হাকিকুল ইসলাম খোকন ,যুক্তরাষ্ট্র সিনিয়র প্রতিনিধিঃ
গত বুধবার রাতের আঁধারে প্রেসিডেন্ট জোভেন মোসে খুন হওয়ার পর অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে হাইতিতে। দেশটির রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এমন অবস্থা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাইতির সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সেনা সহায়তা চেয়েছে হাইতি সরকার। দেশটিতে বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী ক্লড জোসেফ সরকার পরিচালনা করছেন। হাইতি সরকারের এ আবেদন ইতিমধ্যে নাকচ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন জানিয়েছে, বর্তমানে হাইতিতে সেনা সহায়তা পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। তবে শুক্রবার হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, হাইতির প্রেসিডেন্ট হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সহায়তা করতে এফবিআই ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের কর্মকর্তাদের সেদেশে পাঠানো হচ্ছে।
এর আগে গত বুধবার রাতে হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেন মোসের বাড়িতে ঢুকে তাকে হত্যা করে অস্ত্রধারী ঘাতকদল। আমেরিকা অঞ্চলের দারিদ্র্যপীড়িত দেশটিতে সম্প্রতি ব্যাপক রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে হাইতির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছিলেন ৫৩ বছর বয়েসী জোভেন মোসে। শুক্রবার হাইতির পুলিশ প্রধান লিওন চার্লস এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার কিছু তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি জানান, হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেন মোসেকে খুন করেছে একটি বিদেশি ঘাতকদল। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কিছু সেনা এ ঘাতকদলের সদস্য। এছাড়া এ দলে দুজন হাইতিয়ান-আমেরিকানও ছিল। তবে ঘটনার ‘মাস্টারমাইন্ডদের’ পরিচয় এখনও জানা যায়নি। হাইতির প্রেসিডেন্টের ঘাতকদলে ২৮ বিদেশি: পুলিশ
পুলিশ প্রধান জানান, ঘাতকদলে মোট ২৬ কলম্বিয়ান অবসরপ্রাপ্ত সেনা ছিল। আরও ছিল দুজন হাইতিয়ান-আমেরিকান। ওই দুই আমেরিকানসহ ১৭ জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। আট ঘাতক এখনও পলাতক। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। এর বাইরে অন্য সন্দেহভাজন কয়েকজনকে বৃহস্পতিবার রাজধানী পোর্ট-অব-প্রিন্সে শুটআউটে হত্যা করেছে পুলিশ। কলম্বিয়া সরকার জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জোভেন মোসের হত্যাকারীদের ধরতে হাইতিকে সর্বোচ্চ সহায়তা করা হচ্ছে। ওই ঘাতকদলের কমপক্ষে ছয়জন সদস্য দেশটির অবসরপ্রাপ্ত সামরিক সদস্য নিশ্চিত করেছে কলম্বিয়া।
প্রেসিডেন্টের হত্যাকাণ্ডের পর হাইতির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কার্যত ভেঙে পড়েছে। দেশটির শহর থেকে গ্রামে প্রতিবাদ মিছিল, বিক্ষোভ ও নানা কর্মসূচি সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। দেশটিতে একাধিক দাঙ্গার ঘটনা ঘটছে।