সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :
করোনা মহামারি কালে দীর্ঘ ১৭ মাস পর রবিবার সারা দেশের ন্যায় সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করা হলেও উপজেলার বোগলাবাজার ইউনিয়নের আলমখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি তালাবদ্ধ থাকতে দেখা গেছে। সকাল থেকে দুপুরউব্দি স্কুলে দেখা মেলেনি কোনো শিক্ষক-শিক্ষার্থীর। টানানো হয়নি জাতীয় পতাকা।
খবর পেয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা দুপুর ১২টায় সরেজমিনে গিয়ে আলমখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তালাবদ্ধ দেখতে পান। এসময় দৈনিক হাওরাঞ্চলের কথা পত্রিকার দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি এম এ মোতালিব ভূঁইয়া তালাবদ্ধ স্কুলের ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে দিলে ক্ষুব্ধ হন স্কুলের শিক্ষকরা। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই গণমাধ্যমকর্মীরা স্কুলে থাকাবস্থায় ওই স্কুলের সহকারি শিক্ষক আল আমিন সংবাদকর্মী মোতালিব ভূঁইয়ার মুঠোফোনে কল দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করার হুমকি দেন। এঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে দোয়ারাবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। জিডি নম্বর ৪৯৮/২১।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যালয় তালাবদ্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থীকে বইখাতা নিয়েও স্কুল আঙিনা থেকে বাড়িতে ফিরে যেতে দেখাগেছে । আবার অনেকেই বলেছেন সকালে কয়েকজন শিক্ষক এসে দায় এড়াতে মাস্ক বিতরণ করেই স্কুল তালাবদ্ধ রেখে চলে যান।
এদিকে স্কুলের সহকারি শিক্ষক কর্তৃক সংবাদকর্মী মোতালিব ভূঁইয়াকে লাঞ্ছিত করার হুমকি দেওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা। রবিবার দুপুরেই এ ঘটনায় দোয়ারাবাজারের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ জরুরী বৈঠকে বসেন এবং হুমকিদাতা শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দোয়ারাবাজার থানা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের অবহিত করেন। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলে জানান সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
এব্যাপারে জানতে চাইলে আলমখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফিরোজ মিয়া বলেন, 'স্কুল খোলা হয়েছে। সাংবাদিকের সাথে সহকারী শিক্ষক আল-আমিনের মোবাইল ফোনে অসদাচরণের বিষয়ে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।'
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পঞ্চানন কুমার ছানা বলেন, 'বিদ্যালয় তালাবদ্ধ রাখার খবর পেয়েছি। আমরা এবিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'
দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবদুলাল ধর বলেন, 'শিক্ষক কর্তৃক সংবাদকর্মীকে শারীরিক লাঞ্ছিতের হুমকি দেওয়ার বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আমরা প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'