শায়েস্তাগঞ্জে পাকা ধান তুলতে পেরে কৃষকের মুখে ফুটেছে সোনালি হাসি।
সিলেট ব্যুরোঃ
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে নানা প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও পাকা ধান ঘরে তুলতে পেরে কৃষক শ্রমিকের মুখে ফুটেছে সোনালি হাসি। শায়েস্তাগঞ্জে বোরো ধান কাটার উৎসব প্রায় শেষ।
যেসব জমিতে ধান কাটা কিছুটা বাকি রয়েছে, রমজান মাস আর ঈদের ছুটির পর এখন সেগুলো কাটা হচ্ছে। কখনও রোদ,কখনও বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘরে ধান তুলছেন কৃষকরা।
তবে এবার শায়েস্তাগঞ্জে শ্রমিক সংকটের কারণে অনেকেই ধান সময়মতো ঘরে তুলতে পারেননি। ফলে ধান পেকে কিছুটা জমিতেই ঝরে যাচ্ছে। শায়েস্তাগঞ্জের কোথাও কোথাও হারভেস্টার মেশিন দিয়ে কাটা হয়েছে ধান। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, কৃষি অফিসের সমন্বয়হীনতার অভাবে হাতের নাগালে মিলেনি ধান কাটার মেশিন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের সৈয়দ রতন মিয়া হবিগঞ্জের বানিয়াচং থেকে একটি হারভেস্টার মেশিন ভাড়া করে এনেছেন। তিনি বলেন, অনেক কষ্ট করে এই মেশিনটি এনেছি। আমরা মেশিন হাতের নাগালে না পাওয়ার কারণে বেশি টাকা দিয়ে ভাড়া এনেছি। এখন প্রতি একর ১ হাজার ৮০০ টাকা করে দিয়ে ধান কাটাচ্ছি।
সব ছাপিয়ে শায়েস্তাগঞ্জে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে পেরে কৃষকদের মুখে ফুটেছে তৃপ্তির হাসি। যারা ধান কেটেছেন, তাদেরকে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে। বোরো ধান সিদ্ধ দিয়ে রোদে শুকাচ্ছেন, ধানের খড় শুকিয়ে গরুর খাবারের জন্য তৈরি করে রাখছেন তারা।
এবার শায়েস্তাগঞ্জে ২৮ ও ২৯ জাতের বীজ এবং ৫৮ ধানের বীজ ও নতুন একটি ধানের বীজ ‘হিরা’ বেশিরভাগ জমিতে চাষ করা হয়েছে।শায়েস্তাগঞ্জে প্রতি একর ধান ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা দরে কাটছেন শ্রমিকরা।
ধান কেটে কাঁধে ভার নিয়ে পৌঁছে দেন যথাস্থানে। জানা গেছে, এবার শায়েস্তাগঞ্জে প্রতি একরে ১০-১২ মন ধানের ফলন হয়েছে।
অন্যদিকে, সুতাং অঞ্চলে এবারও পাকা ধানে হানা দিয়েছে বন্য শুকর। বন্য শুকরের উৎপাতে এবারও অনেকের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কেউ কেউ ফসল বাঁচাতে রাতে মশাল জ্বালিয়ে পাহারা দিয়েছেন। এ থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয়রা বন বিভাগের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সুকান্ত ধর জানান,শায়েস্তাগঞ্জে ৮৫ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে।
এবার শায়েস্তাগঞ্জে বোরো ধান আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৩৫০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৫০০ টন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে।
আর ধান কাটার মেশিনের বিষয়ে তিনি বলেন, নুরপুরে আমরা মেশিন পাঠিয়েছিলাম। আসলে একই অঞ্চলে এক সঙ্গে তো ধান পাকে না।
এটা একটা সমস্যা আমরা একই জায়গায় বার বার মেশিন পাঠাতে পারি না।