মোঃ গোলাম মোস্তফা,
চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী হওয়ায় প্রায় দেড় বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়া হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমন ঘোষনা দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এ নিয়ে দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনে ফিরে এসেছে প্রানচঞ্চলতা। পুরোদমে শুরু হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্নের কাজ।
যদিও এখন পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শতভাগ টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। ফলে তাদের করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে কিছুটা চিন্তিত অভিভাবকরা।
এদিকে,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো খোলার জন্য সবরকম প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে শিক্ষা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। স্কুল কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে স্কুল খোলার জন্য প্রয়োজনীয় সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার এমজিএম সারোয়ার হোসেন । তিনি জানান, উপজেলায় ১৯৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে,এতে শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ২৩ হাজারেরও বেশী। প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার বিষয়ে তিনি জানান, উপজেলার ৯৭২ জন শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে ৯১ শতাংশ শিক্ষকদের টিকার আওতায় আনা হয়েছে এবং প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে জরুরী সভা সহ ইতিমধ্যে শতভাগ ভাগ স্কুল পরিদর্শন করে স্কুল খোলার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক বলেন উপজেলায় নিম্ম মাধ্যমিক,উচ্চ মাধ্যমিক এবং স্কুল এন্ড কলেজ,মাদ্রাসাসহ মোট ১৩২টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এর মধ্যে মাদ্রাসা ৩৭টি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সরকারী ভাবে প্রস্তুতি চলছে,দুই একদিনের মধ্যেই চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের চিঠি আসবে।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী শিক্ষার্থী মিথিলা,সেতু,ফাহিম ও চতুর্থ শ্রেণীর রিয়াদ বলেন, আগে স্কুল পালাতাম,এখন আমরা স্কুলে যেতে চাই। স্কুলে না গেলে বাড়ীতে ভালো লাগেনা। অনেকদিন পরে আমাদের স্কুল খুলছে। এতে আমরা অনেক খুশি। আমার সহপাঠীরা সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাশ করবো।
অভিভাবক মোশারফ হোসেন সহ অনেকে জানান, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীর পড়ালেখার অনেক ক্ষতি হয়েছে। বাচ্চারা বাড়ীতে একদম পড়াশোনা করতে চায় না। যদিও স্কুল থেকে নিয়মিত অনলাইন ক্লাস হচ্ছে। তা পর্যাপ্ত নয়। সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ছোট বাচ্চারা ততটা সচেতন না। এ জন্য কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
উপজেলার বেশ কয়েকেটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠান গুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখা হয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্নের কাজ চলছে। ক্লাসরুমের বেঞ্চগুলো ইতিমধ্যেই পরিষ্কার করা হয়েছে। পরিপাটি স্কুলের আঙিনা যেন শিক্ষার্থীদের অপেক্ষার প্রহর গুনছে।
কারেন্টহাট সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম আলী বলেন, সরকারের নির্দেশনা মেনে স্কুল খোলার সব রকম প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের আগেই শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয় প্রস্তুত থাকবে। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা বাড়ীর কাজ সম্পুর্ন করে সেগুলো প্রতি সপ্তাহে জমা দিয়ে নতুন কাজ নিয়ে যাচ্ছেন।তিনি আরও বলেন,করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জে আমাদের জয়ী হতেই হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী ইতিমধ্যে স্কুল খুলে দেয়ার সবরকম প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। শতবাগ স্বাস্থ্য বিধি মেনে স্কুলের কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।