মির্জা সাইদুল ইসলাম (সাঈদ)
স্টাফ রিপোর্টার দৈনিক বিজয়ের বাণী:
ষড়ঋতুর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ হেমন্তের একপক্ষ কাল পেরোতেই প্রতিকৃতিতে লেগেছে শীতের ছোঁয়া।ঘাসের ঠোঁটে ভোরের শিশির আর সন্ধ্যা নামতেই হালকা শীতের আভাস নিয়ে প্রতিবছর হেমন্তের আগমন ঘটে। দিনের সূর্য কিছুটা তপ্ত হলেও নিশির নীরবতা বয়ে আনে হালকা শীতের মিষ্টি আমেজ।
টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার বিভিন্ন লেপ-তোষকের দোকানে আগমনী শীতকে কেন্দ্র করে আগের তুলনায় অনেকটাই ব্যস্ত দেখা যাচ্ছে । পৌষ-মাঘের শীতের প্রবলতা থেকে রেহাই পেতে অনেকে আগেভাগেই লেপ-তোষকের দোকানে ভিড় জমাচ্ছে নতুন লেপ-তোষক তৈরি করতে এবং পুরনো লেপ-তোষক ঝেড়ে নতুন করতে। এতে লেপ-তোষকের কারিগররা অনেকটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।পরে ভিড় বাড়তে পারে এবং লেপ-তোষক বানানতে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হতে পারে সেই আশঙ্কা থেকে আগে ভাগেই বিভিন্ন লেপ-তোষকের দোকানে ছুটছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এত করে দোকানগুলোতে কারিগরদের ব্যাস্ততা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সখিপুর বাজারের বিভিন্ন লেপ-তোষকের দোকানে সরেজমিনে দেখা যায়,শিমুল তুলা ও কাপাসি তুলা গুণগত মানের শীর্ষে তাই বেশি দাম এবং পাওয়া যায় না বললেই চলে তাই ফাইবার তুলা, ফোম তুলা ও গার্মেন্টস তুলাই বর্তমানে লেপ-তোষকের অন্যতম কাঁচামাল। মান ও প্রকারভেদে বর্তমানে সর্বনিম্ন ৫৫ টাকা থেকে শুরু করে প্রায় ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এসব তুলা। লেপ-তোষকের আকার-আকৃতি,কাপড় ও তুলার মান ও পরিমাণ অনুযায়ী দামের তারতম্য রয়েছে। প্রতিটি লেপের দাম সর্বনিম্ন একহাজার টাকা থেকে শুরু করে প্রায় তিন হাজার টাকা পর্যন্ত,একইভাবে প্রতিটি তোষকের দাম ৭০০ টাকা থেকে শুরু করে প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও এই কারিগররা লেপ-কম্বলের কভার,জাজিম এবং বালিশ তৈরি ও বিক্রয় করে থাকেন।
উপজেলার সখিপুর আবাসিক মহিলা কলেজ সড়ক এলাকার জাহিদ বেডিং ষ্টোরের মালিক ও লেপ-তোষকের কারিগর জাহিদুল ইসলাম জানান, আগের তুলনায় কাজের চাপ বেড়েছে। শীতের তিন মাস একটু বেশিই পরিশ্রম করতে হয়। শীত শুরুতেই বেশ কাজ পাচ্ছি। শীত বাড়ার সাথে সাথে আরও ব্যস্ততা বেড়ে যাবে। ক্রেতাদের সন্তুষ্টির লক্ষ্যে আমরা যত্ন সহকারে লেপ-তোষক তৈরি করে থাকি।
উপজেলা সদরের সখিপুর আবাসিক মহিলা কলেজ সড়কে অবস্থিত দুই ভাই বেডিং ষ্টোরের মালিক ও লেপ-তোষকের কারিগর শহিদুল ইসলাম বলেন, কয়দিন আগেও এত ব্যস্ত ছিলাম না। এখন খাওয়া দাওয়ার সময়ও পাইনা। লেপ-তোষক তৈরি করতে আসা মানুষ একটু বাড়তি সময় দিতে চায় না। এসেই বানিয়ে নিয়ে যাওয়ার তাগিদ শুরু করে। ক্রেতাদের খুশি করতে যতটা সম্ভব ভালো কাজ করার চেষ্টা করি। খুবই সীমিত লাভে ব্যবসা করি। খেয়ে পরে বাঁচতে পারলেই খুশি।
লেপ-তোষক তৈরি করতে আসা উপজেলার কালিদাস গ্রামের শামীম আল মামুন সহ বেশ কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, সময় বাঁচাতে আগেভাগেই লেপ-তোষক তৈরি করে নিচ্ছে তারা। এখনও পর্যন্ত আমার কাছে দাম সঠিক মনে হচ্ছে, শীত বাড়ার সাথে সাথে দাম বাড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এখন কারিগরদের কাছ থেকে দ্রুত সময়ে চাহিদামত নিতে পারছি। আমি প্রায় ৫০০০ টাকার মধ্যে একটি লেপ, একটি তোশক, একটি লেপের কাভার ও দুটি বালিশ ক্রয় করেছি,তুলা, কাপড়, দাম এবং কাজের গুণগত মানে আমি সন্তুষ্ট।
Leave a Reply