সোহেল মিয়া, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ)
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা কামাল হোসেন নিজের অল্প জমিতে সবজি চাষ করে সাবলম্বী হওয়ার স্বপ দেখছেন। অন্যের প্রতিষ্ঠানে চাকরির পিছনে না ঘুরে নিজেই মনোনিবেশ করেন সবজি চাষে। এভাবেই শুরু হয় কামাল হোসেনের আত্মকর্মসংস্থান। সবজি চাষ করে এখন লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। তার কৃষি খামারের ওপর নির্ভর করে গ্রামের আরো কয়েকটি পরিবারের কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়েছে। তিনি উপজেলার বোগলাবাজার ইউনিয়নের (তেরাকুরি ) গ্রামের মৃত আব্দুল হারিছ এর
সন্তান।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বাংলাবাজার -বোগলাবাজার সড়কের বাঘমারা নদীর পাশেই গড়ে উঠেছে কামাল হোসেনের সবুুজ কৃৃষি খামার। সড়কের পূর্ব পাশের এক খন্ড সবুজ শাকসবজির সমারোহ নজর কাড়ছে পথচারীদের। ৭৫ শতাংশ জমি জুড়ে শীতকালীন মৌসুমী সবজি বাধা কপি, টমেটো, লালশাক, বেগুন, কাঁচা মরিচ, চাষ করা হয়েছে। আশানুরূপ ফলন হয়েছে বাধা কপি ও টমেটোর। টমেটো গাছের শাখায় শাখায় দুলছে অসংখ্য টমেটো। সবকটি গাছেই ফুটেছে হলদে ফুল। আর মাত্র ৫-৭ দিনের মধ্যেই এসব টমেটো পাকা ধরবে। এই সময়ের মধ্যেই টমেটো বাজারজাত করা হবে। এক পাশে রয়েছে বাধা কপির ক্ষেত। এখানে পোকামাকড় ও রোগবালাই দমনে পরিবেশ বান্ধব কৌশলের প্রয়োগ ঘটাচ্ছেন তিনি।
আলাপকালে কামাল হোসেন প্রতিবেদককে জানান, মাত্র ২০ হাজার টাকা পুঁজি খাটিয়ে
কুমিল্লা থেকে অটাম জাতীয় বাধা কপি ও সুরক্ষা জাতীয় টমেটোর বীজ নিয়ে সবজি চাষ শুরু করেন কামাল হোসেন। এই পর্যন্ত সব মিলিয়ে সবজি চাষাবাদে প্রায় ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে তার। বর্তমান বাজারমূল্য ঠিক থাকলে এখানের উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে প্রায় ২-৩ লাখ টাকা লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
কৃষক পরিবারের সন্তান হিসেবে শৈশব থেকেই কৃষির প্রতি আগ্রহ ছিলো। বাপ-দাদাদের পুরাতন পেশা কৃষি থেকে গ্রামের অনেকেই হাত গুটিয়ে নিলে ও পিছু পা হয়নি কামাল হোসেন। প্রাচীনতম এই পেশায় অর্থ উপার্যন করে প্রতিবছর লক্ষাধিক টাকা আয় করাসহ
সতেজ ফরমালিন মুক্ত সবজি উৎপাদন করে পারিবারিক চাহিদা মেটানো ও দেশের মানুষের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি কৃষিকাজ করে স্বাবলম্বী হয়ে জাতীয় পর্যায়ে অবদান রাখছে। কৃষি নিয়ে অপার সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
তিনি জানান, কৃষির উপর সরকার কৃষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করলেও তা থেকে বঞ্চিত ঐসব এলাকার কৃষকরা। যার ফলে কৃষি কাজের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে ধারনা না থাকায় লাভের চেয়ে ক্ষতির সমুক্ষিন হয়েছে অনেকে। যার ফলে কৃষিকাজ থেকে নিজেকে ফিরিয়ে নিয়েছে অধিকাংশ কৃষক। কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে যদি প্রশিক্ষণের পাশাপাশি দিকনির্দেশনামূলক সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে কৃষি ফলনে তাদের আগ্রহ বাড়বে এবং লাভোবান হওয়ার স্বপ্ন দেখবেন।
মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে দোয়ারাবাজার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মহসিন জানান, কৃষি কাজে আগ্রহ বাড়ানোর জন্য আমরা কৃষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি এবং মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ও অধিকাংশ কৃষি কর্মকতাদের সব ধরনের দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ দিচ্ছি। তিনি যেভাবে কৃষি খামার গড়ে তুলেছেন তা প্রশংসনীয়। উনি আমাদের কৃষি অফিসে এসে যোগাযোগ করলে তার এই কৃষি খামার সম্প্রসারণে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব।
Leave a Reply