এএইস রনি দক্ষিণ সুরমা প্রতিনিধিঃ
বিয়ের নামে বহু পুরুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ-সম্পদ লুট,প্রতারণা-জালিয়াতি ও নিরীহ লোকদের মামলায় ফেলে হয়রানিসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ উঠেছে সিলেটের বহুলালোচিত নারী মিনারা বেগম চৌধুরী ওরফে প্রতারক মিনারার বিরুদ্ধে। তার ফাঁদে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন একাধিক ব্যক্তি।সিলেটে নারীকেন্দ্রিক অপরাধ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন এই নারী নেত্রী।
রয়েছে মিনারার ‘শক্তিশালী সিন্ডিকেট’ মাদক সেবন, বিক্রি,দেহ ব্যবসা প্রতারণা ইত্যাদি অপরাধে সক্রিয় নারী নেত্রী মিনারা। রাজনীতির আড়ালে সব অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করেন মিনারা। আলোচিত পরিমণি,পিয়াসা,হেলেনাদের নিয়ে যখন সারা দেশে তোলপাড় ঠিকই তখনই সিলেটে তাদের থেকেও আরো জঘন্য এক নারী অপরাধী মিনারা খোজ পাওয়া যায়।
সুত্র জানা গেছে,মিনারা যৌবন পেরিয়ে এখন মধ্য বয়সী। পাপ রাজ্যে অনেক আগে থেকে তার বিচরণ। অনেকবার পত্রিকার শিরোনামও হয়েছেন। মিনারাকে নিয়ে ক্ষোভের অন্ত নেই ভুক্তভোগীদের। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন থেকে সিলেটে ও সিলেটের বাহিরে তারা অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত। সর্বশেষ তার রঙ্গশালা ছিলো শহরতলীর ঘাটের ছটিতে। সেখানে ফ্ল্যাট বাসা নিয়ে নিজের আস্তানা গড়ে তুলে দাপটের সঙ্গে করেন অসামাজিক কাজ। শহর থেকে মোটরসাইকেল করে যুবকরা এ বাসায় আসতো। চলতো ইয়াবা সেবন,বিক্রি ও অসামাজিক কার্যকলাপ। সেখানে রাতবিরাত নেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটিয়ে ওই যুবকরা ভোরে চলে যেতো। এলাকাবাসী এর প্রতিবাদ করলে মিনারা’র বাহিনীর সদস্যরা তাকে হুমকি-ধমকি প্রদান করতো।
সম্প্রতি গভীর রাতে সেই আস্তানায় হানা দেয় পুলিশ উদ্ধার করা হয় মাদকসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র।। এসময় ১৬ খদ্দেরসহ যুব মহিলা লীগ নেত্রী মিনারা,মহিলা পার্টির নেত্রী হেনা ও লিমা নামের তরুণীকেও গ্রেফতার করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় লিমা নামের এই মেয়েটিকে দিয়ে জোর করে অনৈতিক কাজ করাতো অনেক কস্টে ঐ মেয়ে তার কাছে থেকে পালিয়ে গিয়ে রক্ষা পায়। এর আগে ২০১৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী দুপুর ২টায় নগরীর জিন্দাবাজার এলাকার ওয়ানওয়ে রাস্তা দিয়ে রিকশা নিয়ে যেতে চাইলে মিনারাকে বাধা দেন ট্রাফিক কনস্টেবল দেলোয়ার। তখন নিজেকে জেলা যুব মহিলা লীগের অর্থ সম্পাদিকা পরিচয় দিয়ে ওই ট্রাফিক পুলিশের ওই সদস্যের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এক পর্যায়ে মিনারা কনস্টেবল দেলোয়ারকে চড় মারেন। পরে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তবে এ কৃতকর্মের জন্য মিনারা ক্ষমা চাইলে পুলিশ তাকে রাতে ছেড়ে দেয়। এখন টিকটক ভিডিওতে কাজ করেন তিনি। পাশাপাশি রাজনীতি।এতে রাতারাতি পরিচিতি পান।
নারী নেত্রী মিনারার ছোবলে আক্রান্ত এক ভুক্তভোগী জানান,মিনারা বেগম চৌধুরী ওরফে মিনারা এ পর্যন্ত ১৪ এর অধিক বিয়ে করেছেন। বিয়ে করে কিছুদিন পর সেই স্বামীকে ছেড়ে দেওয়া এবং তার কাছ থেকে দেনমোহরের টাকাসহ নানা কৌশলে বাড়ি-গাড়ি হাতিয়ে নেওয়াই তার ব্যবসা। মিনারা বেগমের মূল টার্গেট সম্পদশালী ব্যবসায়ী,উচ্চপদস্থ চাকরিজীবী ও প্রবাসী পুরুষ।প্রথমে টার্গেট নিশ্চিত করে তিনি ধীরে ধীরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে নিজ দেহের সৌন্দর্য ও কথা মালার মারপ্যাঁচে আটকে ফেলেন টার্গেটকৃত পুরুষদের। মিনারা বেগম চৌধুরী বয়স আনুমানিক ৪৭ বছর। চেহারা দেখলে বুঝার উপায় নাই তার এতো বয়স। দেখতে বেশ সুন্দরী ও স্টাইললিস্ট নারী। তিনি নিজেকে ব্রিটিশ নাগরিক বলে পরিচয় দেন। পাত্রীর ভূমিকায় অভিনয়ে তার বেশ দক্ষতা রয়েছে। তাকে ঘিরেই সিলেটে একটি প্রতারক চক্র রয়েছে। আর এই চক্রটির কাছে প্রতিনিয়ত হয়রানী ও প্রতারিত হচ্ছে বিভিন্ন মানুষ।
তিনি সিলেট সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্থ এলাকার ফরমুজ আলী মেম্বারের মেয়ে। বর্তমানে মিনারা সিলেট শহরতলীর খাদিম নগর ইউনিয়নের শাহপরান এলাকার আলমদিনা আবাসিক এলাকার ৩ নং রোডের ১ নং বাসার ১১ নং ফ্লাটে বসবাস করেন। মিনারা বেগম জেলা যুব মহিলা লীগের অর্থ সম্পাদক। বাংলাদেশী নাগরিক হলেও পরিচয় দেন ব্রিটিশ সিটিজেন আবার কোন সময় আমেরিকান,অথবা দুবাই,ইন্ডিয়ার নাগরিক হিসেবে। তার কাছে রয়েছে কয়েকটি ভূয়া পাসপোর্ট।
প্রভাবশালীদের যোগসাজশে নারী নেত্রী মিনারা বেগম প্রতারণার পাহাড় গড়েছেন। মাদক সেবন, মাদক ব্যবসা, ফ্লাটে দেহ ব্যবসা, হুমকি, লন্ডনী কনে সেজে প্রতারণার ছবি, ভিডিওসহ অসংখ্য অভিযোগের প্রমাণ রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। বর্তমানে শাহপরান আল মদিনা এলাকায় ৩ নং রোডের ১ নং বাসার ১১ ফ্লাটে একটি ফ্লাট থেকেই এসব অপকর্ম করে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে মিনারার বক্তব্য নিতে চাইলে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তথ্যসূত্র সাংবাদিক রায়হান হোসেন মান্না।