এস এম নওরোজ হীরা বরিশাল
বরিশাল নগরীতে আওয়ামী লীগের হাইব্রিড নেতাদের অত্যাচার এখন চরমে যার খেসারত দিচ্ছেন পর্যায়ের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সংঘর্ষে ১০ জন আহত হলেও দুজনকে আশঙ্কাজারক অবস্থায় করা হয়েছে বাকি ৮ জন বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ব্যাপারে বিমানবন্দর থানা এবং বরিশাল মেট্রোপলিটন আদালতে মামলা দায়ের হলেও আসামীরা ধরাছোঁয়ার বাহিরে। মামলা সূত্রে জানা গেছে বরিশাল নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে এয়ারপোর্ট থানাধীন কাশিপুর বাজারের পূর্বপ্রান্তে ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের সামনে হইতে সুরভী পেট্রোল পাম্প পর্যন্ত মহাসড়কের উপরে গত ৮ জুলাই সন্ধ্যা ছটায় এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ২৯ নং ওয়ার্ডের ইছাকাটি গ্রামের সোহেল শাহীন ফরাজী বিল শিকদার জাকারিয়া আলম শুবে আশিক সহ ১৫/২০ জন আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী আহত হয়। সন্ত্রাসীদের সাথে মিলিয়ে কাজটি করেছেন ২৯ নং ওয়ার্ডের নব্য আওয়ামী লীগের হাইব্রিড নেতাকর্মী বলে জানা গেছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে ২৯ নং ওয়ার্ডের রানা ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী ফাতেমা রুজি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে বিগত বিসিসি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। রানা এবং ফাতেমা রোজী দুজনই পরাজিত হয়েছেন। রানা এবং রোজির পক্ষে কাজ না করায় এই সংঘর্ষের সূত্রপাত বলে জানা গেছে। গত ৮ জুলাই সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আব্দুল্লাহ টুংগীপাড়া জাতির জনকের কবরে নিবেদন করতে যান এসময় ২৯ নং ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর রাশিদা বেগম এবং ফরিদ আহমেদের আহবানে ২৯ নং ওয়ার্ডের বেশ কিছু নেতাকর্মী টুঙ্গিপাড়া যান ওই বাসের মধ্যে ২৯ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ আরো ছিলেন যারা রানা এবং রোজির সমর্থক। বরিশাল ফেরার পথে আগৈলঝাড়া থানা এলাকায় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রানা এবং রোজির সমর্থকেরা সোহেলকে চর থাপ্পর মারে। একপর্যায়ে রানা এবং রোজির সমর্থকেরা সোহেল এবং তার সাথে থাকা তাদেরকে দেখে নেবার হুমকি দেয়। সন্ধ্যা ছটায় যাত্রী বাহী বাসটি কাশিপুর বাজারে আসলে রাস্তায় বেরিকেড দিয়ে সোহেল, শাহীন, শুবেহ, আশিক সহ অন্যান্যদেরকে বাস থেকে নামিয়ে লোহার রড হাতুড়ি এবং হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে একপর্যায় রামদা দিয়ে কোপানো শুরু করে এতে মারাত্মকভাবে আহত হন আশিক এবং সোহেল । আহত ১০ জনকে স্থানীয় জনগণ শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে আশিককে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। গত ১১ জুলাই বরিশাল মেট্রোপলিটন আমুলি আদালতে ২৯ নং ওয়ার্ডের ইছাকাটি গ্রামের শহিদুল আলম মনিরের পুত্র সাইফুল আলম একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় রানা হাওলাদার, তুহিন হাওলাদার , সুমন হাওলাদার, মাহাদি ওরফে ইয়াবা মাহাদী, জান , সাজ্জাদ, বাবু সরদার, বাবাই এবং ফাতেমা রুজি সহ ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহার হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে রানা এবং ফাতেমা রুজির হুকুমে আশিক, সোহেল, নাবিল শিকদার ও সুবেহ সহ অন্যান্য আরো ৮-১০ জনকে এলো পাতারিভাবে পিটিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা। তুহিন দা দিয়ে আশিকের মাথায় কোপ মারে। বাবাই আশিক কে লোহার রড দিয়ে দুই পায় পিটায়। মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে মাহাদি ওরফে ইয়াবা মাহাদী হাতে থাকা দা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে সোহেলকে মাথার দুই পাশে কোপ দেয় । বাবাই পাইপ দিয়ে পিটাইয়া সোহেলের পা ভেঙে দেয়। জান লোহার রড দিয়ে শাহিনের মুখে বাড়ি মারলে শাহিনের দুটি দাঁত ভেঙে যায়। রানা নাবিলকে রড দিয়ে হাতে পায়ে পিটায়। তুহিন সোহেলের সাথে থাকা অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ও নগদ ১৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এ সময় বাবাই আহত সোহেলের গলায় থাকা এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন নিয়ে নেয়। রানা এবং মাহাদির নেতৃত্বে এই তাণ্ডব চলাকালীন সময়ে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক ১ ঘন্টা অবরোধ থাকে। আহতদের দাগ চিৎকারে স্থানীয় জনগণ এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। আহতদের উদ্ধার করে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এয়ারপোর্ট থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ করতে গেলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদালতেমামলা করতে বলেন বলে৷ সাইফুল ইসলাম তার অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেছেন। এদিকে ৮ই জুলাই রাতে বিমানবন্দর থানায় আরো একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ১১ ই জুলাই আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে দুটি মামলা দায়ের হলেও আসামীরা ধরাছোঁয়ার বাহিরে।
এ ব্যাপারে বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ হেলাল উদ্দিন বলেন আসামি ধরার ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত করছে। কাশিপুরের ঘটনার ব্যাপারে মামলা হয়েছে।