আজ ১৫ জুলাই সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের হত্যার এক মাস হলো।গত ১৪ জুন রাতে পেশাগত কাজের শেষে বাড়ি ফেরার পথে জামালপুরের বকশীগঞ্জের পাটহাটি এলাকায় হামলার শিকার হন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। পরদিন ১৫ জুন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।নাদিম হত্যার এক মাস হলেও মামলার এজাহারে থাকা ২২ আসামির মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।অন্য ১৭ জনকে পুলিশ এখনো ধরতে পারেনি।
এই ঘটনায় গত ১৭ জুন ২২ জনের নামে এবং অজ্ঞাত পরিচয় ২০-২৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন তাঁর স্ত্রী মনিরা বেগম। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে মোট ১৭ জন আসামি। এর মধ্যে প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের বরখাস্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুসহ চারজন আদালতে দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড শেষে কারাগারে রয়েছে ১৭ জন আসামি। সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলায় এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে প্রধান আসামি বাবুর ছেলে রিফাত, সহযোগী শামিম খন্দকার, রুবেল মিয়া, লিপন মিয়া,। ইসমাইল হোসেন স্বপন মন্ডল, রাকিবুল্লাহ রাকিব, গাজী ওমর আলী, শরিফ মিয়া, ওমর ফারুক সুরুজ মিয়া, বাদশা মিয়া, আবু সাঈদ, আমানউল্লাহ , সোলাইমান, রফিকুল ইসলাম, শেখ ফরিদসহ এজাহারভুক্ত ১৭ জন আসামি। নিহত সাংবাদিক নাদিমের মেয়ে রাব্বিলাতুল জান্নাত বলেন আমরা সবাই ক্ষুব্ধ।
আমার বাবাকে হত্যার এক মাস হলেও এজাহারভুক্ত ১৭ আসামিকে এখনো আইনের আওতায় আনা হয়নি। তারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে, বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা ক্ষুব্ধ। আমাদের নিজেদের জীবনের নিরাপত্তাও নেই।নিহত সাংবাদিক নাদিমের মামা বাবুল হোসেন বলেন,পুলিশ তো আসামি ধরছে না। কার ছত্রচ্ছায়ায় যে কী হচ্ছে, সেটা তো বুঝতে পারছি না।আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চাই। আসামিদের না ধরা পর্যন্ত আমাদের জীবনের নিরাপত্তা নেই।নিহত সাংবাদিক নাদিমের শ্বশুর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন,একজন যুদ্ধাপরাধী ননীর ছেলে রাকিবের হাতে খুন হয়েছে সাংবাদিক নাদিম। ননীর ছেলে যদি আমার ছেলে সাংবাদিক নাদিমকে হত্যার সাহস পায়, তাহলে আমি মুক্তিযোদ্ধা হয়ে কী পেলাম। নিহত সাংবাদিক নাদিমের বড় ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন রিফাত বলেন, এই ঘটনার অন্তরালে বড় রাঘব বোয়াল রয়েছে। তাঁদের নাম আসতে পারে। তাই এই বড় রাঘব বোয়ালরাই আসামিদের লুকিয়ে রেখেছেন। বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহিন আল আমিন বলেন,মামলাটি যখন ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর হলো, তখন আমরা আশাবাদী ছিলাম।
পুলিশের চেয়ে ডিবি আরো ভালো ভূমিকা পালন করবে এবং খুব দ্রুত সব আসামি গ্রেপ্তার হওয়ার একটি সুযোগ হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা এখনো ভালো কোনো খবর পাইনি।তিনি বলেন, এখনো আমরা আশঙ্কা করছি যে তারা গ্রেপ্তার হবে কি হবে না। সাংবাদিক নাদিম হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে এজাহারে নাম আছে মাহমুদুল আলম বাবু, রেজাউল করিম, মো. মনিরুজ্জামান, মো. মিলন মিয়া ও মো. গোলাম কিবরিয়ার। এই পাঁচজন ছাড়া বাকি আসামিদের নাম এজাহারে নেই। অর্থাৎ এজাহারে থাকা ২২ জনের মধ্যে পাঁচজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পেরেছে। অন্য ১৭ জনকে পুলিশ এখনো ধরতে পারেনি। এ বিষয়ে জামালপুর ডিবি পুলিশের ওসি আরমান আলী বলেন, ‘আমরা রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছি এই আসামিদের গ্রেপ্তার জন্য।