শৈলকূপায় দলিল জালিয়াতি করে সাবেক দুদক কমিশনারের জমি জবর দখলের চেষ্টা।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের শৈলকূপায় সাবেক জেলা দায়রা জজ ও দুদক কমিশনার মৃতঃ হাবিবুর রহমানের ওয়ারেশগনসহ তার পরিবারের পৈত্রিক ১১ শতাংশ জমি তারই আপন চাচাত ভাই দলিল জালিয়াতি করে জবর দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মৃত হাবিবুর রহমান উপজেলার ফুলহরি ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে।
এ বিষয়ে সাবেক জেলা দায়রা জজ ও দুদক কমিশনার মৃতঃ হাবিবুর রহমানের ছোট ভাই মোঃ জিল্লুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আমরা ৪ ভাই ২ বোন। আমার বাবা মারা গেছেন। আমার বড় ভাই সাবেক জেলা দায়রা জজ ও দুদক কমিশনার ছিলেন। বড় ভাই ও সেঝ ভাই তারাও মারা গেছেন। বাড়িতে আমি আর আমার স্ত্রী বসবাস করি। বাকি অন্যরা সবাই চাকরির সুবাদে বাহিরে থাকেন। তিনি বলেন, আমরা যৌথ পরিবার চাকরির সুবাদে পরিবারের অন্যান্যরা বাইরে থাকার কারনে গ্রামের জমাজমি সহ অন্যান্য সব কিছু তারই দেখাশুনা করতে হয়। তাদের পরিবারে চাষাবাদ করার মত নিজস্য কোন লোক না থাকায় সমস্ত চাষাবাদ যোগ্য জমি ভাগী-বর্গা দিয়ে খেয়ে আসছেন। এর মাঝে চাঁদপুর ১৩৩ নং মৌজার ১০৭ খতিয়ান যাহার আর,এস ১০৩৫ নং খতিয়ানের সাবেক ১০৬৯ ও হাল ২০৮৯ নং দাগটিতে পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দোকান ঘর তৈরি করবে বলে ঠিক করেন তারা। জিল্লুর রহমান বলেন, তার বাবারা তিন ভাই থাকায় হাল ২০৮৯ নং দাগে ৩২ শতাংশ জমির মধ্যে ৩ অংশের ১ অংশ হিসাবে তার বাবার মৃত্যুর পর এই ১১ শতাংশ জমি আর,এস রেকর্ড মূলে তারা অংশিদার হন এবং দীর্ঘ ১২ বছরের অধিক ভোগ দখল করে আসছেন। তিনি আরও বলেন,আমি ঐ জমিটিতে একটি দোকানঘর তৈরি করার প্রস্তুতি নিলে আমার আপন চাচা মৃতঃ রোজদার মন্ডলের ছেলে মোঃ রবিউল, মোঃ আশরাফুল, মোঃ মশিউর রহমান (মাষ্টার), মোঃ আলিউর ও মোঃ মফিজুল বাদী হয় এবং তারা দাবী করেন, তাদের বোন রোকেয়া খাতুন জমিটি ক্রয় করেছে। জমিটি পৈত্রিক সুত্রে অভিযোগকারী জিল্লুর রহমানদের ৪ ভাই ও ২ বোনের নামে রেকর্ড হয়। জিল্লুর রহমান বলেন, কার কাছ থেকে জমিটি কিনেছে জানতে চাইলে মশিউর রহমান (মাষ্টার) বলেন, জমিটি তার বোন রোকেয়া খাতুন আমার বোন তহমিনা'র কাছ থেকে কিনেছে, তবে দলিল দেখতে চাইলে তারা দেখাননি। তিনি বলেন, ১১ শতাংশ জমি ৪ ভাই ২ বোনের মধ্যে অংশ কাতান হলে আমার বোন তহমিনা পাবে ১ শতাংশ। সে কিভাবে ১১ শতাংশ জমি বিক্রি করে আর ক্রেতারা কিভাবে কেনে এটা তার বোধগম্য নয়।
বিষয়টি নিয়ে দু পক্ষের মধ্যে তোলপাড় শুরু হলে ক্ষতিয়ে দেখা গেছে, মশিউর মাষ্টারের বোন রোকেয়া বেগম জিল্লুর রহমানের বোন তহমিনার কাছ থেকে একটি রিলিজ বা না দাবী ত্যাগপত্র দলিল করে নিয়েছে। ঐ দলিলে দেখা গেছে মোট ২৬ টি দাগে ৪০ শতাংশ জমি মশিউর মাষ্টারের বোন রোকেয়া বেগম ক্রয় করেছে তহমিনার কাছ থেকে। যার মধ্যে ১৭৩২ ও ৩৬৭৮ মাত্র এই ২ দাগ থেকে ৩৫ শতাংশ জমি ভোগ দখল করে আসছে ক্রেতা রোকেয়া বেগম। কিন্তু নালিশি আর,এস ১০৩৫ খতিয়ানে তাদের দলিলে কোন দাগ নেই। তবে অভিযোগকারী জিল্লুর রহমান বলেন, দলিলে থাকা ১০৬৯ নং দাগটি নিজ হাতে কাটিয়া নালিশি ২০৭৯ নং দাগটি বসানো হয়েছে যা স্বচোখে ও দলিলের নকল দেখে প্রমানিত হয়েছে।
এ ব্যপারে বাদী পক্ষের দেওয়া ঝিনাইদহ বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর পিটিশন কেস তদন্তকারী ফুলহরি ইউনিয়ন ভুমি অফিসের দেওয়া প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বাদীর দলিলটি না দাবী ত্যাগপত্র। দলিলটি যাচায় করে তারা দেখেন আর,এস ২০৭৯ নং দাগটি দলিলে নাই। তবে দলিলে ২০৭৯ নং দাগটি ঘসামাজা করে দলিলে লেখা আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্তদের মধ্যে মোঃ মশিউর রহমান (মাষ্টার) বলেন, দখলের সুবিধার জন্য মোঃ জিল্লুর রহমান গঙ্গেরা তার বোন তহমিনাকে এই জমিটি ভোগ দখলে দিয়েছিলো। তিনি বলেন, তার বোন রোকেয়া খাতুনের কাছে তহমিনা ৪০ শতক জমি বিক্রি করে নিঃশর্তবান হয়।