হত্যা মামলা ডাহা মিথ্যা,বাবুনগরী
আল্লামা শফীর মৃত্যুর মামলার তদন্তে পিবিআই হাটহাজারী মাদরাসায়
এইচ.এম.আব্বাস
হাটহাজারী(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি:
হাটহাজারী মাদ্রাসার সাবেক মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামীর সাবেক প্রতিষ্ঠাতা আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী (র.)মৃত্যুতে পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে দায়ের করা মামলার তদন্ত করতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই) এর বিভাগীয় পুলিশ সুপার পিবিআই মোঃ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসায় এসেছে। মঙ্গলবার(১২জানুয়ারী)সকাল ১১টা ২০মি. মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালনায় কার্যালয়ে ঢুকে মাদ্রাসা শিক্ষা পরিচালক ও হেফাজতের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরীর সাথে দুপুর ১টা ১০ মিনিট পর্যন্ত কথা বলেন। মামলার তদন্তের স্বার্থে আল্লামা বাবুনগরীর কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য জানতে চেয়েছেন। এসয় তিনিও বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে উত্তর দিয়েছেন বলে তদন্ত কর্মকর্তারা জানান। তবে উপস্থিত মিডিয়াকর্মীদের তদন্তের স্বার্থে শিক্ষা পরিচালনা কার্যালয় থেকে বের করে দেন এরপরে কার্যালয়ের দরজার গ্লাস বন্ধ করে বাবুনগরীর সাথে পিবিআই এর কর্মকর্তারা কথা বলেন। এসময় মামলার অভিযুক্ত কোন ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন না। তবে অভিযুক্ত দুইজন হুজুরের খাদেম উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে কথা বলা শেষে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর কক্ষ পরিদর্শন করেন পিবিআই-এর কর্মকর্তাগণ।
প্রায় ১ঘন্টা ৪০মিনিট শিক্ষা পরিচালনা কার্যালয়ে বৈঠকের পর বেরিয়ে হেফাজতের আমীর ও মাদ্রাসা শিক্ষা পরিচালক আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন গত সংবাদ সম্মেলন লিখিতভাবে আল্লামা শফীর মৃত্যুর বিষয়ে যে কথাগুলো বলা হয়েছে পিবিআই সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে সে কথাগুলো বলেছি আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু স্বাভাবিক, যারা মামলা করেছে হত্যা করা হয়েছে বলে সব মিথ্যার ওপরে মিথ্যা, ডাহা মিথ্যা কথা। তদন্তের বিষয়ে কোন কিছু মন্তব্য আছে কিনা জানতে চাইলে,আমার কিছু বলার নাই যাহা বলেছি পূর্বের সংবাদ সম্মেলন জানিয়ে দিয়েছি।
এদিকে কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পরে সাংবাদিকদের বিভাগীয় পুলিশ সুপার পিবিআই মোঃ ইকবাল হোসেন জানান,আল্লামা আহমদ শফী'র পরিবারের পক্ষ থেকে হুজুরের শালা মইনুদ্দিন বিজ্ঞ আদালতে একটি হত্যা মামলা রুজু করেছেন। আদালত পিবিআইকে দায়িত্ব দিলে গুরুত্বসহকারে তদন্ত করতে পিবিআইয়ের একটি টিম মাদ্রাসায় তদন্ত করতে এসেছি। মামলার এজাহারে যা কিছু লেখা আছে তদন্তের স্বার্থে গুরুত্বসহকারে যাচাই-বাছাই করব,সাক্ষী নেব, আলামত সংগ্রহ করবো।আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী যে সময় বেঁধে দিয়েছে তার মধ্যে তদন্ত শেষ করার চেষ্টা করব। তদন্তের স্বার্থে লাশ উত্তোলন করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এখনো তেমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে তিনি জানান।
এ সময় জেলা পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান,সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ-আল-মাসুম হাটহাজারী মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম,পিবিআই ইন্সপেক্টর এনায়েত সহ পিবিআই ও জেলা পুলিশের সঙ্গীয় ফোর্স উপস্থিত ছিলেন। হাটহাজারী মাদ্রাসার পক্ষ থেকে শিক্ষা পরিচালক ও হেফজতের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী মাওলানা শেখ আহমদ মাওলানা ইয়াহিয়া মাওলানা আহমদ দিদার কাসেমী মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী ও মাওলানা ওমর প্রমুখ।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০ ইং বিকেলে ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন আল্লামা শাহ আহমদ শফি। মাদ্রাসা ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে তিনি এই সময় এক প্রকার অবরুদ্ধ ছিলেন। হেফাজতে ইসলামের একাংশ ও তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, আল্লামা শফিকে মানসিক চাপে ফেলে, ঔষধ ও চিকিৎসা না দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে এ ব্যাপারে দুটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। গত ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবলু কুমার দে এর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন আল্লামা শফীর শ্যালক মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। উক্ত হত্যা মামলায় ৩৬জনকে আসামী করা হয়েছে।