শুরু করায় এখানে ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ ও ক্ষতির সম্মোখিন হচ্ছে । বুধবার ৩১ মার্চ লাফার্জের ক্রাশিং চুনাপাথর খোলাবাজারে বিক্রি বন্ধের দাবীতে ছাতক শহরে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছেন ছাতক-দোয়ারাবাজার ২ উপজেলার লেভার ও ব্যবসায়ীবৃন্দ। এর আগে এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের একাধিক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ও মন্ত্রণালয় বরাবরেও তারা স্মরকলিপি দিয়েছেন। বুধবার প্রতিবাদ সভা চলাকালে সভাপতিত্ব করেন ছাতক লাইমস্টোন ইম্পোটার্স এন্ড সাপ্লায়ার্স গ্রুপের প্রেসিডেন্ট আহমেদ শাখাওয়াত চৌধুরী সেলিম। বক্তব্য রাখেন, ছাতক পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াহিদ মজনু, ছাতক ডিগ্রী কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ মঈন উদ্দিন আহমদ, আওয়ামীলীগ নেতা সৈয়দ আহমদ, পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফজলু মিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান, পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামছু মিয়া, পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই আজাদ, ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, ব্যবসায়ী কামাল চৌধুরী, মাও.আকিক হোসেন,শাহরিয়ার ইনু, সাদিক মিয়া তালুকদার, ইসলাম পুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হেকিম, দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূর উদ্দিন আহমদ ও দোহালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার মিয়া আনু, ছাতক পৌর কাউন্সিলর ইরাজ মিয়া সহ ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধিবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, প্রতিষ্ঠাকালীন ও আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করে লাফার্জ-হোলসিম কর্তৃপক্ষ সিমেন্ট ও ক্লিংকার উৎপাদনের নামে ভারত থেকে আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে কমমূল্যে আমদানীকৃত চুনাপাথর ক্রাশিং করে খোলাবাজারে বিক্রি করছে। বৃহত্তর ছাতকের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের রুটি-রোজি কেড়ে নিতে লাফার্জ-হোলসিম কর্তৃপক্ষ এ কার্যক্রম শুরু করেছে। লাফার্জ-হোলসিমের সিমেন্ট ও ক্লিংকার উৎপাদনের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু তারা অবৈধভাবে চুনাপাথর ক্রাশিং করে খোলাবাজারে বিক্রি করছে এবং এটি বৃহৎ আকারে পরিচালনারও কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে লাফার্জ-হোলসিম। এতে ছাতক, কোম্পানীগঞ্জ ও দোয়ারাবাজার ৩ উপজেলার কয়েক'শত ব্যবসায়ী ও সহস্রাধিক শ্রমিক পথে বসার উপক্রম হয়ে পড়েছে। ক্লিংকার ও সিমেন্ট উৎপাদনের নামে অপেক্ষাকৃত কম রাজস্ব দিয়ে এবং ন্যুনতম পরিবহন খরচে ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানী করছে লাফার্জ-হোলসিম। পক্ষান্তরে বানিজ্যিকভাবে আমদানীর কারনে উচ্চ হারে সরকারকে ভ্যাট এবং অধিক পরিবহন খরচ দিতে হচ্ছে এখানের ব্যবসায়ীদের। যে কারনে খোলা বাজারে বর্তমান মূল্যের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে ক্রাশিং চুনা পাথর বিক্রি করার সুযোগ নিচ্ছে লাফার্জ-হোলসিম। ফলে প্রতিযোগিতার বাজারে এলাকার চুনাপাথর ব্যবসায়ীরা টিকে থাকতে পারছে না।
প্রতিবাদ সভায় উপস্তিত ছিলেন, ছাতক-দোয়ারাবাজার ও কোম্পানিগঞ্জ এই তিন উপজেলার, পাথর ব্যবসায়ী সমিতি, লাইমস্টোন আমদানীকারক সমিতি, লালপাথর ব্যবসায়ী সমিতি, বালু ব্যবসায়ী সমিতি, নৌ-পরিবহন সমিতি, লেবার সমিতি এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের ব্যানারে প্রতিবাদে ব্যবসায়ীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেছেন। শহরের দোকান-পাট বন্ধ করে ঘন্টাব্যাপী এ এই প্রতিবাদ সভায় অংশ নিয়ে সর্বস্তরের ব্যবসায়ীরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।