সিলেটে তৃতীয় দিনের মতো চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছে সিলেট মেট্রপলিটন পুলিশের সদস্যরা।
নগরীর বিভিন্ন সড়কে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় নগরীতে তেমন একটা মানুষের উপস্থিতি নেই।
কয়েকটি রিকশা বা সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ কয়েকটি জরুরি পণ্য পরিবহনের গাড়ি ছাড়া দেখা যায়নি আর কিছুই। খুব প্রয়োজনে যে কয়েকজন মানুষ বেরিয়েছেন তারাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে দেখা গেছে।
শুক্রবার (১৬এপ্রিল) সিলেট নগরীর দরগাহ গেইট,আম্বরখানা, চৌহাট্টা,রিকাবীবাজার, জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, তালতলা,হুমায়ুন রশিদ চত্বর, চন্ডিপুল, জিতু মিয়ার পয়েন্ট, মদিনা মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না। তবে যে বা যারা গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছেন তাদেরকে পড়তে হচ্ছে পুলিশের জেরারমুখে।
তবে বেলার বাড়ার সাথে সাথে নগরীতে রিকশা,অটোরিকশা,মাইক্রোবাস,প্রাইভেটকার চলাচল বাড়তে শুরু করে। তবে সেখানে প্রয়োজন ছাড়া বা নির্দিষ্ট কারণ না দেখাতে পাড়ায় গুনতে হয়েছে জরিমানা। এছাড়াও গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশ মামলা লিখতে দেখা গেছে।
এদিকে এই পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে ‘মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে বের হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ। অবশ্য কোনো কোনো পেশার লোকজনের ক্ষেত্রে এই পাস নেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল না। তবে পুলিশ এমন অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, যারা জরুরি সেবার আওতায় পড়েছেন। এ নিয়ে ‘ভুল-বোঝাবুঝির’ ঘটনাও ঘটছে।
গতকাল সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়েছে সর্বাত্মক লকডাউন চলাকালে সিলেটে ১৮ শ্রেনিপেশার লোকজন তাদের কর্মস্থলে আসা-যাওয়া করতে ‘মুভমেন্ট পাস’ এর প্রয়োজন নেই। শুধু পরিচয়পত্র প্রদর্শন করলেই চলবে।
তারা হলেন: ১. ডাক্তার ২. নার্স ৩. মেডিকেল স্টাফ ৪. কোভিড টিকা/চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি/স্টাফ ৫. ব্যাংকার ৬. ব্যাংকের অন্যান্য স্টাফ ৭. সাংবাদিক ৮. গণমাধ্যমের ক্যামেরাম্যান ৯. টেলিফোন/ইন্টারনেট সেবাকর্মী ১০. বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী ১১. জরুরি সেবার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা/কর্মচারী ১২. অফিসগামী সরকারি কর্মকর্তা ১৩. শিল্পকারখানা/গার্মেন্টস উৎপাদনে জড়িত কর্মী/কর্মকর্তা ১৪. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ১৫. ফায়ার সার্ভিস ১৬. ডাকসেবা ১৭. বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও জ্বালানির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি/কর্মকর্তা ১৮. বন্দর–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/কর্মকর্তা
এব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, পুলিশ এখন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। প্রতিদিনই পুলিশ অভিযান চলছে। সেই সাথে যারা লকডাউন না মেনে বাহির হয়েছেন তাদেরকে জরিমানা করছে পুলিশ।
এছাড়া যানবাহন নিয়ে যারা বের হচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করছে পুলিশ। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে সরকারের দেয়া নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।