শৈলকূপায় সচিন খোড়ার নামে জিনের ভয় দেখিয়ে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের শৈলকূপায় সচিন (খোঁড়া) নামে এক ফার্নিচার মিস্ত্রীর বিরুদ্ধে জিনের ভয় দেখিয়ে একে একে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত সচিন (খোঁড়া) উপজেলার হিতামপুর গ্রামের মৃতঃ মনমত মিস্ত্রীর ছেলে। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক আইনি সহযোগিতা পেতে ভুক্তভোগী মেহেবুবা সিদ্দিকা সীমা খাতুন রবিবার (১০ জানুয়ারি) শৈলকূপা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ভুক্তভোগী মেহেবুবা সিদ্দিকা সীমা খাতুন পৌরসভার আদর্শ পাড়া এলাকার মোঃ রফিকুল ইসলামের স্ত্রী।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী মেহেবুবা সিদ্দিকা সীমা খাতুন তার লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করে বলেন, বিগত ১০ মাস পূর্বে শৈলকূপা সোনালি ব্যাংকের কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে সোনালি ব্যাংকের সামনে থেকে অভিযুক্ত সচিন'র (খোঁড়া) সাথে তার পরিচয় হয়। সেসময় সচিন তাকে ডেকে বলে যে, তোমাকে আমার মেয়ের মত লাগে, আমি তোমাকে মেয়ের মত করে দেখতে চাই, তোমার বাসা কোথায় ? এভাবে আলাপ করতে করতে একপর্যায় সব সময় যোগাযোগ রাখার কথা বলে তার কাছ থেকে মোবাইল নাম্বার নেয়। সীমা খাতুন বলেন, ব্যাচারাকে প্রতিবন্ধী দেখে তার মায়া লেগে যায় এবং সে আমার কাছে চাওয়ার প্রেক্ষিতে সরল মনে বাসার ঠিকানাসহ মোবাইল নাম্বার দিয়ে দিই। তিনি বলেন, এরপর থেকে বিভিন্ন সময় সে ফোন করে এবং বাসায় আসে। এভাবে আলাপ চলার পর হঠাৎ একদিন সে আমাকে বলে যে, তার কাছে একটি জিন আছে, সে তোমাকে অনেক পছন্দ করেছে এবং তোমাকে নাকি তার মায়ের মত দেখা যায়, এজন্য সে তোমাকে তার মেয়ে বানাতে চায়। ভুক্তভোগী সীমা তার লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেন, প্রতারক সচিন (খোঁড়া) তাকে আরও বলেছে যে, এই জিনের অনেক টাকা পয়সা, হিরার মূর্তি, গহনাসহ অঢেল সম্পত্তি আছে যা তোমাকে দিয়ে দেবে এবং উক্ত সম্পত্তি পেতে হলে তোমাকে কিছু টাকা পয়সা খরচ করতে হবে। তিনি বলেন, এভাবে আমার মন আকৃষ্ট করা কথা বলে ঐ দিন প্রথম আমার কাছ থেকে নগদ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়। এর কিছুদিন যেতে না যেতেই আরও ১০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে চেয়ে বলে কয়েক দিনের মধ্যেই সব সম্পত্তি দিয়ে দেওয়া হবে। যার বিকাশ ০১৭৯৩৬০৯৪৩৩ নাম্বারে সর্বশেষ ২১০০/= টাকা নেন প্রতারক ঐ সচিন (খোঁড়া)।
ভুক্তভোগী সীমা বলেন, পরবর্তীতে নগদে ও অন্যান্য বিকাশের মাধ্যমে সর্বমোট ১৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে এবং বলেন, এই কথা তাদের দুজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখার জন্য নইলে জিনেরা তার স্বামী সন্তানসহ এমনকি তারও মেরে ফেলতে পারে।
ভুক্তভোগী সীমা বলেন, তিনি বিভিন্ন এনজিও ঋণ বাবদ ৮ লাখ, মায়ের বাড়ি থেকে জমি বিক্রয় বাবদ ৩ লক্ষ তার নিজের স্বর্ণালঙ্কার বাবদ ২ লক্ষ এবং আত্মীয়-স্বজনদের নিকট হইতে ২ লক্ষ টাকা এসবকিছু সে আমার কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে। তিনি আরও বলেন, প্রথমে তার কথায় আকৃষ্ট হয়ে এবং পরে জিনের হাত থেকে পরিবারকে বাঁচাতে এখন আমি সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব অবস্থায় দুঃসহ জীবন যাপন করছি।
অভিযোগের বিষয়টি জানতে সরেজমিনে অভিযুক্ত সচিন (খোড়া) এর সাথে কথা হলে তিনি টাকার কথা স্বীকার করে বলেন, আমার কাছ থেকে কাঠ নেওয়ার জন্য ৮০ হাজার টাকা বায়না করেছে। এই বায়নার টাকা নেওয়ার জন্যই আমি তার বাসায় গিয়েছিলাম। তবে জিনের কথা বলে টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি অস্বীকার করেছেন।
বিষয়টি জানতে শৈলকুপা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর আলমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে, যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।