চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
আগামী নির্বাচনে নমিনেশন বঞ্চিত হওয়ার আশংকায় দিশেহারা রাউজানের এম,পি ফজলে করিম চৌধুরী। বর্তমানে কোন ইস্যু না থাকা সত্বেও মুনিরীয়া বিরোধী আন্দোলনের নাম দিয়ে প্রশাসনের অনুরোধ প্রত্যক্ষান করে রাউজানের শান্ত পরিবেশকে উত্তপ্ত করার অপ কৌশল হাতে নিয়েছে। সূত্রমতে উক্ত কৌশলের কারণে সরকারি সাংসদ হিসাবে আগামী সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত মাটে মুনিরীয়াকে থাকতে না দেওয়া এবং সরকারি শীর্ষ মহলে নিজেকে আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী হিসাবে জাহির করা।
নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার আশংকায় তার ছেলে কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত উত্তর রাউজান সেন্ট্রাল ভয়েসকে রাউজানের ১৩টি ইউনিয়নে সাংগঠনিক রুপ দেওয়ার মহা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সম্প্রতি তার ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরী উক্ত ১৩টি ইউনিয়নের ছাত্রলীগ, যুবলীগের তাদের একান্ত অনুসারী কিছু লোককে দিয়ে সেন্ট্রাল ভয়েস এর ১৩টি ইউনিয়ন কমিটি গঠন করে ও তাদের সাথে সেনসিটিভ বিষয়ে মতবিনিময় করে। সূত্রটি আরো জানায়, রাউজানের এম,পি তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে সরকারের শীর্ষ মহলে আস্থা হারিয়েছেন। অতএব তাকে যদি আগামীবার নমিনেশন দেওয়া না হয়। তাহলে রাউজানের সেন্ট্রাল ভয়েস এর উপর ভিত্তি করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবে বলে তাদের ঘনিষ্ঠ জনকে জানিয়েছে। এ বিশেষ উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়ে বর্তমানে আওয়ামীলীগ যুবলীগ ছাত্রলীগকে বাদ দিয়ে ১৩টি ইউনিয়নে সেন্ট্রাল ভয়েসকে প্রতিষ্ঠিত করার কর্মকৌশল নির্ধারণ করেন। যা আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর জন্য বিরাট এক চ্যালেঞ্জ হতে পারে। তাছাড়া রাউজানের এম,পি ফজলে করিম চৌধুরীর পরিবারটি ১৯৭১ সাল থেকে চট্টগ্রাম সহ সারা বাংলাদেশে একটি রাজাকার ও জুলুমবাজ পরিবার হিসেবে চিন্হিত। তার বড়ভাই ( আপন চাচাতো ভাই) সাকা চৌধুরীর হাত ধরে একসময় রাউজানের রাজনীতিতে উত্থান এই এম,পি ফজলে করিম চৌধুরীর। সাকা চৌধুরী কিলিং মিশন সহ অস্ত্র আমদানি রপ্তানি, চাঁদাবাজি জুলুমবাজি সবকিছুর প্রধান ছিলেন এম,পি ফজলে করিম চৌধুরী। যার হাতে অসংখ্য অগণিত ছাত্রলীগ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীর রক্ত রণ্জিত হয়েছিলো। একসময় দুই ভাইয়ের অন্ত কোন্দলের কারণে হঠাৎ রাউজান আওয়ামীলীগে যোগদান করেন তিনি। সূত্রমতে ঐ সময় তার ভাই সাকা চৌধুরীর শক্ত কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় কৌশল গত কারণে তার মতো ক্যাডারকে রাউজান আওয়ামীলীগে সুযোগ দেওয়া হয়েছিলো। সুযোগ পেয়ে প্রথমদিকে আওয়ামীলীগের প্রতি প্রেম দেখালেও পরবর্তীতে সাকা চৌধুরীর রুপ নিয়ে রাউজান আওয়ামীলীগকে ধ্বংস করে তথা প্রকৃত আওয়ামীলীগারদের রাউজান থেকে বিতাড়িত করে করিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে দলের কোন কাউন্সিল হয়না, তার নির্ধারিত ব্যক্তিই সবকিছু। রাউজানের ইউনিয়ন ও পৌরসভায় কোন নির্বাচন হয়নি তার মনোনীত ব্যক্তিরাই জনপ্রতিনিধি। কোটি টাকার বিনিময়ে সে জনপ্রতিনিধি পছন্দ করে মূলত সবগুলো পকেট কমিটি। স্বাধীনতার এতবছর পরে এসেও রাজাকার পরিবারের হাত থেকে মুক্তি মিলেনি রাউজানবাসীর। ঐতিহ্যবাহী আওয়ামীলীগের সুনামকে করেছে চূর্ণবিচূর্ণ।
সম্প্রতি সামান্য একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুনিরীয়া তবলীগকে জঙ্গির ট্যাগ লাগানোর অপচেষ্টা চালিয়ে এবাদতখানা, অনুসারীদের ঘরবাড়ি ভাংচুর, অনুসারীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেছে সে। অথচ বিরোধের মাত্র ১৫ দিন আগে সে মুনিরীয়া তবলীগের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে বলে স্বাধীনতা স্বপক্ষের শক্তি মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ। কাগতিয়া মাদ্রাসাতে স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়েছে আমি রাউজানের কোন মাদ্রাসাতে স্বাধীনতা দিবস পালন করতে দেখিনি সহ ইত্যাদি। কিন্তু বর্তমানে সামান্য ঘটনার জের ধরে রাউজান আওয়ামীলীগকে ইচ্ছে মতো ব্যবহার করে ও জিম্মি করে মুনিরীয়ার বিরুদ্ধে দাড় করানোর প্রাণপণ চেষ্টা করছে।
মুনিরীয়া তবলীগের হাজার হাজার অনুসারী আছে যারা আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়, তারা ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত যে কারণে তারা গত ১৫ আগস্ট টুঙ্গি পাড়া গিয়ে জাতিরজনকের মাজারে জিয়ারত ও খতমে কোরআন আদায় করেন। কিন্তু রাউজানের এম,পি তাদের টুঙ্গি পাড়া যাওয়াকে কোনভাবে মেনে নিতে পারছেনা ও রাজাকার বলে গালিগালাজ করছে। বস্তুত: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে ২০১৯ সালের ১৬ ই ডিসেম্বরে প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় ফজলে করিমের পিতা ফজলুল কবিরের নাম ২০৩, ৫৯৫ এবং ৬০৭ নম্বরের তিন তিনবার লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। নিজেদের রাজাকার পরিচয়কে আড়াল করার জন্য অন্যকে রাজাকার সম্বোধন করা যে হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য তা এখন একেবারে স্পষ্ট।
এছাড়াও রাউজানের বেশিরভাগ মানুষ মুনিরীয়ার অনুসারী ও আওয়ামীলীগ এর শীর্ষ মহলের সাথে মুনিরীয়ার সাথে সু সম্পর্ক থাকায় তিনি নমিনেশন না পাওয়ার আশংকা থেকে মুনিরীয়া বিরোধী আন্দোলন করছে বলে একটি সূত্র থেকে জানা গেছে। সূত্র থেকে আরো জানা যায় মুনিরীয়ার কেউ নমিনেশন পেলে বিপুল ভোটে জয় লাভ করবে সেটা ফজলে করিমের শতভাগ বিশ্বাস। যে কারণে মুনিরীয়ার পিছনে ওঠে পড়ে লেগেছে যাতে আগামী নির্বাচনে মুনিরীয়া থেকে কেউ নমিনেশন না পায়। মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের সাথে বিরোধ না করতে প্রশাসন এর পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হলেও সে কিছুই মানছেনা। সে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলে আওয়ামীলীগ থেকে নমিনেশন না পেলেও সে রাউজান সেন্ট্রাল ভয়েস এর উপর ভর করে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবে।