আসিফ জাহান
বিশেষ প্রতিনিধি কুলাউড়া
শতাধিক বছরের পুরনো সিলেট রেলওয়ের ৫টি স্টেশন আধুনিক করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।রেলওয়ের নিজস্ব অর্থায়নে এ সংক্রান্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২
কোটি টাকা।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী সবুক্তগীন জানিয়েছেন আধুনিক স্টেশনে যে সকল সুযোগ সুবিধা থাকার কথা তার সব এসব স্টেশনে থাকবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর বিনা টিকিটের যাত্রীও ঠেকানো যাবে বর্তমানে প্রকল্পটি দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।চলতি অর্থবছরেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।একই প্রকল্পে সিলেট চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের ২৬ টি রেলওয়ে স্টেশনকে আধুনিক করা হবে।
যাত্রীদের ভ্রমণ আনন্দদায়ক করতে রেলওয়ে আরও নতুন কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মো খলিলুর রহমান জানান সিলেট বিভাগের ৫টি রেলওয়ে স্টেশনকে আধুনিকায়ন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে রেলওয়ে স্টেশনগুলোর চিত্র অনেকটা পাল্টে যাবে। যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে রেলওয়ে স্টেশনে বসতে পারবেন প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে রেলওয়ের কর্তৃপক্ষ কাজ করছেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অধীন হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন নোয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশন মৌলভীবাজার জেলার ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশন শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন এবং কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন কে আধুনিক করা হবে।
এ সকল স্টেশনে রেলওয়ের বগির সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্লাটফর্ম উঁচু করা হবে।পুরুষ ও মহিলা যাত্রীদের জন্য নির্মাণ করা হবে পৃথক সুসজ্জিত ওয়েটিং রুম।নবজাতকের মায়েদের সুবিধার্থে থাকবে ব্রেস্ট ফিডিং রুম। নারী ও পুরুষ যাত্রীদের জন্যে স্থাপন করা হবে পৃথক ওয়াশরুম।বিশুদ্ধ খাবার পানির সুব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হবে।বিনা টিকিটে যাতে কোন যাত্রী রেলভ্রমণ করতে না পারেন এব্যবস্থাও থাকবে।যাত্রীদের নিরাপত্তায় আরও নানান কার্যক্রম বাস্তবায়নের কথা রয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে
প্রকল্পের আওতায় পূর্বাঞ্চল প্রকৌশল দফতরের অধীনে সিলেট চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের ২৬টি রেলওয়ে স্টেশনের আধুনিক হবে।মূলত দেশের ৫২টি রেলওয়ে স্টেশন আধুনিক প্রকল্পের আওতায় পূর্বাঞ্চল প্রকৌশল বিভাগ সিলেট চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের এই ২৬ টি রেলওয়ে স্টেশন আধুনিক করছে।রেলওয়ে স্টেশন আধুনিক সহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগকে গেল অর্থ বছরে ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে।চলতি ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ৫২ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে প্রকৌশল বিভাগ।আধুনিক প্রকল্পের অর্থ রেলওয়ের বিশেষ খাত থেকে দেওয়া হবে।সিলেট অঞ্চলের ৫ টি রেলওয়ে স্টেশন আধুনিকা দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
বর্তমানে সিলেট ঢাকা রেলপথে কালনী এক্সপ্রেস পারাবত এক্সপ্রেস উপবন এক্সপ্রেস ও জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস নিয়মিত চলাচল করছে।সিলেট চট্টগ্রাম রেলপথে নিয়মিত চলাচল করছে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ও উদয়ন এক্সপ্রেস।
ইতিহাসবিদদের মতে তৎকালীন আসামে চা রোপণকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৮৯১ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে বাংলার পূর্ব দিকে প্রথমবারের মতো রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু করে।এরপর ধীরে ধীরে এই অঞ্চলে রেল যোগাযোগ ছড়িয়ে পড়ে।তৎকালীন বৃটিশ সরকার আসামের সিলেট জেলায় ১৯১২ থেকে ১৯১৫ সালে কুলাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন করে। ওই সময়েই সিলেট রেলওয়ে স্টেশন চালু হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৪ সালে পাকিস্তান শাসনামলে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক বাজার পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণ করা হয়।